আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সিলেট জেলা আ.লীগে আলোচনায় ড. তৌফিক চৌধুরী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-৩০ ২০:২৫:৪১

সিলেট :: দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর ধরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদের গুরুদায়িত্ব পালন করে আসছেন ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী। এবার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ‘পদোন্নতি পাচ্ছেন’ এমন জোর গুঞ্জন রয়েছে। আগামী ৫ ডিসেম্বর সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে।

জানা গেছে, ২০০২ সালের ডিসেম্বরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী। ২০০৫ সালের সম্মেলনেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে ২০১১ সালে নতুন কমিটি হলে সেখানেও কোষাধ্যক্ষ হন ড. তৌফিক। সবমিলিয়ে প্রায় ১৭ বছর ধরে জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন সৎ ও পরিচ্ছন্ন এ রাজনীতিবিদ।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব আসবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করছেন, যাদের নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই, তারাই এবার কমিটির শীর্ষ পদগুলোতে জায়গা পাবেন। এক্ষেত্রে বিতর্কমুক্ত ও দলের প্রতি নিবেদিত হিসেবে পরিচিত তৌফিক চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ তৌফিক রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমার পুরো পরিবারই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি বরাবরই বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আমাদের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল। নেত্রী আমাকে যে পদে দায়িত্ব দেবেন, আমি সে পদেই নিষ্ঠা ও সততার সাথে দলের জন্য কাজ করে যাবো।’

জানা গেছে, স্কুলে ছাত্রাবস্থায়ই প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন তৌফিক রহমান চৌধুরী। ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মেজর (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) সিআর দত্ত, কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী এবং ছাত্রনেতা আখতার আহমেদ প্রমুখদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁদের গ্রামের বাড়ি ওসমানীনগরে (তৎকালীন বালাগঞ্জ) মেজর সিআর দত্ত ও তাঁর সহযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপনের পাশাপাশি যুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে অবস্থান করেন।

তৌফিক রহমানের চাচা শফিকুর রহমান চৌধুরী বালাগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। তাঁর বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশ-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন।

এমসি কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তৌফিক রহমান চৌধুরী। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাকশাল গঠিত হলে তিনি এ সংগঠনের ছাত্র শাখায় কর্মী হিসেবে কাজ করেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তিনি যুক্ত হন।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে তৌফিক রহমান চৌধুরী অর্থনীতিতে অনার্স এবং ১৯৭৬ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৪ সালে তিনি অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৩ সালে সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন। তৌফিক চৌধুরী সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ন্যাশনাল ক্রেডিট রেটিংস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বর্তমানে পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইকোনোমিক অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য। এছাড়াও তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের বোর্ড অব গভর্নরসের মনোনীত সদস্য। তাঁর গ্রন্থ ‘বাংলাদেশ ইন পারসপেক্টিভস-দ্য পলিটিক্যাল ইকোনোমি অব করাপশন’ অর্থনীতিবিদ ও বোদ্ধামহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।

তৌফিক চৌধুরীর ছেলে তানভীর এমও রহমান চৌধুরী যুক্তরাজ্যের লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট ও বর্তমানে সে দেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। যুক্তরাজ্যে মূলধারার রাজনীতির সাথেও সম্পৃক্ত তানভীর চৌধুরী। দেশটির লেবার পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিল নির্বাচনেও অংশ নেন তিনি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩০ নভেম্বর ২০১৯/আরআই-কে

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন