আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

আম্বরখানায় চামড়া ফেলে যাওয়া নিয়ে যা বললেন সেই ইউপি চেয়ারম্যান

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৮-০৪ ১১:২৪:০৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় কোরবানি দেয়া পশুর চামড়া সিলেটের আম্বরখানায় ফেলে যাওয়ার বিষয়টিকে বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহবুবুল হক (শেরীন)। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে তিনি একটি বার্তা প্রদান করেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, সম্মানিত মিরপুর ইউনিয়নবাসী, ভাইরাল হওয়া নিউজটা নিয়ে আপনারা সবাই হয়তো বিভ্রান্তির ভেতর আছেন। তাই আমি সত্য ঘটনাটা তুলে ধরছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পড়ে যে, কোরবানির পশুর চামড়া কোনোমতেই মাটিতে পোতা যাবে না বা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া যাবে না। সেই হিসেবে আমি মিরপুর ইউনিয়নের প্রত্যেকটি মসজিদ থেকে এবং মেম্বারদের মাধ্যমে জনগণকে জানিয়ে দিই। ঈদের দিন সকল মাদরাসা থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বলা হয় তারা পশুর চামড়াগুলো বিক্রি করতে পারছেন না।

আমি জগন্নাথপুরের ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তিনি আমাকে একজন ডিলারের ফোন নম্বর দেন। আমি ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমাকে ডিলায় জানান যে তিনি আর কোনো পশুর চামড়া খরিদ করতেছেন না। উপায়ন্তর না দেখে আমি ৩টা পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে প্রায় ৬৫০টি পশুর চামড়া সিলেট পাঠিয়ে দেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাত একটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনো ক্রেতা মেলেনি।

তখন বাধ্য হয়ে আম্বরখানার আমাদের একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে অনেক খালি জায়গা আছে সেখানে পাঠিয়ে দিই। কারণ তাৎক্ষণিক লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত না করলে চামড়াগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। সেসময় মাত্র পাঁচ বস্তা লবণ জোগাড় করা সম্ভব হয়, পরবর্তীতে রোববার দুপুর ১২টার দিকে ৩৫বস্তা লবণ আটশ টাকা করে খরিদ করি এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য ১৫০০ টাকা রোজে ১০ জন লোক নেই।

তিনি আরও লেখেন, লোকজন যাওয়ার আগেই সিলেটের মেয়র আরিফুল হক মহোদয় ওই জায়গায় পৌঁছে যান এবং আমাকে ফোন করেন। জানতে চান চামড়াগুলা এখানে রাখা কেন। আমি মেয়র মহোদয়কে বিস্তারিত বলার পরও উনি বললেন আমি চামড়াগুলো জব্দ করলাম এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমি মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ করলাম যে এই চামড়াগুলো থেকে যে টাকা আসবে এই টাকাগুলো মাদরাসার এতিম মিসকিন বাচ্চাদের জন্য খরচ হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি আমি সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় উনি ফোন কেটে দিয়ে লাইভ প্রোগ্রামে যে কথাগুলো বললেন তা খুবই দুঃখজনক।

যেখানে ৬৫০টি চামড়া ছিল সেখানে তিনি বলেছেন চার থেকে সাড়ে চার হাজার চামড়া এবং জোরপূর্বক আমাদের জায়গার গেট ভেঙে বুলডোজার দিয়ে সবগুলি চামড়া নিয়ে যান। আপনারা যে খবরগুলো ভাইরাল দেখছেন একজনও আমার মতামত অথবা বক্তব্য নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। আমি বিশ্বাস করি আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইনশাআল্লাহ জনবিরোধী, আইনবিরোধী এমন কোনো কাজ আমার জানা মতে করিনি এবং আপনারা মিরপুরবাসী লজ্জিত হবেন ইনশাআল্লাহ এমন কাজ আমি করব না। আশা করি আমার এই লেখা থেকে বিষয়টি কিছুটা হলেও পরিষ্কার হবে। শিগগিরই আমি সংবাদ সম্মেলন করে সম্পূর্ণ বিষয়গুলো দেশবাসীর কাছে জানিয়ে দেব।

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাহবুবুল হক শেরিনের জায়গা রয়েছে আম্বরখানায় এলাকায়। রাতে জগন্নাথপুর থেকে চামড়াগুলো এনে সেখানে রাখেন তিনি। অপরিকল্পিতভাবে ছয় শতাধিক চামড়া ফেলে রাখায় রোববার সকাল থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন পুরো এলাকাবাসী। দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশন অভিযান চালিয়ে চামড়াগুলো অপসারণ করে। পরে বিষয়টি ভাইরাল হয়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৪ আগস্ট ২০২০/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন