আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেট ল’ কলেজে ভর্তি আবেদন ফি ৬ বছরে ৫ গুণ!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-২১ ১৩:৪৬:৪৯

পিংকু ধর :: সিলেট ল’ কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত একটি আইন মহাবিদ্যালয়। এ কলেজে প্রত্যেক বছর বৃদ্ধি করা হচ্ছে ভর্তিসহ অন্যান্য ফিস। এসব ফিস বতর্মানে লাগামহীন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সম্প্রতি এ কলেজে ভর্তি আবেদন ফি এবং ভর্তি ফি বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত হলেও সিলেট ল’ কলেজে ভর্তি আবেদন ফরম, ভর্তি ফি, ফর্ম ফিলাপসহ নানা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে। ২০১৪-১৫ সালে এলএলবি প্রিলিমানারিতে ভর্তি আবেদন ফি ছিলো ৩০০ টাকা, ২০১৫-১৬ তে সেটা ৫০০ টাকা করা হয় এবং বর্তমানে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০০ টাকায়। অর্থাৎ ছয় বছরে এটি বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ। অথচ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত চট্টগ্রাম আইন কলেজে ভর্তি আবেদন ফি ২০০ টাকা এবং রাজধানীর মহানগর ল’ কলেজে আবেদন এখনো ৩০০ টাকা।

২০১২-১৩ সালে ১২ মাসের বেতনসহ এলএলবি প্রিলিমিনারিতে ভর্তি বাবদ এককালিন পরিশোধ করতে হতো ৭৫০০ টাকা, ২০১৪-১৫ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১০২০০ টাকা, ২০১৬-১৭ সালে ১৫২০০ টাকা এবং ২০২০-২১ সালে সেটা ১৭২০০ টাকা। অথচ, মহানগর ল কলেজ, ঢাকায় ১২ মাসের বেতনসহ ভর্তি ফি বাবদ এককালিন পরিশোধ করতে হয় ১০,০০০ টাকা এবং চট্টগ্রাম আইন কলেজে ১০৭০০ টাকা।

শুধু ভর্তির সময় নয়; বার্ষিক পরীক্ষার পূর্বে ফর্ম ফিলাপের সময়ও মোটা অংকের টাকা নেয়া হয় সিলেট ল’ কলেজে। যার পরিমাণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের অন্যান্য আইন কলেজের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এছাড়াও এলএলবি প্রিলিমিনারি পাশ করার পর ফাইনাল পার্টে ভর্তিতেও একইভাবে মোটা অংকের টাকা নেয়া হয়। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এ সিলেট ল’ কলেজ নামে এবং পূবালী ব্যাংক লিমিটেড এ প্রিন্সিপাল সিলেট ল কলেজ নামে দুটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই দুই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হয়েও সিলেট ল’ কলেজের এমন স্বেচ্ছাসারিতায় ক্ষোভে ফেটে পড়ছে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও জনমত তৈরির কাজ করছেন তারা। সিলেট ল’ কলেজে ভর্তি বাণিজ্য করে আসা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সচেতন মহলের অনেককেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

সিলেট ল’ কলেজের শামীম আলী নামের আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী সিলেটভিউকে বলেন, বাংলাদেশের কোনো আইন কলেজে ভর্তির আবেদনের জন্য ফরম কিনতে এতো টাকা দিতে হয় না। এছাড়া প্রত্যেক বছর ভর্তির ফিস লাগামহীন বাড়ানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কোনোরূপ জবাবদিহিতা ছাড়া একনায়কতন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

সেলিম আহমদ নামে একজন লিখেছেন- \\\'অসাধু ভর্তি কমিটি ও রক্তচোষা সিন্ডিকেট! সিলেট ল’ কলেজসহ যেসকল কলেজে অতিরিক্ত ফি আদায় হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এদের কারনে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন আজ হুমকির মুখে।

এম সাইদুর রহমান নামে ভর্তিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী লিখেছেন- \\\' ১৭২০০ টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়া আমার মত দরিদ্র শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই স্বপ্নটাকে এবার কবর দিয়ে দেবো।

এ ব্যাপারে সিলেট ল\\\' কলেজের অধ্যক্ষ মো. মহসিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম /২১ জানুয়ারি ২০২০/পিডি/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন