Sylhet View 24 PRINT

সিলেটে নববধূ ‘হত্যা’ : ভূয়া আইডি কার্ড দিয়ে তামান্নাকে বিয়ে করেছিলেন মামুন!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১১-২৪ ১২:৩১:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীর উত্তর কাজীটুলার এলাকার অন্তরঙ্গ ৪/এ বাসার দুতলার তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে গতকাল সোমবার (২৩ নভ্ম্বের) দুপুর দেড়টায় নববধূ সৈয়দা তামান্না বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগ থেকেই তামান্নার স্বামী আল মামুন পলাতক রয়েছেন।

স্ত্রীকে হত্যার পাশাপাশি আল মামুনের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রতারণারও অভিযোগ। এর আগে আরেকটি বিয়ে করেছিলেন তিনি। মামুনের বিরুদ্ধে আগের স্ত্রীর দায়ের করা মামলাও রয়েছে। আগের স্ত্রীর ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে মামুনের।

এদিকে, তামান্নাকে বিয়ে করার সময় যে আইডি কার্ড তিনি দিয়েছিলেন সেটি ভূয়া বলে নববধূর পরিবারের অভিযোগ। মো. আল মামুনের জন্মস্থান বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার হোগলারচরে। তবে তার ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানায় রয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বারুতখানা এলাকার নাম। আইডি কার্ডে উল্লেখ, তিনি বারুতখানা এলাকার আবুল কাশেম সরদার ও আমম্বিয়া বেগমের ছেলে।

এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে মামুনের আইডি কার্ডের নাম্বারটি ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’র নির্দিষ্ট অপশনে গিয়ে সাবমিট করলে এতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মামুনের আইডি কার্ডের বিষয়ে জানতে স্থানীয় (সিসিকের ১৫ নং ওয়ার্ডের) কাউন্সিলর  ছয়ফুল আমিন বাকেরের মোবাইল ফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, সিলেট নগরীর উত্তর কাজীটুলার এলাকার অন্তরঙ্গ ৪/এ বাসার দুতলার একটি কক্ষ থেকে সোমবার (২৩ নভ্ম্বের) দুপুর দেড়টায় দক্ষিণ সুরমা থানার ফুলদি এলাকার মেয়ে নববধূ সৈয়দা তামান্না বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের ধারণা, স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী এবং রোববার রাতের কোনো এক সময় তামান্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মামুন।

তামান্না বেগম দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের ফুলদি গ্রামের সৈয়দ ফয়জুল হোসেনের মেয়ে। তবে মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার এমসি একাডেমি সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।

তামান্নার খালাতো ভাই মো. ইকবাল সিলেটভিউ-কে জানান, মামুন আগেও একটি বিয়ে করেছে। সেই বিয়ের বিষয়টি গোপন করে সে তামান্নাকে বিয়ে করে। এ ক্ষেত্রে মামুনকে সহায়তা করেন মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সের শাহনাজ পারভিন নামের এক মহিলা কর্মকর্তা।

ইকবাল আরও বলেন, ওই মহিলা মামুনকে তার চাচাতো ভাই বলে পরিচয় দেন এবং তামান্নার পরিবারে বিয়ের জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকেন। বিয়ের সময় টাকা দিয়েও শাহনাজ পারভিন সাহায্য করেন তামান্নার পরিবারকে। এসময়ের শাহনাজ পারভিনের আচরণই আমাদের কাছে সন্দেহজনক ছিলো। এ বিয়েতে তামান্নার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যদের অসম্মতি ছিলো। কিন্তু শাহনাজ পারভিনের পীড়াপিড়িতেই এ বিয়েটি হয়। মামুনের ভূয়া আইডি কার্ড শাহনাজই তৈরি করে দিয়েছিলেন বলে তামান্নার পরিবারের অভিযোগ।

মামুনের বিরুদ্ধে তার আগের স্ত্রীর দায়ের করা একটি মামলাও রয়েছে জানান তামান্নার খালাতো ভাই ইকবাল। সে স্ত্রীর ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে মামুনের।
 
এদিকে, সৈয়দা তামান্না বেগমকে হত্যার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে নিহতের ভাই সৈয়দ আনোয়ার হোসেন রাজা বাদি হয়ে কোতোয়ালি থানায় এই মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৫৮)। মামলায় নিহতের স্বামী মো. আল মামুনসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
 
অন্য আসামিরা হলেন- এমরান, পরভীন, মা্হবুব সরকার, বিলকিস ও শাহনাজ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ নং আসামি এমরান (৩০)-কে সোমবার (২৩ নভেম্বর) রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর সোবহানীঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তবে বাকিরা এখনও পলাতক রয়েছেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ২৪ নভেম্বর, ২০২০ / ডালিম

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.