আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সিসিকের ‘আহাম্মকি’ কাজ!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-১৪ ০০:০২:০৬

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: গত শনিবার দিবাগত রাত ১১টা। সিটি করপোরেশনের (সিসিক) দলবল নিয়ে হাজির নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকায়। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলো গুরুত্বপূর্ণ জিন্দাবাজার-বারুতখানা সড়কে। বারুতখানা পয়েন্ট থেকে প্রায় শত গাজ সামনের একটি কালভার্ট পুরোটাই ভেঙে ফেললেন সিসিকের কর্মীরা। পরদিন রবিবার সকালে প্রয়োজনীয় কাজে ঘর থেকে বেরিয়ে এমন দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন নগরবাসী। কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কালভার্ট ভেঙে ফেলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়াকে ‘আহাম্মকের মতো কাজ’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।

তবে নগরবাসীর হতভম্ব হওয়ার আরো বাকি ছিল তখনও। গেল শনিবার রাতে জিন্দাবাজার-বারুতখানা সড়কের ওই কালভার্ট ভাঙার পর গত রবিবার ভেঙে ফেলা হয় জেলরোড-নাইওরপুল সড়কের আরেকটি কালভার্ট। এতে নাইওরপুল থেকে জেলরোড ও বারুতখানা হয়ে জিন্দাবাজার পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ে। জনসাধারণের চলাচলের জন্য ওই ভাঙা কালভার্টের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে এসব সাঁকোর ওপর দিয়ে চলছে মানুষ।

সিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, এই কালভার্ট দুটি ছোট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন হয় ধীর গতিতে। ফলে ওই দুই এলাকায় কিছুটা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ থেকে মুক্তি পেতে কালভার্ট দুটি বড় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তবে সিসিকের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধের বিষয়টি আগাম না জানানোয় নগরবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। বিশেষ করে পূর্ব জিন্দাবাজার, বারুতখানা, জেলরোড প্রভৃতি এলাকায় বসবাসকারী এবং ব্যবসায়ীরা সিসিকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘আহাম্মকের মতো কাজ’ বলে মন্তব্য করছেন।

বারুতখানার দবির আলী ও পূর্ব জিন্দাবাজারের গৌছ খান বলেন, ‘কালভার্ট বড় করা হবে, ভালো কথা। কিন্তু সিসিকের তো উচিত ছিল আগেই নগরবাসীকে বিষয়টি জানিয়ে রাখা। তাছাড়া এভাবে পুরো সড়ক বন্ধ না করলেও চলতো। অর্ধেক সড়ক চালু রেখে বাকি অর্ধেকে কালভার্টের কাজ করা যেতো। এভাবে কালভার্টের উভয় অংশের কাজ সম্পন্ন হলে দুর্ভোগে পড়তে হতো না। কিন্তু সিসিক আহাম্মকের মতো কাজ করছে।’

পূর্ব জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী খবির মিয়া বলেন, ‘এখন শীতের মৌসুম। প্রবাসীরা দেশে এসেছেন, আমাদের ব্যবসার জন্য ভালো সময়। কিন্তু এমন সময়ে জিন্দাবাজার-বারুতখানা-জেলরোড হয়ে নাইওরপুল পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ করায় আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।’

এদিকে, নগরীর শিবগঞ্জ, মিরাবাজার, টিলাগড়, উপশহর, রায়নগর, কুমারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জিন্দাবাজারে আসতে নাইওরপুল-জিন্দাবাজার সড়ক ব্যবহার করেন নগরবাসী। কিন্তু এখন সড়কটি বন্ধ থাকায় তাদেরকে বেশি সময় ব্যয় করে অন্য দীর্ঘ পথে আসতে হচ্ছে।

সিসিকের দায়িত্বশীলদের কাছ জানা গেছে, নগরবাসীকে এ দুর্ভোগ আরো প্রায় এক মাস পোহাতে হবে। কালভার্ট দুটির কাজ শেষ হতে এ সময় লাগবে।

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, কালভার্টের কাজ দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজের জন্য ছয় মাস নির্ধারিত থাকলেও ঠিকাদারকে বেশি শ্রমিক লাগিয়ে এক মাসের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, কালভার্ট দুটির অবস্থা নাজুক ছিল। একপাশ ভেঙে কাজ শুরু করলে অন্য পাশ টিকবে না, প্রকৌশলীদের এমন পরামর্শে পুরোটাই ভাঙা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ জানুয়ারি ২০২০/শাদিআচৌ/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন