আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

উইমেন্স মেডিকেলের ঘটনা চেনা ষড়যন্ত্রেরই অংশ: মেয়র আরিফ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৭-১৭ ২০:৫১:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দাবি করেছেন- ‘নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকার রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ নিয়ে সৃষ্ট ঘটনা চেনা ষড়যন্ত্রের অংশ। আগামী সিটি নির্বাচনে আমি যাতে অংশ নিতে না পারি সে জন্যই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমার বিরুদ্ধে একটি বেসরকারী মেডিকেলের এক পরিচালককে মারধোরের অভিযোগ আনা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’

তিনি আরো দাবি করেছেন- ‘মেডিকেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওখানে কোন মারধোরের ঘটনা ঘটেনি। শুধুমাত্র আমি আমার কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে সেখানে রাস্তা সম্প্রসারণের ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। এই ঘটনাকেই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে উপস্থাপন করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যা চরম নিন্দনীয়।’

তিনি সোমবার বিকালে নগরীর তোপখানাস্থ অস্থায়ী নগরভবনে সাংবাদিকদের সাথে তাৎক্ষণিক মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেছেন। এসময় বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন- ‘আমি জনগণের সেবক। জনগণের উন্নয়নে রাস্তা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছি। ব্যস্ততম নয়াসড়ক থেকে চৌহাট্টা পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের ব্যাপারে আমি পৃথক পৃথকভাবে বসেছি খ্রিস্টান মিশন, নয়াসড়ক মাদরাসা ও উইমেন্স মেডিকেলের সাথে। তারা রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জায়গা ছেড়ে দেবেন বলে জানালে নগরভবন থেকে টেন্ডার আহবান করে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করি।ইতিমধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়েছে খ্রিস্টান মিশন অংশের। এর ধারাবাহিতায় সোমবার সকালে উইমেন্স মেডিকেলে সিটি করপোরেশনের একজন প্রকৌশলী ও কিছু শ্রমিক যান। কিন্তু তাদেরকে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দেন।’

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিষয়টি জানতে চেয়ে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. শাহ আব্দুল আহাদকে ফোন দেন। ডা. আহাদ আরিফকে ফোনে বলেন - ‘রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়ার ব্যাপারে আমরা ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি।’

ওই কমিটিতে কারা রয়েছেন মেয়র জানতে চাইলে ডা. আহাদ মেয়রকে বলেন- ‘তোমাকে’ আমি কেন বলবো এই কমিটিতে কারা আছেন? মেয়র আরিফ ব্রিফ্রিংয়ে বলেন- এমন আচরণে আমি ফোন রেখে দেই। পরে বিকালে সরাসরি কয়েকজন কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে ডা. শাহ আহাদের সাথে দেখা করি। এসময় আমি তার রুমে গিয়ে রাস্তার ব্যাপারে কথা বলি।

মেয়র বলেন- ‘‘সেখানে তিনি ন্যূনতম সৌজন্যতাও দেখাননি। আমি একজন মেয়র আমাকে বসতেও বলেননি। পরে আমার সাথে থাকা কাউন্সিলরদের সাথে তার বাকবিতন্ডা হয়। পরে আমি তাদেরকে সরিয়ে নিয়ে আসি। তখন সেখানে থাকা মেডিকেলের পরিচালনা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিনসহ অন্যরা আমাদের নিয়ে পাশের রুমে বসেন। এসময় সেখান থেকে আমি শুনতে পাই অন্যরুমে কথাবার্তা চলছে যে আমি মারধোর করেছি। অশালীন আচরণ করেছি। এটা শুনে আমি বুঝতে পারি তৃতীয় কোনপক্ষ বিষয়টি থেকে নিজেদের ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে। এটা সেই চেনা ষড়যন্ত্রেরই অংশ। যেকারণে আমাকে দীর্ঘদিন জনসেবা থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে।’’

উইমেন্স কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের কাছে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছেন দাবি করেন মেয়র। মেয়র বলেন ভূয়া ও মিথ্যা তথ্য সাজিয়ে যদি তারা মামলা করেন তবে তার বিপরীতে নগরভবন কর্তৃপক্ষও মামলা করবে।

প্রসঙ্গত, নগরীর মীরবক্সটুলাস্থ উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. শাহ আব্দুল আহাদকে মারধর করার অভিযোগ ওঠেছে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তবে আরিফ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে কয়েকজন কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে মেয়র আরিফ উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান আরিফ। সেসময় নাকি তিনি ডা. আব্দুল আহাদকে মারধোর করেছেন দাবি হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিনের।

তখন মেয়র রাস্তা সম্প্রসারণের ব্যাপারে আলোচনা করতে কয়েকজন কাউন্সিলদের সাথে নিয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. শাহ আব্দুল আহাদের সাথে কথা বলতে যান। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ঘটে। মেয়রের পক্ষ নিয়ে কাউন্সিলররা ডা. শাহ আব্দুল আহাদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। পরে মেয়র কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এরপরই মেয়রের বিরুদ্ধে ডা. শাহ আব্দুল আহাদকে মারধোরের অভিযোগ আনা হয়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৭ জুলাই ২০১৭/ এমইউএ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন