আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ওসমানীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় ‘স্বপ্নের’ সমাধি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-৩১ ১৬:০৫:০২

ওসমানী মেডিক্যালে নিহতের পরিবারের আহাজারি।

ইদ্রিছ আলী : মুহূর্তের দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে গিয়েছি পুরো পরিবার। বেঁচে থেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ১২ বছরের সৌরভ। হাসিখুশির ঈদযাত্রায় মা বাবা আর দুই ভাইকে হারিয়ে কিভাবে সৌরভ বেঁচে থাকবে তা হয়ত সময়ই বলে দেবে। তবে শুক্রবার (৩১ জুলাই) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জড়ো হওয়া সবারই কামনা , ‘সৌরভ যেন বেঁচে থাকে!’
নিহতরা হচ্ছেন, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শ্যামারচর গ্রামের স্বপন কুমার দাস ও তার স্ত্রী লাভলী রানী দাস এবং তাদের তিন সন্তান। তাদের আরেক সন্তানকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এম.এ.জি ওসমানী হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদেরও ওসমানী হাসাপাতালে রাখা হয়েছে। স্বপন কুমার দাস শ্রীমঙ্গলে তার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, দিরাইয়ের শ্যামারচরের বাসিন্দা স্বপন কুমার দাশ। কাজ করতেন বেসরকারি সংস্থা ব্রাকে। থাকতেন মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে। করোনা ভাইরাসের কারণে গত ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া হয়নি তাদের। এবার ছুটির মেয়াদ কম হলেও নাড়ির টানে স্বপরিবারে  প্রাইভেট কার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে স্ত্রী লাভলি, বড় ছেলে সৌরভ ও দুই জমজ শিশু সন্তান সৌমিত্র আর শৈবালকে নিয়ে শুক্রবার ভোরেই রওয়ানা হন। কিন্ত’কে জানতো এই যাত্রাই তার শেষ যাত্রা হবে!

ভোর সাড়ে ছয়টায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ওসমানীনগর এলাকায় ঢাকাগামী কুমিল্লা ট্রান্সপোর্টের একটি বাস তাদের প্রাইভেটকারটিকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান চালকসহ সবাই। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ শুরু করলে অনেকটা ভাগ্যক্রমে তারা জীবিত উদ্ধার করেন বড় ছেলে সৌরভকে, তার অবস্থা এখন সংকটাপন্ন।
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক কোবাদ আলী বলেন, বাসের চাপায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া প্রাইভেট কারটি কেটে টুকরো করে সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সৌরভকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় রক্তও দান করেন তারা।

নিহতের স্বপন কুমারের বোন দোলন দাস জানান, সাতমাস পর ভাইয়ে মুখ দেখার জন্য আকুল ছিলেন তিনি। সেইতো বাড়ি এল, কিন্তু এই আসা কেমন আসা।

সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/ ইআ/ পিটি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন