Sylhet View 24 PRINT

কোম্পানীগঞ্জে জব্দ করা পাথর নিলামে বিক্রি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-১০ ১১:৪৬:৩২

সিলটভিউ ডেস্ক :: সিলেট বিভাগে ‘পাথররাজ্য’ হিসেবে পরিচিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। সম্প্রতি উপজেলার বন্ধ ঘোষণা করা পাথর কোয়ারি থেকে প্রায় ১৫ হাজার ঘনফুট পাথর লুট করার চেষ্টা করা হয়। সে পাথর জব্দ করে তা প্রকাশ্যে নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করে ৯ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্যের নেতৃত্বে কাজটি সম্পন্ন হয়। বিশৃঙ্খল পাথর কোয়ারিতে এ রকম একটি কাজ সিলেট অঞ্চলে এই প্রথম হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের পাথর কোয়ারির প্রধান কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।

বিএমডির দুজন প্রতিনিধি নিলাম ডাকে উপস্থিত ছিলেন। নিলাম ডাক চলে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত। সর্বোচ্চ নিলাম ডাক দেওয়া হোসেন নূরের কাছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় পাথর বিক্রি করা হয়। ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ দরদাতা ৯ লাখ টাকা দিয়েছেন। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বিএমডির সহকারী পরিচালক (ভূপদার্থ) মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, লুটের পাথর জব্দ করে প্রকাশ্যে নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রির ঘটনাটি সিলেট অঞ্চলের কোনা পাথর কোয়ারিতে এই প্রথম হয়েছে। এর আগে দেশের অন্য পাথর কোয়ারিতে বিএমডির মাধ্যমে এ কাজটি হয়েছে। এ খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এ উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকা অবস্থায় একটি চক্র শাহ আরেফিন টিলা এলাকা থেকে ১৫ হাজার ঘনফুট পাথর লুট করে। গত শনিবার রাতের বেলা ধলাই নদের তীরে মজুত করে সকালবেলা ভলগেট দিয়ে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল তাঁদের। এ সময় তদন্ত করে তা লুটের পাথর হিসেবে চিহ্নিত করে ইউএনও পাথরগুলো জব্দ করেন। পরে পাথর কোয়ারির কর্তৃপক্ষ হিসেবে বিএমডিকে চিঠি দিয়ে ঘটনাটি জানিয়ে তা নিলামের ব্যবস্থা করা হয়।

নিলাম ডাক সমন্বয় করা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের ভূমি শাখার কর্মকর্তারা জানান, বালু মিশ্রিত পাথরের বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ৪৮ টাকা ঘনফুট হিসেবে মূল্য হাঁকা হয়েছিল ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। নিলাম ডাকে সাড়ে সাত লাখ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়।

বিএমডি জানায়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ছাড়াও পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, বান্দরবানে পাথর কোয়ারি রয়েছে। সিলেটের সাতটি পাথর কোয়ারি বালু মিশ্রিত শ্রেণির। বিএমডির তদারকিতে স্থানীয় প্রশাসন পাথর কোয়ারিগুলো ইজারা দেয়।

খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিতে রয়েছে, পাথর তুলতে কোনো প্রকার যন্ত্রের ব্যবহার করা যাবে না। কোয়ারিতে ৩০ ফুট গভীর গর্ত করা যাবে। ইজারা শেষে ইজারাদার ওই সব গর্ত ভরাট করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেবে ইজারাদার। কোয়ারি পর্যবেক্ষণ ও ইজারা প্রদান কার্যক্রম বিএমডির মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন করে।

তবে বাস্তবে দেখা গেছে, পাথর কোয়ারিতে বোমা মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্র স্থাপন করে মাটির প্রায় ৩০০ ফুট গভীর থেকে পাথর তোলা হতো। এতে শ্রমিক নিহতের ঘটনাও ঘটে। গভীর গর্ত থেকে ঝুঁকি নিয়ে পাথর তুলতে গিয়ে গত তিন বছরে শ্রমিক নিহত হয়েছেন ৭৮ জন। এ অবস্থায় সিলেটের সাতটির মধ্যে পাঁচটি পাথর কোয়ারির ইজারা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে বিএমডি। এর মধ্যে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও শাহ আরেফিন টিলা পাথর কোয়ারি রয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণার আগেই কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারি শাটডাউন ঘোষণা করেছিলেন ইউএনও। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি প্রায় ২৫ হাজার পরিযায়ী পাথরশ্রমিকদের তখন নিরাপদে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে নানা রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও সুমন আচার্য বলেন, ‘লুটের পাথর জব্দ করার পর থেকে ভীষণ চাপে ছিলাম। নিলাম ডাক সম্পন্ন করার পর নিজেকে চাপমুক্ত মনে করছি।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১০ জুলাই ২০২০/প্রথম আলো/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.