আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জগন্নাথপুর বেড়িবাঁধে লুটপাট-বাণিজ্য

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-১৮ ১২:৩৭:৩৬

জগন্নাথপুরের পিংলার হাওর বেড়িবাঁধের একাংশ যেখানে এখনও মাটি পড়েনি।

নিজস্ব প্রতিবেদক, জগন্নাথপুর :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধ নিয়ে চলছে তুঘলকি কারবার। সরকার নির্ধারিত কাজের সময় পেরিয়ে গেলেও অনেক বেরীবাঁধ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্মিত হয়নি। দায়সাড়া মাটি ফেলে অনেক পিআইসি মোটা অংকের টাকা লুটপাট করছে। অথচ এরই মধ্যে পিআইসিদের ৬০% টাকা প্রায় ৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। হাওরের বেড়িবাঁধকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট এরা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে মোটা অংকের টাকা ভাগিয়ে নিয়ে নামমাত্র কাজ করে মোটা অংকের টাকা লুটপাট করছে।

অভিযোগ রয়েছে, জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতি বছরেই সরকারি টাকা লুটপাট করে দুর্নীতিবাজরা পার পেয়ে যাচ্ছে। ঘুরে ফিরে প্রতি বছর একই লুটেরাদের বেড়িবাঁধের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জানা যায়, সরকারএবার উপজেলার হাওরের ৭০ কি.মি. বেরী বাঁধ নির্মাণে প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। গঠন করা হয়েছে ৩৭ টি পিআইসি (প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটি)। পিআইসি গঠনে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজীর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। গত বছর ও মোটা অংকের বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের মেম্বার হিরা মিয়া সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন।

জনলুয়া হাওর পাড়ের কৃষক সিদ্দিক মিয়া জানান, বাঁধ গুলোতে নাম মাত্র মাটি ফেলে সরকারী টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। এ ছাড়া এবার ও পাউবোর কর্মকর্তা হাসান গাজীকে ম্যানেজ করে আওয়ামীলীগ নেতা জুয়েল মিয়া নলুয়া হাওরের পশ্চিম প্রান্তের ৫টি বাঁধের কোটি টাকার কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন। তার ভাই ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে পিআইসি গঠনের মাধ্যমে বাঁধ গুলোতে দায়সারাভাবে মাটি ফেলে সরকারী টাকা লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। এ দিকে স্থানীয় পিংলার হাওরের বেড়িবাঁধ কাজ এখন ও সম্পন্ন না হওয়ায় হাওরটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ঠিকাদার কামরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা নদী তীরবর্তী পিংলার হাওরের পুরাতন বেরী বাঁধে দায়সারাভাবে এলোমেলো ভাবে মাটি ফেলে স্হানীয় কৃষকদের ভোগান্তির মধ্যে ফেলে  দিয়েছে।
 
জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান বলেন,  পিংলার হাওরে ১২ কেদার জমি করেছি (৩০শতক) সঠিকভাবে বেরী বাঁধ না করায় ধান কর্তন করে কি ভাবে ঘরে তুলবো এ নিয়ে চিন্তায় আছি।

কৃষক আব্বাস আলী জানান, ঠিকাদার নাম মাত্র মাটি ফেলেছে। বাঁধের ড্রেসিংও করেনি আবার অনেক স্থানে মাটিও পড়েনি। এদের কার্যকলাপে আমরা ভোগান্তিতে পড়েছি। নামমাত্র মাটি ফেলে মোটা অংকের টাকা লুটপাট করছে দুর্নীতিবাজরা।

এ বিষয়ে ঠিকাদার কামরুজ্জানের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।

পাউবোর জগন্নাথপুর উপজেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারদের অনিয়মের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, ঠিকাদারদের অনিয়মের সকল বিষয় আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ঠিকাদারদের দুর্নীতি জেলা সমন্বয় সভায় জানিয়েছি। এরা দায়সারাভাবে কাজ করে জনসাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে এবং সরকারী টাকা লুটপাট করেছে। এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন ।


সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/সুনু/পিটি-৬


@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন