আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

গভীর রাতে পুলিশ ছাড়া অসুস্থ সংবাদকর্মী বাপ্পির পাশে কাউকে মেলেনি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১০-২২ ২২:৫৮:৫৫

এম.এ.মতিন, গোয়াইনঘাট :: গত ১৫ অক্টোবর রাত দুইটার দিকে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন সংবাদকর্মী দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পি। বাপ্পির হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর তাকে চিকিৎসার জন্য সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা পরিচিত সবার কাছে মোবাইল ফোন করেন। কিন্তু মোবাইলে রিং হলেও ওপর প্রান্ত থেকে কেউই ফোন রিসিভ করেননি। শতাধিক মানুষের মোবাইল ফোনে বারবার রিং করা হলেও সবাই ছিলেন গভীর ঘুমে। শুধুমাত্র পুলিশের মোবাইলে প্রথম রিংয়েই ফোন রিসিভ হলো। ফোন পেয়ে সংবাদকর্মী বাপ্পির সার্বিক সহযোগিতায় পাশে দাড়ালেন প্রতি সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দিলীপ কান্ত নাথ।

জানা যায়, দুর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পি, সিলেটের গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক প্রচার সম্পাদক। বর্তমানে তিনি গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের কার্যনিবার্হী কমিটির সদস্য। তার পিতা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিন্দ্র চন্দ্র সরকার। তার স্থায়ী ঠিকানা সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামে। তিনি দীর্ঘ এক যুগ সময় ধরে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাওঁ ইউনিয়নের মিত্রিমহল গ্রামে বসবাস করে আসছেন। গত ১৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত দেড়টায় হঠাৎ তার হার্ট এ্যাটাক হয়।

গভীর রাতে সাংবাদিক দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পির হার্ট এ্যাটাক হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা তাকে চিকিৎসার দেয়ার জন্য মেডিকেলে রওয়ানা দিতে গাড়ির সন্ধান করেন। অনেক খোজাখুজি করে কোথাও গাড়ি না পেয়ে অবশেষে অসহায় সাংবাদিক দূর্গেশ চন্দ্র সরকারের পরিবারের সদস্যরা গোয়াইনঘাট থানাধীন সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দিলীপ কান্ত নাথের মোবাইলে ফোন দিয়ে সাংবাদিক দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পির শারীরিক অবস্থার বিষয়টি জানান। সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দিলীপ কান্ত নাথ সাংবাদিক দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের টহলকারী গাড়ী নিয়ে স্থানীয় মিত্রিমহল গ্রামে দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পির বাড়িতে উপস্থিত হন।এবং ওই গাড়ী দিয়ে বহন করে অসুস্থ সংবাদকর্মী বাপ্পিকে নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দরিদ্র সংবাদকর্মী বাপ্পিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্রের ব্যবস্থা করেন। মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় এবং সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দিলীপ কান্ত নাথের সার্বিক সহযোগিতাও মহানুভবতায় অবশেষে দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পি সুস্থ হয়ে গত বুধবার ( ২১ অক্টোবর) বাড়ি ফিরেছেন।

পুলিশের এই মহানুভবতার বিষয়টি অত্যন্ত আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও বর্তমান কার্যকরি কমিটির সদস্য দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পির ছোট ভাই ঝলক চন্দ্র সরকার। পাঠকের উদ্দেশ্যে ঝলক চন্দ্র সরকারের দেয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো। পুলিশ জনগণের বন্ধু, জীবনের ও বন্ধু। গতকালকে রাতে আমার বড় ভাই Durgesh Sorkar বাপ্পী রাত ১. ৩০ মিনিট গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় ওসমানী মেডিকেলে আনা প্রযোজন পড়ে।যদিও তৎক্ষণাৎ কোন গাড়ীর ব্যবস্থা করতে না পড়ায় হতাশ হয়ে পড়ি। দারস্ত হই দুঃসময়ের সারথী প্রিয় ব্যক্তিত্ব সালুটিকর ক্যাম্প ইনচার্য Dilip Nath উনার কাছে। উনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহন করেন। প্রাণে বেচে জান অবুঝ দুটি সন্তানের পিতা। মা ফিরে পায় প্রিয় সন্তান। উনার প্রতি আমাদের পরিবারের সারা জীবনের ঋন। পাশে ছিলেন আমাদের আরেক পরিবারের সদ্যসগন প্রিয় তাপস রন্জন দাস Protap Das।সবাই আমার ও পরিবারের আপনজন ধন্যবাদ দিয়ে পর করব না। সবার জন্য নিরন্তর ভালবাসা শ্রদ্ধা।

এব্যারে গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য দূর্গেশ চন্দ্র সরকার বাপ্পি বলেন, (১৫ অক্টোবর) গভীর রাতে আমার হার্ট অ্যাটাক হয়। আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে চিকিৎসা সেবাদানের জন্য একটি গাড়ি খোঁজতে প্রায় শতাধিক মানুষের মোবাইল ফোনে রিং করেন। কিন্তু কেউ ওপ্রান্ত থেকে মোবাইল ফোন রিসিভ করেনি। অবশেষে অসহায় হয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দিলীপ কান্ত নাথের মোবাইলে ফোন করেন। তিনি ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে টহলকারী পুলিশ ভ্যান নিয়ে আমার বাড়ীতে আসেন এবং আমাকে নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার সহযোগীতায় আমি আজ সুস্থ হয়ে ওঠেছি। ধন্যবাদ বাংলাদেশ পুলিশ কৃতজ্ঞতা রহিলো সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দিলীপ কান্ত নাথ।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ২২ অক্টোবর, ২০২০ /  মতিন / ডালিম

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন