আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

তুঙ্গে সিলেট আ.লীগের তিন নেতার লড়াই

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৯-২৩ ১০:৪৪:২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট আওয়ামী লীগে এক পদে লড়াইয়ে নেমেছেন তিন আওয়ামী লীগ নেতা। তাদের ঘিরে সরব সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এ নিয়ে আলোচনাও তুঙ্গে। শুধু আওয়ামী লীগেই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই। কারণ- তারা তিনজনই হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের জাঁদরেল নেতা। পদটির নাম হচ্ছে, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ। এর মধ্যে একজন মন্ত্রী, একজন এমপি ও একজন সাবেক এমপি। তাদের পক্ষে সরব হয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

ইতিমধ্যে ঢাকায় গিয়েও তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্রের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছেন। ওদিকে- সিলেট আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতারাও বিতর্ক এড়াতে সিদ্ধান্তের বিষয়টি কেন্দ্রের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। ৫ই ডিসেম্বর সিলেটে সম্মেলনের মাধ্যমে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের নাম ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের প্রায় ৯ মাস পর দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে গত ১৪ই সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রের কাছে জমা দেন সিলেটের দায়িত্বশীল দুই নেতা।


সিলেট থেকে যে কমিটি পাঠানো হয়েছে সেই কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস ও সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি শফিকুর রহমানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা এখন এই দুইজনের মধ্য থেকে একজনকে নির্বাচিত করবেন। আওয়ামী লীগের বিগত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সহ-সভাপতি ছিলেন মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েস।

দলীয় নেতারা জানিয়েছেন- সম্মেলনের দিনই সিলেট ত্যাগ করার প্রাক্কালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুর কাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শফিকুর রহমান চৌধুরীকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রাখার নির্দেশ দেন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের। ফলে শফিকুর রহমান চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেছেন নেতারা। দলের তৃণমূল পর্যায়ে শফিকুর রহমান চৌধুরী গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সেই সুবাধে তিনি অনেকটা এগিয়েও রয়েছেন। সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী দলের ‍দুঃসময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তাকে মাঠের রাজনীতিবীদ হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পায়।


আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে দশম জাতীয় সংষদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন শফিকুর রহমান চৌধুরী। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তা প্রত্যাহার করে নেন। পূর্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বিদ্রোহী প্রার্থী সিলেট-৩ আসনের নির্বাচন অংশ নেন। এরপর তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হন। পরাজিত হওয়ার পর পূনরায় নির্বাচন করার জন্য তৎপর হয়ে তিনি আওয়ামী লীগে ভিড়েন। পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তিনি বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন।


এদিকে, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির সহ-সভাপতির তালিকায় ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। বর্তমান কমিটিতে তাকে রাখা হয়নি। তাকে দলের নেতাকর্মীরা দুঃসময় পাননি। এমনকি তিনি অতীতে দলের কোন কার্যক্রমেও অংশ নেননি। যার কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মাহমুদ উস সামাদ কয়েসের প্রতি ক্ষুব্ধ রয়েছেন। তারা আশাবাদি দলের কার্যক্রম গতিশীল রাখতে অতীতের ন্যায় এবারও সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে মূল্যায়ন করবেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

হঠাৎ করে কমিটি থেকে মন্ত্রী ইমরান আহমদের নাম বাদ দেয়ার কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তার নির্বাচনী সিলেট-৪ আসনের নেতারা। গত শনিবার সিলেট থেকে ঢাকায় গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের দলীয় নেতারা। সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে গিয়ে তারা দেখেন। এরপর বেরিয়ে এসে ওই দিন সন্ধ্যায় তারা আওয়ামী লীগে দপ্তর সম্পাদকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। ওই স্মারকলিপিতে তারা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

সিলে ভিউ ২৪ ডটকম/ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০/পিটি


শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন