আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

চৌহাট্টায় বোমাতঙ্ক: ঘটনার পেছনে কে, সিসি ক্যামেরায় শনাক্ত?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৮-০৬ ১৯:২৬:২৭

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে একটি মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু নিয়ে আতঙ্ক ছিল প্রায় দুই দিন। সেই আতঙ্ক কেটেছে। কারণ, বোমাসদৃশ বস্তুটি আসলে বোমা ছিল না, ছিল গ্রাইন্ডিং মেশিন (টাইলস ও রড কাটার যন্ত্র)।

কে বা কারা ওই গ্রাইন্ডিং মেশিনটি পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলে রেখেছে, পুলিশ এখন সেটি তদন্ত করে দেখছে। গ্রাইন্ডিং মেশিনটি কোন উদ্দেশ্যে রাখা হয়েছে, সেটিও আছে তদন্তের আওতায়।

এক্ষেত্রে পুলিশের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে সিসি ক্যামেরা। নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে একাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। গ্রাইন্ডিং মেশিন কে বা কারা মোটরসাইকেলে রেখেছে, তা এসব সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয় সিলেট নগরীতে। এসব ক্যামেরায় ‘ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম’ রয়েছে। ফলে অপরাধীর চেহারা সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। রাতেও এসব ক্যামেরা ‘নাইট ভিশন’ প্রযুক্তিতে সমানভাবে কাজ করতে সক্ষম।

জানা গেছে, চৌহাট্টায় পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর মোটরসাইকেলে কে বা কারা গ্রাইন্ডিং মেশিন রেখেছে, তা শনাক্ত করতে এখন পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে। নগরীর কোতোয়ালী থানায় ক্যামেরাগুলোর কন্ট্রোল রুম রয়েছে। সেখান থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনার পেছনে কে বা কারা আছে, তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘সারা শহরেই আমাদের বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা আছে। আমরা গতকাল থেকেই তদন্ত করছি। সামনের সময়ে আমরা তদন্ত করে এটা (কারা গ্রাইন্ডিং মেশিন রেখেছে) বের করতে পারি বলে মনে করছি।’

সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার এসএম গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, কাল বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডু তাঁর ঢাকা মেট্রো ১৪-৯২৭০ নম্বরের কালো রঙের পালসার মোটরসাইকেলটি চৌহাট্টা পয়েন্টে পুলিশ বক্সের পাশে রাখেন। তিনি পার্শ্বস্থ একটি দোকান থেকে ফিরে মোটরসাইকেলে লাল রঙের বস্তু দেখতে পান। বিষয়টি তাঁর কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তিনি জানান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।

পরে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে ওই মোটরসাইকেলে ঘিরে ফেলে। মুহুর্তেই চৌহাট্টা পয়েন্টে মোটরসাইকেলে বোমা রাখা হয়েছে বলে গুঞ্জন ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি) ও র‌্যাব-৯ এর টিমও আসে। বন্ধ করে দেওয়া হয় চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়কে যান চলাচল।

সিলেট মহানগর পুলিশে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট না থাকায় খবর পাঠানো হয় ঢাকায়। পুলিশের সদর দপ্তর থেকে চৌহাট্টা পয়েন্টে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও বোমা ধ্বংসকরণ টিম পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয় সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরকে। সেনা সদর দপ্তর নির্দেশনা পাঠায় সিলেটস্থ ১৭ পদাতিক ডিভিশনকে।

এ ডিভিশনের বোমা বিশেষজ্ঞ লে. কর্ণেল রাহাত, লে. কর্ণেল খালেদ, ক্যাপ্টেন নূর, ক্যাপ্টেন গালিবসহ একটি টিম আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে। শুরু হয় তাঁদের অভিযান।

সেই সফল অভিযানে বোমাসদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করা হয়। জানা যায় সেটি আসলে বোমা নয়, গ্রাইন্ডিং মেশিন।

এতে স্বস্তি নেমে আসে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বোমা নয় জানার পর খুলে দেওয়া হয় জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়ক।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৬ আগস্ট ২০২০/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন