আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

করোনা: ওসমানীতে প্রবল চাপ, নমুনা যাচ্ছে ঢাকায়!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৬-০৬ ১৮:৪২:০৩

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: সিলেটসহ সারা দেশেই বর্তমানে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় করোনাক্রান্ত হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনার স্তূপ জমছে ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্থাপিত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার ল্যাবে। কিন্তু সংগৃহিত নমুনার তুলনায় পরীক্ষার সংখ্যা যেন নগণ্য। ফলে প্রতিদিনই নমুনার স্তূপ বড় হচ্ছে ল্যাবে। এরকম অবস্থায় করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য সংগৃহিত নমুনা পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়।

জানা গেছে, পুরো সিলেট বিভাগের মধ্যে বর্তমানে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার মাত্র দুটি ল্যাব আছে। একটি ওসমানী মেডিকেল কলেজে, অপরটি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে। গেল এপ্রিলের ৭ তারিখ ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়। আর ১৯ মে থেকে শুরু হয় শাবির ল্যাবের কার্যক্রম।

শুরুতে ওসমানীর ল্যাবে সিলেট বিভাগের চারটি জেলার সব নমুনা পরীক্ষা করা হতো। কিন্তু নমুনার চাপ বাড়তে থাকায় ওসমানীর ল্যাবে জমতে থাকে নমুনার স্ত’প। ফলে গত মে মাসের শুরুর দিকে এক হাজারেরও বেশি নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হয়। শাবির ল্যাব চালু হওয়ার পর সেখানে শুধুমাত্র সুনামগঞ্জ জেলা থেকে সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষার কাজ করা হচ্ছে। আর মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার নমুনা পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়।

এছাড়া সিলেট জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে ওসমানীর ল্যাবে। কিন্তু এ ল্যাবে এখন নমুনার প্রবল চাপ। প্রায় ১২শ’ নমুনা ল্যাবে জমে আছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওসমানীর ল্যাবে প্রতিদিন দুটি শিফটে ৯৪টি করে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। তবে প্রতিদিন এতো সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। কারণ, প্রথম শিফটে ৯৪টি নমুনার মধ্যে কিছু নমুনার ফলাফল আসে বিভ্রান্তিকর (না পজিটিভ, না নেগেটিভ)। ফলে এসব নমুনা আবার দ্বিতীয় শিফটে দিতে হয়। এতে দ্বিতীয় শিফটে ৯৪টি নতুন নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না।

এ হিসেবে ওসমানীর ল্যাবে জমে থাকা ১২শ’ নমুনা পরীক্ষা করতেই অন্তত এক সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। কিন্তু এসব নমুনা ছাড়াও প্রতিদিন ২শ’ থেকে ৩শ’ নমুনা সংগৃহিত হচ্ছে সিলেট জেলা থেকে। ফলে কিছুতেই কুলিয়ে ওঠতে পারছে না ওসমানীর ল্যাব। আবার নমুনা বেশি সময় সংরক্ষণ করে রাখলে সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও থাকে। এরকম অবস্থায় কয়েকদিন ধরে সিলেট জেলার নমুনাও পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়।

এ প্রসঙ্গে ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ময়নুল হক সিলেটভিউকে জানান, ওসমানীর করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার ল্যাবে প্রায় ১২০০ নমুনা জমা আছে। নমুনা চাপ বাড়তে থাকায় কিছু নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান সিলেটভিউকে বলেন, ওসমানীর ল্যাবে নমুনার চাপ থাকায় ৩ জুন থেকে সিলেট জেলার নমুনা ঢাকায় প্রেরণ করা হচ্ছে। ওসমানীর ল্যাবে জমা থাকা নমুনাগুলো পরীক্ষা সম্পন্ন হলে পুনরায় এখানেই নমুনা দেওয়া হবে।

এদিকে, পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেট বিভাগে আরো দুটি করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার ল্যাব চেয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমান। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রতিদিনই সিলেটে বাড়ছে করোনার পরীক্ষা। প্রচুর মানুষ প্রতিদিন নমুনা দিতে আসেন। কিন্তু সিলেটে মাত্র দুটি ল্যাব থাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যকের বেশী নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। ফলে রিপোর্ট আসতে বিলম্ব হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনা করে সিলেট বিভাগে আরো দুটি  পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি।

তিনি জানান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি এবং হবিগঞ্জে একটি ল্যাব স্থাপন করা যেতে পারে। এতে পরীক্ষার সংখ্যা প্রচুর বাড়ানো যাবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৬ জুন ২০২০/শাদিআচৌ/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন