আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ভারতীয়দের পিটুনীতে নিহত বাংলাদেশীর লাশ হস্তান্তর স্থগিত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-২৮ ২১:৩৭:১৩

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: ভারতীয় নাগরিকের পিটুনীতে বাংলাদেশী খুনের ঘটনায় এখনও লাশ হস্তান্তর হয়নি। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকালে দ্বিতীয় দফা পতাকা বৈঠক শুরু হয়। ভারতীয় পুলিশ এফআইআর এর কপি না দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ পুলিশ লাশ গ্রহণ করেনি। 

ভারতীয় নাগরিকদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন    বাংলাদেশী নাগরিক লোকমান হোসেন (৩২)। গরুচোর অপবাদ দিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় গত ২৪ মে। ভারতীয় নাগরিকের হাতে বাংলাদেশী নিহত লোকমান মিয়া মাধবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধর্মঘর ইউনিয়নের মালঞ্চপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে। 
ওই দিন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের মোহন পুর এলাকায় তার ফুফুর বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গোপালনগর পৌঁছতেই এক দল ভারতীয় নাগরিক লোকমান হোসেন কে পথরোধ করে  গরুচোর সন্দেহে এলোপাতাড়িভাবে পেটাতে থাকে। এসময় লোকমান বেড়াতে এসেছে এমন আকুতি  জানালেও বেধড়ক পিটুনিতে গুরুতর আহত হয় সে। এরপর মৃত ভেবে লোকমানকে ভারতীয়রা বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে একটি জঙ্গলে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের সিধাই থানা পুলিশ মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকমানের মৃত্যু হয়।   
ভারতীয় কয়েকটি গনমাধ্যমে লোকমানের আকুতির  ভিডিও প্রচার হয়। তবে 'গরুচোর সন্দেহে গনপুটুনীতে  মৃত্যু' এমন শিরোনামে খবর ত্রিপুরার গনমাধ্যম সম্প্রচার করে। 
বুধবার বিকালে ১৯৯৪ /৪ এস পিলারের নিকট বাংলাদেশের মোহনপুুুর নামকস্থানে বিজিবি-বিএসএফ এর পতাকা বৈঠক হয়। ভারতের পক্ষে বিএসএফ এর ১২০ ব্যাটালিয়নের মোহনপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার ইন্সপেক্টর শশি কান্ত ও বাংলাদেশের পক্ষে নেত্বত্ব দেন ৫৫ বিজিবির ধর্মঘর ক্যাম্পের কোম্পানী  কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন। এসময় ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুর সীমান্ত দিয়ে লাশ হস্তান্তরের কথা থাকলেও ভারতীয় পুলিশ ময়না তদন্ত ও  সুরতহাল রিপোর্টের আনুসাংগিক কাগজপত্র ছাড়াই লাশ হস্তাস্তর করতে চায়। এতে উপস্থিত বাংলাদেশের বিজিবি-পুলিশের প্রতিনিধিরা লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। 
নিহতের পরিরার সূত্র জানা যায়, লোকমান মিয়া বাড়ির  পাশ দিয়ে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের    মোহনপুরে তার ফুফুর বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ভারতীয় নাগরিকদের রোষানলে পরে নির্মমভাবে খুন হন তিনি। লোকমানের মৃত্যুর খবর জানার পর তার লাশ দেশে ফিরে আনার ব্যাপারে দু দেশের সীমান্ত রক্ষী দের মধ্যে  কয়েক দফা আলোচনা শেষে সকল প্রকার আনুষ্টানিকতাও হয়। 
সিধাই থানা ওসি মাধবপুর থানার কাসিমনগর পুুুলিশ ফাঁঁড়ির ইন্সপেক্টর মোরশেদ আলম এবং এসআই কামরুল হাসান মৌখিকভাবে অবগত করেন বাংলাদেশী নাগরিক  লোকমান মিয়াকে সিধাই থানার গোপাল নগর গ্রামে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে আগরতলা জিবি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা ময়না তদন্ত রিপোর্টসহ আনুসাংগিক কাগজ পত্রসহ লাশ ফেরত চান। কিন্তু কাগজপত্র ছাড়া লাশ হস্তান্তর করতে চাইলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা কাগজ ছাড়া লাশ গ্রহনে অনিহা প্রকাশ করে এবং ভারতীয়রা লাশ ফেরত দেয়নি। 
নিহতের ছোট ভাই হুমায়ুন মিয়া বলেন, আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। ভারতীয় গনমাধ্যমে প্রচার  হয়েছে। অথচ কাগজপত্র ছাড়া লাশ ফেরত দিতে চায় ভারত।  আমি এবং আমার পরিবার বিজিবি ও পুলিশের মাধ্যমে কাগজপত্রসহ লাশ ফেরত চাই। 
হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন-৫৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৮ মে ২০২০/এসএইচসি/এসএইচ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন