আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এ বছর শ্রুতি সম্মাননা পাচ্ছেন কবি হেলাল হাফিজ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-১৪ ১৬:০৭:৫৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বাংলাদেশের জনপ্রিয় আধুনিক কবি যিনি স্বল্পপ্রজ হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি আর কেউ নন আমাদের হেলাল হাফিজ।১৯৪৮ সালে ৭ অক্টোবর নেত্রকোনা জেলায় জন্মগ্রহন করেন।তার পিতার নাম খোরশেদ আলী তালুকদার, মাতা কোকিলা বেগম। ১৯৬৫ সালে নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। ওই বছরই কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বদেশে সাংবাদিকতায় যোগদান করেন। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সাহিত্য সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে তিনি দৈনিক দেশ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদে যোগদান করেন । সর্বশেষ তিনি দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত ছিলেন।তার কবিতা সংকলন যে জলে আগুন জ্বলে ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর অসংখ্য সংস্করণ হয়েছে। ২৬ বছর পর ২০১২ সালে আসে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ কবিতা একাত্তর। তার অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’;- এ কবিতার দুটি পংক্তি ‘‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’’ বাংলাদেশের কবিতামোদী ও সাধারণ পাঠকের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়ে থাকে।তিনি সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক হিসাবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কাজ করেছেন। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের রাতে অলৌকিকভাবে বেঁচে যান হেলাল হাফিজ। সে রাতে ফজলুল হক হলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় পড়ে সেখানেই থেকে যান। রাতে নিজের হল ইকবাল হলে (বর্তমানে জহুরুল হক) থাকার কথা ছিল। সেখানে থাকলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের শিকার হতেন। ২৭ মার্চ কারফিউ তুলে নেওয়ার পর ইকবাল হলে গিয়ে দেখেন চারদিকে ধ্বংসস্তূপ, লাশ আর লাশ। হলের গেট দিয়ে বেরুতেই কবি নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে দেখা। তাকে জীবিত দেখে উচ্ছ্বসিত আবেগে বুকে জড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকলেন নির্মলেন্দু গুণ। ক্র্যাকডাউনে হেলাল হাফিজের কী পরিণতি ঘটেছে তা জানবার জন্য সে দিন আজিমপুর থেকে ছুটে এসেছিলেন কবি গুণ। পরে নদীর ওপারে কেরানীগঞ্জের দিকে আশ্রয়ের জন্য দুজনে বুড়িগঙ্গা পাড়ি দেন।

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তার কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয়। কবিতার জন্য পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির কবি সংবর্ধনা (১৯৮৫), যশোহর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোণা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেদদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা,বাসাসপ কাব্যরত্ন - ২০১৯ প্রভৃতি। কবিতায় তিনি ২০১৩ সালের বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

এ বছর শ্রুতি সম্মাননা ১৪২৭ বাংলা পাচ্ছেন কবি হেলাল হাফিজ। উল্লেখ্য প্রতি বছর বাংলা নববর্ষের দিন বিভিন্ন মাধ্যমে সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য  বিগত বছরের সম্মাননা তুলে দেয় শ্রুতি সিলেট। এ বছর করোনা ক্রান্তি কালের জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মাননা তুলে না দেয়া হলেও পরবর্তী সময়ে তা আনুষ্ঠানিক ভাবে গুণীজনের হাতে তুলে দেয়া হবে। বিগত বছর গুলোতে শ্রুতি সম্মাননা পেয়েছেন অভিনয় এবং আবৃত্তিতে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়,রূপা চক্রবর্তী, রবীন্দ্র সংগীতে প্রমোদ দত্ত-নীলোৎপল সাধ্য, ড. মকবুল হোসেন,নজরুল সংগীতে- উস্তাদ করিম শাহাবুদ্দিন, সুজিত মোস্তফা,সালাউদ্দিন আহমেদ, লোক সংগীতে চন্দ্রাবতী রায় বর্মণ,গণসংগীতে ভবতোষ চৌধুরী, কবিতায় কবি তুষার কর,শিক্ষায় সুরেষ রঞ্জন বসাক,সংস্কৃতিতে ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ আরশ আলী,চিত্রকলায় অরবিন্দ দাশ গুপ্ত, সাহিত্যে শাহীন আখতার প্রমুখ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৪ এপ্রিল ২০২১/ডেস্ক/ জুনেদ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন