আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

জকিগঞ্জে বেড়েই চলেছে করোনাক্রান্তের সংখ্যা, একজনের মৃত্যুসহ শনাক্ত ১৮

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৬-০৬ ০০:৩০:৩০

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ :: জকিগঞ্জে একজনের মৃত্যুসহ নতুন করে ১৮ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়েছে। নতুন সনাক্তদের মধ্যে ব্যাংক কর্মকর্তা, ইউপি সচিব, ছাত্রলীগ নেতা, বিদ্যুৎ কর্মী ও গৃহিণী রয়েছেন। এনিয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত জকিগঞ্জে মোট ৬৩ জন আক্রান্ত হলেন।

এরমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত ব্যক্তির দাফনকার্য হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। জানাযায় অংশ নিয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। প্রশাসনসহ কেউই জানতেন না যে ঐ ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এতে আশঙ্কা করা হচ্ছে জকিগঞ্জে করোনা গণবিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।

জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র থেকে জানানো হয়, করোনা উপসর্গ নিয়ে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হাইল ইসলামপুর গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে আবুল কালাম গত ২ জুন সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তবে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জকিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কাউকে মৃত্যুর বিষয়টি জানায়নি। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই দাফন করা হয়। ৪জুন নমুনা রিপোর্টে দেখা গেছে মৃত ব্যাক্তির নাম রয়েছে। এরপর খোঁজ নিয়ে জানাগেছে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করলেও দাফন হয়েছে স্বাভাবিকভাবে।

শনিবার রাতে সিলেটের দুটি ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী নতুন আক্রান্তরা হলেন, মানিকপুর ইউনিয়নের গৃহিণী নুরজাহান বেগম (৬০), একই পরিবারের সালমা বেগম (২৮), লিমা জান্নাত (০৯), সোনালী ব্যাংক জকিগঞ্জ শাখার ম্যানেজার আজাদুজ্জামান (৩৮), পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের শাওন শাহরিয়ার জয় (২১), মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুস সাত্তার (৪২), পূবালী ব্যাংক জকিগঞ্জ শাখার প্রশান্তা চন্দ্র দাস জনি (৩৫), পৌর এলাকার নরসিংহপুর গ্রামের ফয়জুল ইসলাম (১৮), চাকুরীজীবি আবু সাইদ (৩২), পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা তানজিম শাহরিয়ার শাওন (২৪), সোনাসার এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসাইন (২৫), সোনালী ব্যাংক জকিগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন (২৭), পৌর এলাকার রেজাউল করিম (২৭), আলমনগর গ্রামের সুলতান আল নাহিয়ান (২৬), কাজলসার ইউনিয়নের পলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসাইন চৌধুরী (২০), পৌর এলাকার পীরেরচক গ্রামের বাসিন্দা আসমা বেগম (৩৯), খলাছড়া ইউনিয়নের লামারগ্রামের বাসিন্দা জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার হোসাইন সাগর (১৮), উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত আবুল কালাম (৩৫)।

জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আব্দুন নাসের ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, গত ২ জুন শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে হাইল ইসলামপুর গ্রামের আবুল কালাম নামের একজন লোক সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে মারা গেলেও ওসমানী হাসপাতাল থেকে এ তথ্য আমাদেরকে জানানো হয়নি। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই মৃত ব্যাক্তির দাফন হয়েছে। এতে জকিগঞ্জে করোনার বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা আছে।

শুক্রবার রাতে জকিগঞ্জের ঠিকানায় তার তথ্য আসলে খবর নিয়ে আমরা জানতে পারি তার মৃত্যু সিলেটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হয়েছে। সিলেটেই তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো। তিনি বলেন, আবুল কালামের মৃত্যুর পরে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানানো উচিত ছিলো ঐ ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এখন মহাবিপদ মাথার উপর। তিনি আরও বলেন, আবুল কালামের জানাযাসহ দাফনকার্যে যারা অংশ নিয়েছেন তারা সবাই যেন স্বেচ্ছায় হোম কোয়ান্টাইনে থাকেন। নতুন যারা সনাক্ত হয়েছেন তাদের বাসা বাড়ি চলাফেরায় কড়াকড়ি আরোপে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মেহেদী এ প্রসঙ্গে বলেন, মৃত আবুল কালামের সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে মারা যান। সেখানেই তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কেন জকিগঞ্জের প্রশাসনকে তার মৃত্যুর বিষয়টি তাৎক্ষণিক জানানো হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওসমানী হাসপাতালে অনেক কাজের চাপ থাকে এজন্য হয়তো তারা ভুলে জানায়নি। আবুল কালামের দাফনকার্যে কারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে তাৎক্ষণিক সনাক্ত করা যাচ্ছেনা। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি সবাইকে সনাক্ত করতে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৬ জুন ২০২০/আহাতা/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন