আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

স্বীকৃতি পাচ্ছেন সিলেটের আরো ১৮০ মুক্তিযোদ্ধা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-২০ ০০:২৯:০৬

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তাঁরা। পাকিস্তানী দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মরণপণ লড়াইয়ে। তাঁরাসহ অগুনতি মুক্তিকামীর অবদানে স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পর নানা কারণে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি তাঁদের। অবশেষে সিলেটের ১৮০ সংগ্রামীকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে সরকার।

জানা গেছে, সিলেট বিভাগের চারটি জেলার ১৮০ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। খুব শিগগির এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।

জামুকা’র তালিকায় সিলেট জেলার ৪৭ জন, সুনামগঞ্জ জেলার ৭৫ জন, মৌলভীবাজার জেলার ২১ জন এবং হবিগঞ্জ জেলার ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু যাঁদের নাম গেজেটভুক্ত হয়নি, সনদ পাননি এবং যাঁরা কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাননি, তাঁদেরকে গেজেটভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। ২০১৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের আবেদন গ্রহণ কার্যক্রম। সারাদেশ থেকে অনলাইনে এক লাখ ২৩ হাজার ১৫৪ জন এবং সরাসরি ১০ হাজার ৯শ’ জন আবেদন করেন। পরে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের প্রত্যেক উপজেলা, জেলা ও মহানগরে কমিটি গঠন করে শুরু হয় যাচাই-বাছাই। উপজেলা পর্যায় থেকে জেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে সিলেট বিভাগে ১৮০ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সুপারিশ করেছে জামুকা। অবশ্য শুধু সিলেট বিভাগই নয়, দেশের প্রতিটি বিভাগ মিলিয়ে এক হাজার ৩৭৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সিলেট বিভাগের যাঁদের নাম গেজেটভুক্ত হচ্ছে, তাঁদের অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই। তবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর এসব মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সিলেট বিভাগের যেসব মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করতে সুপারিশ করেছে, তাঁরা হলেন-

সিলেট জেলা ও মহানগর: সিলেট মহানগরীর আব্দুল মছব্বির ও শওকত আলী। সদর উপজেলার নুরুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম, মৃত আজাদ মিয়া, ফারুক মিয়া, ছাদ উদ্দিন আহমদ, মঞ্জু রানী দেবনাথ, শক্তি দেবী কানন, মকদ্দছ আলী ও সিরাজুল ইসলাম। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তুরন মিয়া, মৃত পীর হাবিবুর রহমান, মো. নাসির উদ্দিন ও জিতেন্দ্র কুমার মালাকার।

জৈন্তাপুর উপজেলার জসিম উদ্দিন, আব্দুর রশিদ, মৃত মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. আব্দুল জলিল। বিশ্বনাথ উপজেলার আব্দুল কাইয়ুম ও আলকাছ আলী। বিয়ানীবাজার উপজেলার মৃত ভূপেন্দ্র মালাকার, মৃত আলাউদ্দিন চৌধুরী, বাবুল চন্দ্র ধর, খয়রুল ইসলাম চৌধুরী, মৃত মো. লুৎফুর রহমান ও মৃত মো. তজমুল আলী আনসার। গোলাপগঞ্জের শহীদ ওয়াছিক আলী, মো. আব্দুর রাজ্জাক, মো. ওমর খৈয়াম চৌধুরী, মাসুক আলী, আনোয়ার হোসেন, মো. জিয়া উদ্দিন, নজরুল ইসলাম (লাল মিয়া), আব্দুর রহমান, মৃত মো. ফখরুল ইসলাম চৌধুরী। গোয়াইনঘাট উপজেলার দীপানন্দ চক্রবর্তী, মো. আব্দুল হালিম, মোহাম্মাদ ইব্রাহীম, আমির আলী, মো. আ. রহিম, এমএ রশীদ, মো. হাকিম আলী, শ্রী সিদাম দেবনাথ, মৃত চান মাহমুদ মিয়া ও শহীদ আব্দুল গফুর। জকিগঞ্জ উপজেলার দেবেশ্বর নমশূদ্র।

সুনামগঞ্জ জেলা: সদর উপজেলার মো. সোলেমান মিয়া, আব্দুল জব্বার, মৃত দারগ আলী, মানিক লাল রায়, মৃত হীরেন্দ্র তালুকদার, মৃত আব্দুল লতিফ, ডা. তোছাদ্দক হোসেন তসু, মৃত আব্দুল হক, ইদ্রিস আলী, মৃত সিরাজুল ইসলাম, মো. জহিরুল ইসলাম ও কাশেম আলী (আনসার)। তাহিরপুরের মো. উস্তার আলী আখঞ্জী, ডা. লুৎফুর রহমান (লাল মিয়া), মরহুম রুকুনুজামান, মরহুম আলমাস উদ্দিন, মরহুম সুধীর চন্দ্র সরকার, মরহুম হোসেন আলী, মরহুম খসরু শেখ ও মরহুম আব্দুছ ছাত্তার। দিরাই উপজেলার মৃত লাল মোহন দাস, তৈয়ব মিয়া ফকির, মো. আবুল হোসেন, জোবেদ আলী, মো. গোলাম কবির চৌধুরী, আব্দুল হাফিজ, বীরেন্দ্র কুমার দাস, নিরঞ্জন দাস, মৃত চান্দ মিয়া, অমর চান্দ তালুকদার, মৃত বরদা কান্ত দাস, মো. সামছুল আলম, গজেন্দ্র কুমার দাস, হরেন্দ্র তালুকদার ও মৃত শিরমনি দাস।

জামালগঞ্জ উপজেলার মো. হারিছ আলী, মৃত মিছির আলী ও মো. হরমুজ আলী। দোয়ারাবাজার উপজেলার মো. আব্দুল খালেক, মো. আবু বকর ছিদ্দিক, মো. শুকুর আলী, মৃত মো. রমিজ উদ্দিন, মৃত সামছুল ইসলাম, মৃত উমেদ আলী, মো. আশক আলী, মো. ছিদ্দিকুর রহমান, আহমদ আলী, মৃত আসেক আলী, মো. আলা উদ্দিন, মৃত আবুল হাসেন খাঁন, মৃত আলাউদ্দিন, মৃত আব্দুল আহাদ, ছোরাব আলী, মৃত মছলন্দর আলী, মৃত ওমর আলী, মো. মন্তাজ ও গোলাম মোস্তফা। বিশ্বম্ভরপুরের মৃত মো. হাবিবুর রহমান, মো. মেজবাহ উদ্দিন খাঁ, মৃত আলী মিয়া, মতি মিয়া, ইসলাম উদ্দিন, নজির হোসেন, ধীরেন্দ্র কুমার সরকার, মৃত আবু চান, মো. ইদ্রিস, মৃত লিলু মিয়া, মো. ইন্তাজ আলী ও সাহেব আলী। ছাতক উপজেলার উস্তার আলী, উমা শংকর এষ চৌধুরী, মৃত চমক আলী, আব্দুল মানিক, মৃত জ্যোতির্ময় মুন্সি ও আজাহার আলী।

মৌলভীবাজার জেলা: সদর উপজেলার মৃত আলহাজ্ব আজিজ আহমদ বেগ, হারুনুর রশিদ, মৃত আব্দুল খালেক ও মোহাম্মদ গোলাম মাওলা। কুলাউড়া উপজেলার মৃত সৈয়দ কামাল নবী (এখলাছ), শহীদ আরজু মিয়া, মৃত ফরহাদ মিয়া, মৃত আব্দুর রহমান, ইলিয়াছ আলী, সমির উদ্দিন আহমেদ, প্রহল্লাদ সিংহ ও দেবেন্দ্র সিংহ। বড়লেখা উপজেলার মুজিবুল হক, মরহুম সমছ উদ্দিন, মৃত ডা. আব্দুল খালেক, সিরাজ মিয়া, মো. মোনাতাজির আলী, মো. সরফ উদ্দিন, আব্দুল আজিম ও মৃত মো. মইনুল ইসলাম। শ্রীমঙ্গল উপজেলার মোহাম্মদ ইকবাল।

হবিগঞ্জ জেলা: সদর উপজেলার হাজী মো. আব্দুল মজিদ ও মৃত আব্দুস ছামাদ খান। চুনারুঘাট উপজেলার মো. বশির মিয়া। বাহুবল উপজেলার আ. খালেক ও শাহ হারুন মিয়া। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হরে কৃষ্ণ দাস, রঙ্গলাল দাস, পিতাম্বর দাস ও রাকেশ চন্দ্র সরকার।

লাখাইয়ের মো. আহাদ হোসেন। নবীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্র কুমার দাশ, কালিপদ মহালদার, মো. সঞ্জব আলী, সৈয়দ আব্দুল মতিন, ডা. যোগেন্দ্র কিশোর বিশ্বাস, শাহ আবদুল গনি, মৃত আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, মো. ইজাজ মিয়া, মরহুম দেওয়ান গোলাম ছরওয়ার হাদী গাজী, সত্য রঞ্জন দাশ, অহিদুর রহমান চৌধুরী, মৃত মাখন চন্দ্র দাশ। মাধবপুর উপজেলার মো. জসিম উদ্দিন, মরহুম গোলাপ খাঁন, ডা. সুখেন্দ্র দেবনাথ, আফিজ উদ্দিন, মরহুম মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী, আবু সিদ্দিক মোহাম্মদ কবির, শহীদ নুর মিয়া ভূইয়া, মো. খুর্শেদ আলী, মৃত মোমরাজ মিয়া, দিলীপ কুমার পাল, শহীদ মকবুল আলী, শহীদ সিরাজ মিয়া, শহীদ মো. জারু মিয়া ও মরহুম খুর্শেদ আলম চৌধুরী।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও জামুকা’র চেয়ারম্যান আ ক ম মোজাম্মেল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে জামুকা’র সুপারিশের ভিত্তিতে প্রথম দফায় সারাদেশ থেকে এক হাজার ৩৭৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হবে। এরপরই তা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ জানুয়ারি ২০২০/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন