আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

করোনা : পেটে ভাত নেই, সিলেটে ঘরে থাকতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-৩০ ১৩:৪৬:৩৬

শাহীন আহমদ :: করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। আমাদের দেশে সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের জনসমাগম নিষেধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জরুরি কোন কাজ ছাড়া রাস্তাঘাটে মানুষকে না বেরোনোর জন্য বিশেষ ভাবে সর্তক করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য।

গত পাঁচ  দিন থেকে সিলেটের রাস্তাঘাটে যানবাহন, অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল চলাচল অনেকটা কমে গেছে। শহরে রাস্তাঘাটে অটোরিকশা ও ভ্যান তেমন চোখে পড়ছেনা। আতঙ্কে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। আয়-রোজগারের কোনো পথ না থাকায় পেটের দায়ে তারা ঘরে থাকতেও পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে কাজের খোঁজে আজ সোমবার (৩০ মার্চ) রাস্তায় নেমেছেন। ভাড়ার আসায় ওসমানী হাসপাতালের গেটে সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন কয়েকজন রিকশাচালক।

এদের মধ্যে একজন ঘাসিটুলা এলাকার রিকশা চালক বয়োজ্যেষ্ঠ আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, বাড়িতে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। প্রতিদিন খাওয়া খরচ প্রায় ৩শ টাকা। বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছি ও সংসারে কাজে টাকা ব্যয় করেছি। সপ্তাহে ১ হাজার ৮০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। প্রতিদিন প্রায় ৫/৬শ টাকা ভাড়া পেতাম। গত ৪দিন থেকে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য পুলিশ মাইকিং করছে। এ জন্য রিকশা  নিয়ে বের হতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, অবস্থা খুব খারাপ। বাড়িতে কিস্তির টাকা নিতে গিয়েছিল। জানিয়ে দিয়েছি কয়েকদিন পর ছাড়া কোন টাকা দিতে পারবো না। করোনার কারণে বাইরে মানুষ তেমন বের হচ্ছে না। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। যা একটু জমিয়ে ছিলাম ঘরে বসে থেকে শেষ হওয়ার উপক্রম। এছাড়া ভয়ে বাইরে বেরুতে পারিনি। পুলিশ পিটালে-পিটুনি খাওয়া লাগবে। কিন্তু রিকশা ভেঙে দিলে তো সহজে কিনতে পারবো না। এই ভয়ে রিকশা বের করিনি।

নবাব রোড এলাকার দিন মজুর রকিব উদ্দিন বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই, কাজ না করলে, পেটে ভাত যাবে না। আমাদের-স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে উপবাসে দিন কাটাতে হচ্ছে। তাই কাজে সন্ধানে বের হয়েছি। কিন্তু কেউ কাজে নিচ্ছে না। তাছাড়া কেউ আমাদেরকে সাহায্যও দিচ্ছে না। কী হবে এক মাত্র আল্লাহ জানেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ৩০ মার্চ, ২০২০/ শাহিন / ডালিম

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন