আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এমসি কলেজ ছাত্রাবাস ভাঙচুর নিয়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৭-১৬ ০০:০৩:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক :: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ভাঙচুর চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে ছাত্রবাসের বেশকটি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

জানা যায়- দীর্ঘদিন ধরেই পুননির্মিত ছাত্রাবাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চৌধুরী ও সাবেক স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হোসেইন আহমদের অনুসারীদের সাথে এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা টিটু চৌধুরী এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ডায়মন্ডের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

তবে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দুপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বিবাদিমান থাকলেও বৃহস্পতিবারে ছাত্রাবাস ভাংচুরের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে অন্য একটি কারণ।

টিলাগড় এলাকার ছাত্রলীগের একাধিক সুত্রে জানা যায়- গত বুধবার (১২ জুলাই) ছিল এম সি কলেজের গণিত বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা উদয়েন্দু সিংহ পলাশের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। উদয়েন্দু সিংহ পলাশ রাজনৈতিক কর্মকান্ডে টিটু চৌধুরী ও জয়নাল আবেদিন ডায়মন্ডের সহযোগী ছিলেন। আর সঞ্জয় চৌধুরী এবং হোসাইন আহমদের ছিলেন বিরোধী পক্ষ। বুধবার পলাশের মৃত্যুবার্ষিকী থাকায় ঐদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখালেখি করেন টিটু ও ডায়মন্ডের অনুসারীরা এবং টিলাগড় গ্রুপের অনেক নেতাকর্মীরা। কিন্তু, ঐদিন সঞ্জয় ও হোসাইনের অনুসারী কয়েকজন হাসিমুখে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন। যা টিটু চৌধুরী ও ডায়মন্ডের কাছে দুঃখজনক মনে হয়।

এই ঘটনা নিয়ে বুধবার রাতেই টিলাগড় পয়েন্টে নিয়মিত আড্ডায় সঞ্জয় ও হোসাইনের অনুসারীদের সাথে কথা কাটাকাটি হয় টিটু চৌধুরীর। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সঞ্জয় ও হোসাইনের অনুসারীরা টিটু ও ডায়মন্ডের অনুসারীদের ধাওয়া দেন। এ ধরণের ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পরে টিটু ও ডায়মন্ডের অনুসারীরা তাদেরকে ধাওয়া দিতে একত্র হলেও সেসময় আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

সুত্র আরো জানায়- এর কিছুক্ষণ বুধবার রাতেই এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ১ ও ৪নং ব্লকের টিটু ও ডায়মন্ডের অনুসারীদের রুমে হামলা চালায় করে সঞ্জয় ও হোসাইনের অনুসারীরা। এসময় তারা রুমে ভাঙচুর চালায় এবং আসাদ নামের এক ছাত্রে ব্যবহৃত ল্যাপটপটি নিয়ে যায়।

পরদিন সকালে ঘটে মুল ঘটনা। রাতের ঘটনার বদলা নিতে সকাল থেকেই ছাত্রাবাসে জড়ো হতে শুরু করেন টিটু চৌধুরী ও জয়নাল আবেদিন ডায়মন্ডের অনুসারীরা। ছাত্রাবাসে সঞ্জয় ও হোসাইনের অনুসারীদের না পেয়ে টিটু ও ডায়মন্ড অনুসারীরা ছাত্রাবাসে তাদের ব্যবহৃত রুমে হামলা চালায় এবং ব্যপক ভাঙচুর করে। এতে পুননির্মিত ছাত্রাবাসের বেশকটি কক্ষ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তবে এ ব্যপারে পরস্পর বিপরীতমুখি বক্তব্য দিয়েছেন দু’পক্ষের দায়িত্বশীল নেতারা।

এ ঘটনা নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চৌধুরী বুধবার রাতে ছাত্রাবাসে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন- বুধবার রাতে জুনিয়রদের মধ্যে ঝামেলা নিয়ে টিটু চৌধুরী ও ডায়মন্ডের সাথে তার অনুসারীদের বাগবিতন্ডা হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার টিটু ও ডায়মন্ডের নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা এসে ছাত্রাবাসে ভাঙচুর চালায়।

তবে এ ঘটনা নিয়ে উল্টো কথা বলেছেন এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা টিটু চৌধুরী। ঘটনার ব্যপারে তিনি বলেন- ভাংচুরের সূত্রপাত ঘটিয়েছেন সঞ্জয় চৌধুরী ও হোসাইন আহমদের অনুসারীরা। বুধবার রাতে জুনিয়রদের মধ্যে ঝামেলার জেড় ধরে বহিরাগতদের দিয়ে ছাত্রাবাসে হামলা ও ভাঙচুর করে তারা। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপক্ষের সংঘর্ষে আরো কয়েকটি রুম ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৬ জুলাই ২০১৭/শাদিআচৌ/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন