আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে পুড়ে যাওয়া সেই রেল ইঞ্জিন মেরামত, ৩০ কোটি টাকা সাশ্রয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-২৫ ১৯:১০:৩৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সিলেট-ঢাকা রেলপথের হবিগঞ্জে পুড়ে গিয়ে অচল হয়ে পড়া রেলওয়ে ইঞ্জিনকে (লোকোমোটিভ) সচল করা হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো এই কাজ করা হয়েছে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় (কেলোকা)। ওই সচল ইঞ্জিন আগামীকাল বুধবার রেল বহরে যুক্ত হচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, অচল ইঞ্জিনটি সচল করায় ৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় এমইআই-১৫ শ্রেণির ১১টি ইঞ্জিন আমদানি করা হয়। বিশ্বমানের ওই ইঞ্জিনগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানিতে তৈরি। এসব ইঞ্জিন দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২৯৩৩ নম্বর ইঞ্জিনটি ২০১৩ সালে ৭ অক্টোবর দুর্ঘটনায় পড়ে। ইঞ্জিনটি ঢাকা-সিলেট রেলপথে পারাবত আন্তনগর ট্রেনটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় হবিগঞ্জের মাধবপুরের নোয়াপাড়া স্টেশনে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় ইঞ্জিনটির নিচের অংশের জ্বালানি ট্যাংকে আগুন লেগে যায়। ফলে তা সম্পূর্ণ বিকল হয়ে পড়ে। পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিনটি নেওয়া হয় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিজেল শপে। ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা কোনোক্রমে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে এর সচল হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরে ২০১৯ সালের ১৫ মে মেরামতের জন্য কেলোকাতে পাঠানো হয় ইঞ্জিনটি।

কেলোকার প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা বলেন, এখানে আনার পর ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণ খুলে ফেলা হয়। এরপর কারখানার শ্রমিক-প্রকৌশলীরা অক্লান্ত চেষ্টায় ইঞ্জিনটি পুনর্নির্মাণ (রিকন্ডিশন্ড) করেন। তিনি আরও বলেন, ‘ইঞ্জিনটি নতুন করে নির্মাণ করা ছিল আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মেরামত ও রিকন্ডিশনিংয়ে সফল হই আমরা। অগ্নিদগ্ধ ইঞ্জিনটি ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ব্যবস্থাও সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায়। এটি প্রতিস্থাপন করে সফলতা দেখিয়েছে কেলোকা, যা দেশে প্রথমবারের মতো সম্ভব হলো। দীর্ঘ ৮ মাস অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে আমরা ইঞ্জিনটি সচল করেছি। এরই মধ্যে ইঞ্জিনটি রেলপথে পরীক্ষামূলক দৌড় (ট্রায়াল রান) সম্পন্ন করেছে।’

কেলোকার একটি সূত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিনটি রিকন্ডিশনিংয়ে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। অথচ একটি নতুন মিটারগেজ ইঞ্জিন আমদানিতে খরচ হতো ৩৩ কোটি টাকা। প্রায় ৩০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করেছে সংশ্লিষ্টরা।

এ নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টোক) মো. মঞ্জুর উল আলম চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ইঞ্জিন সংকট আছে। এ ধরনের একটি ক্ষতিগ্রস্ত ইঞ্জিন সচল হওয়ায় রেল অঙ্গনে আনন্দের বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০/প্রথমআলো/আরআই-কে

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন