Sylhet View 24 PRINT

‘পুলিশকে নিয়ে মানুষের মন্তব্য দেখলে হাসি পায়’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-১৪ ১৯:০৬:৫১

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: সিলেট জেলা পুলিশের আওতাধীন একটি থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন জনৈক ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রী হলেন নাসরিন সালেহা আরিফ। পুলিশ কর্মকর্তার সহধর্মিণী হিসেবে সন্নিকটে থেকে দেখেছেন পুলিশের যাবতীয় কাজকর্ম।

পুলিশ বিভাগের সদস্যরা দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে তাদের আপনজন মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী এমনকি সন্তানদেরও রেখে যান দূরে বহুদূরে। আপনজনের বিপদাপদ ও অসুখ বিসুখের সময়েও পুলিশ সদস্যরা অনেক সময় পাশে থাকতে পারেন না। ফেইসবুকে এমন একটি আবেগঘন স্ট্যটাস দিয়ে পুলিশ পরিবারগুলোর বাস্তব জীবনের দিনলিপির বর্ণনা তুলে ধরছেন এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী।

সিলেটভিউ২৪.কম এর পাঠকের কাছে নাসরিন সালেহা আরিফের ফেইসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-
তিনি লিখেছেন, নওমীর (বড় মেয়ে) বয়স তখন দুই বছরের কাছাকাছি। আমরা সিলেট থাকতাম। এক রাতে খেলতে গিয়ে মেয়ের চোখের ঠিক উপরের অংশ কেটে যায়। ঝরঝর করে রক্ত বেরুতে থাকে। কিংকর্তব্যবিমুঢ় আমি তার বাবাকে কল করার কথাই ভুলে যাই। বরফ দিয়ে চেপে ধরতেই মেয়ের চিৎকার, বাবা বাবা করে কান্না শুরু করাতে আমার টনক নড়ে, তার বাবাকে কল দেই। শীতের রাত ছিলো।

থানা থেকে বাসায় আসতে সময় লাগতো তখন প্রায় ২৫ মিনিট। মেয়ের বাবা বাসায় এসে, মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ড্রেসিং করে বাসায় ফিরছিলাম ডিউটির একটা মাইক্রোতে করে। মাঝপথেই কন্ট্রোল থেকে কল আসে। ভিআইপি যাচ্ছেন, গাড়ি নিয়ে অন্য রাস্তায় থাকতে হবে। মুহুর্তের মধ্যে আমাকে আর মেয়েকে রাস্তায় নামিয়ে, গাড়ি নিয়ে চলে যায় মেয়ের বাবা। 

কুয়াশার রাত, রাস্তায় রিকশা ও দেখা যাচ্ছিলো না।বেশ কিছুক্ষণ পর একটা রিকশা পাই, সেটা নিয়েই বাসায় আসি।

খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, কারন বিয়ের প্রথম থেকেই শুনেছি duty come first.... Committed for 24hrs" টাইপের কথা। শুধু শুনাই না, মেনে নেওয়া ও জীবনের অংশ।

দুই বারের প্রেগন্যান্সির পুরো সময়ে নিজেই একা ডাক্তার দেখানো , টেস্ট করানো এবং বাকি কাজগুলো করেছি।

মেয়েদের টিকা দেওয়ার মুহুর্ত এখনো আমাকে ভয় পাইয়ে দেয়,,,,,,,, । পুলিশ পরিবারের almost সবার ঘরের চিত্র একি রকম।

মাঝ রাতে আমাদের রান্নাঘরে আলো থাকে, কারন ডিনার টাইম বলে কোনো কথা নাই।
বেড়াতে যাওয়া, বিয়ে খাওয়া, পারিবারিক প্রোগ্রামে এক সাথে থাকতে পারা, এমনকি ঈদেও  বাচ্চারা বাবাকে কাছে পাওয়াটা আসলেই বোনাস পাওয়ার মতো।

এমন হাজারো ঘটনা নিয়েই আমাদের জীবন। লিখতে গিয়ে এক সময় নিজেই বিরক্ত হয়ে যাবো।

পুলিশের জীবনযাত্রা নিয়ে মানুষের মন্তব্য দেখে এখন আসলেই হাসি পায়। যেই পথে আপনি হাঁটেননি, সেই পথ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা না থাকাটা সাভাবিক। উদ্দেশ্যমুলক কিছুই না, জীবন থেকে নেওয়া বলা।


সিলেটভিউ২৪.কম/ ১৪ জানুয়ারি ২০২০/মতিন /জুনেদ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.