আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

নান্দনিক রূপ পাচ্ছে উপশহরের সেই ছড়া

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-২৩ ০০:৩৪:০১

জুনেদ আহমদ চৌধুরী :: সিলেটের অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত নগরীর উপশহরের গোয়ালীছড়ার তীর নান্দনিক রূপে সাজানো হচ্ছে। ছড়ায় প্রবাহিত হবে স্বচ্ছ পানি। তীরে নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াকওয়ে (হাঁটার পথ)। সন্ধ্যাবেলায় আলোয় করবে জলমল, থাকবে নানা প্রজাতির গাছ-পালায় ভরপুর। সুবহানীঘাটের উপকন্ঠ এলাকা থেকে উপশহরের এফ ব্লক পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার ছড়াকে ঘিরে হচ্ছে এ উন্নয়ন প্রকল্প।

আগামী বর্ষা মৌসুমে নগরবাসী এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর।

সিলেট নগরীর কোন ছড়া কিংবা খালকে ঘিরে এই প্রথম লেকের আদলে নান্দনিক আকারে রূপ দেয়া হচ্ছে উপশহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ছড়াকে। ১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ছড়াকে কেন্দ্র করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নিয়েছে নানা ধরণের পরিকল্পনা। প্রায় ১ কিলোমিটারের এই ছড়ার পারে জনগণের চলাফেরার জন্য ‘ওয়াক ওয়ে’র নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পথে। ছড়ার পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বড় ধরনের প্রোটেকশন দেয়াল।

সন্ধ্যা বেলায় বিভিন্ন ধরনের বাতি দিয়ে আলোয় প্রজ্বলিত করা হবে এই এলাকাকে। বসানো হবে লোকজন বসার জন্য নানা ডিজাইনের চেয়ার। ছড়ার পাশে লাগানো হবে নানা প্রজাতির গাছ। এই এলাকাকে নান্দনিক করতে কোন ধরণের গাছ উপযোগী, এটা চূড়ান্ত করতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট বিভাগের দু’জন শিক্ষক এবং একজন কলামিস্টসহ মোট ৪জন ব্যক্তি দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ছড়ার পানি স্বচ্ছ রাখতে সিলেট সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন ধরণের। বাসাবাড়ির টয়লেটের পানি যাতে কেউ ছড়ার মধ্যে সংযোগ না করেন সে লক্ষ্যে দেয়া হয়েছে নির্দেশনা। সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলরদের সভার মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে নিজ নিজ ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের এ বিষয়ে অবগত করতে।

এছাড়া প্রতিটি পাড়ার সামাজিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করবে সিটি কর্পোরেশন। মানুষদের সচেতন করতে শিক্ষা প্রতিষ্টান, ধর্মীয় প্রতিষ্টানের সকলদের নিয়ে সভা করে সচেতন করে তুলছে সিসিক। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, ছড়ার পানি স্বচ্ছ রাখতে গোটা নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। কেবল নগরবাসী সচেতন হলে এটা করা সম্ভব হবে।

প্রকৌশলী আকবর সিলেটভিউকে আরো জানান, নগরীর আরো কয়েকটি ছড়ার পারের সৌন্দর্যবৃদ্ধি করা হবে পর্যায়ক্রমে। উপশরের ছড়া দিয়ে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু। এই বর্ষা মৌসুমে নগরবাসী ছড়ার পারে বসে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, সিলেট নগরীতে গত বিএনপি সরকারের আমলে প্রথমে কিন ব্রিজ এলাকার সুরমা নদীর পার সংরক্ষণ করে মানুষের চলাচল কিংবা বসার জন্য সৌন্দর্য করা হয়েছিল। আর এবার নগরীতে প্রথম কোন আবাসিক এলাকার ভেতরে ছড়ার পারের সৌন্দর্যবৃদ্ধির কাজ শুরু করলো সিটি কর্পোরেশন।

বুধবার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ছড়ার মধ্যে জমানো মাটি অপসারণ করা হচ্ছে। ছড়ার মধ্যে ফেলা পলিথিন ও আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে।

উপশহরের বাসিন্দা কাবিল খান বলেন, বিকেলে পরিবারের লোকজনদের নিয়ে বসা কিংবা একটু হাটাফেরা করার জন্য তেমন কোন জায়গা নেই। এই কাজ শেষ হলে উপশহরবাসী একটু আরাম আয়েশ করে চলাফেরা করতে পারবে। বিকেল বেলার সময়টা মানুষ কাঠাতে পারবে প্রকৃতির সৌন্দর্য অবলোকন করে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ জানুয়ারি ২০২০/জেএসি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন