Sylhet View 24 PRINT

জকিগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস আজ: মিলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১১-২১ ১০:৩২:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : জকিগঞ্জের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল দিবস শনিবার (২১ নভেম্বর)। একাত্তরের এইদিনে সারাদেশে যখন পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছিল তখন ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় ১২ ঘন্টা শ্বাসরুদ্ধকর যুদ্ধে অসংখ্য আহত নিহতদের মধ্যেদিয়ে জকিগঞ্জ থানা সদরসহ আশপাশ এলাকা পাক হানাদার মুক্ত করা হয়। কিন্তু আজও মিলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।

জানা যায়, ২৭ মার্চ জকিগঞ্জ ডাক বাংলোয় এক গোপন বৈঠকে থানার সকল ইপিআর ক্যাম্পের পাক সেনাদের খতমের সিদ্ধান্ত হয়। ২৮ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধা মেকাই মিয়া, চুনু মিয়া, আসাইদ আলী, ওয়াতির মিয়া, তজমিল আলী, মশুর আলী, হাবিলদার খুরশিদ, করনিক আবদুল ওয়াহাব, সিগনালম্যান আবদুল মোতালেবসহ অনেকেই প্র্রথমে জকিগঞ্জ ও মানিকপুর ইপিআর ক্যাম্পে অপারেশন চালিয়ে পাক সেনাদের খতম করে জকিগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজি মো. খলিল উদ্দিন জানান, দেশব্যাপী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে সিলেটের সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জকে শত্রু মুক্ত করার শপথ নেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর রাতে যৌথ বাহিনীর এক সাঁড়াশি অভিযানের ফলে ২১ নভেম্বর ভোরে হানাদার মুক্ত হয় জকিগঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধে জকিগঞ্জ ছিল ৪ নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। অধিনায়ক ছিলেনমেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সিআর দত্ত)। প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী এমপি ছিলেন এই সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা।

মুক্তাঞ্চলের প্রথম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জকে মুক্ত করার পরিকল্পনা অনুসারে ২০ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রথম দল লোহার মহলের দিকে ও দ্বিতীয় দল আমলসীদের দিকে অগ্রসর হয়। মূল দল জকিগঞ্জের কাস্টমঘাট বরাবর করিমগঞ্জ কাস্টমঘাটে অবস্থান নেয়।

প্রথম ও দ্বিতীয় দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে কুশিয়ারা নদী অতিক্রম করে জকিগঞ্জের দিকে অগ্রসর হয়। পাকবাহিনী খবর পেয়ে দিকবিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। মুক্তিবাহিনী তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে ভেবে তারা আটগ্রাম-জকিগঞ্জ সড়ক দিয়ে পালাতে থাকে। এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় দল জকিগঞ্জ পৌঁছে যায়। মূল দল কুশিয়ারা নদীতে রাবারের বালিশ দিয়ে সেতু তৈরি করে জকিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। তখন পাক সেনাদের বুলেটে শহীদ হন ভারতীয় বাহিনীর মেজর চমন লাল ও তার দুই সহযোগী। এ সময় কয়েকজন পাকসেনাকে আটক করা হয়। এভাবেই মুক্ত হয় জকিগঞ্জ।

তিনি বলেন, একুশে নভেম্বর ভোরে জকিগঞ্জের মাটিতেই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়িয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় পাক হানাদার বাহিনী যাদের আটক করেছিল জকিগঞ্জ থানা থেকে তাদের মুক্ত করা হয়। এদিকে, রণাঙ্গনের স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ২১ নভেম্বরকে দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।


সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/ ২১ নভেম্বর ২০২০/পিটি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.