আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেটে প্রবাসী জিল্লুরের যত অনৈতিক কীর্তি

স্ত্রীর লিগ্যাল নোটিশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৩-০৯ ১১:০১:১৭

ওসমানীনগর প্রতিনিধি: গোপনে বহুবিবাহ, অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জিল্লুর রহমানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন তারই স্ত্রী। জিল্লুর (৪৮) সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের ছোয়াব আলীর ছেলে। সিলেট জেলা বারের অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন ১০ ফেব্রুয়ারি এডি যোগে রেজিস্ট্রি করে জিল্লুরের গ্রামের বাড়ি ও যুক্তরাজ্যের ঠিকানায় এই লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন।

লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল ১০ হাজার পাউন্ড দেন মোহরে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক আমার মোয়াক্কেলকে (৪৬) বিয়ে করেন জিল্লুর। দেন মোহরের টাকা এখনও অপরিশোধিত। বিয়ের পর জিল্লুর আমার মোয়াক্কেলের বাসায় থাকলেও তাকে ভরণপোষণও দিতেন না। উল্টো নিজের প্রয়োজন এবং তার মা ও ভাইয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে কষ্টার্জিত কয়েক হাজার পাউন্ড হাতিয়ে নিয়েছেন জিল্লুর।

বিয়ের পর আমার মোয়াক্কেল জানতে পারেন-জিল্লুর একজন বহুগামী, পরনারী ও বিকৃত যৌনাচারে আসক্ত। ২০০৬ সালে জিল্লুরের ১ম স্ত্রী ব্রিটিশ নাগরিক আশাকে তালাক দেন। পরে আশা দেশে গিয়ে তার আপন ফুফাতো ভাইকে বিয়ে করে যুক্তরাজ্যে চলে যান। কিন্তু তালাক দেয়া স্ত্রীর সঙ্গে জিল্লুর এখনো স্বামী-স্ত্রীর মতো চলাফেরা করছেন।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আমার মোয়াক্কেলকে না জানিয়ে জিল্লুর দেশে এসে সিলেট শহরে বাসা তৈরির কথা জানিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। তখন জিল্লুর বলেন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে দেশে টাকা পাঠাতে হবে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় হুমকি ধামকি ও গালমন্দ করে আমার মোয়াক্কেলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন জিল্লুর।

স্বজনদের মাধ্যমে আমার মোয়াক্কেল জানতে পারেন- বালাগঞ্জের বাসিন্দা রাব্বিন জান্নাতকে গোপনে বিয়ে করে সিলেট শহরে ভাড়াটে বাসায় বসবাস করছেন জিল্লুর। একইভাবে ঢাকার একটি মেয়েকেও গোপনে বিয়ে করেছেন তিনি।

২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর জিল্লুর দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়ে তার মায়ের বাসায় উঠেন। সেখানে জিল্লুরের সঙ্গে স্ত্রী আমার মোয়াক্কেল কয়েক দিন থাকেন। তখন রাব্বিন জান্নাত ও ঢাকার কথিত মেয়েকে জিল্লুর বিয়ে করার বিষয়টি জানতে পারেন আমার মোয়াক্কেল।  বিয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করলে জিল্লুর তাকে মারধর করে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন। গত ২৬ জানুয়ারি জিল্লুর দেশে আসেন।

লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী বলেছেন, দেশে গোপনে বিয়ে করা দুই মেয়ে ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে মেয়েদেরকে বাসায় এনে অনৈতিক কীর্তিকলাপে লিপ্ত আছেন জিল্লুর। জিল্লুরের এমন কুকর্মের কারণে আমার মোয়াক্কেল আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে এখন দিশেহারা। তিনি মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

৩০ দিনের ভিতরে লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখিত অভিযোগগুলো সমাধানে সচেষ্ট হতে নোটিশ গ্রহীতা জিল্লুরকে বলা হয়েছে।

এদিকে বালাগঞ্জের মেয়ে রাব্বিন জান্নাতকে জিল্লুর রহমান বিয়ে করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাব্বিনের পিতা নূরুল ইসলাম। তবে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে-জিল্লুর-রাব্বিনের গোপন বিয়ের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে।

বিষয়গুলো অস্বীকার করে জিল্লুর রহমান বলেন, আমি কোনো লিগ্যাল নোটিশ পাইনি। অভিযোগকারী আমার স্ত্রী নয়, ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। এ বিষয়ে সে লন্ডনস্থ বার কাউন্সিলে আবেদন করলেও তা প্রমাণিত হয়নি। আশা বিবি-ই আমার স্ত্রী, আমাদের সন্তানাদিও আছে, তাকে তালাক দেয়ার প্রশ্নই আসে না।


সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/ পিটি-১

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন