আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বালাগঞ্জে পেঁয়াজের চড়ামূল্যে ক্রেতারা দিশেহারা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-১৩ ১১:২১:৪০

মো. জিল­ুর রহমান জিলু, বালাগঞ্জ প্রতিনিধি :: বালাগঞ্জে পেঁয়াজের চড়ামূল্যে ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দফায় দফায় বন্যায় বোরো এবং আউশ ফসল হারানোসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, দুর্গত বালাগঞ্জবাসীর এমনিতেই চিন্তার শেষ নেই। চাল, ডাল, লবণ সংগ্রহের ক্ষেত্রেই যেখানে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সেখানে গত এক সাপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের চড়ামূল্যে প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সকল শ্রেণিপেশার নাগরিকরা। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী লোকজন এখন ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ অনুভব করছেন।

বালাগঞ্জের কোন কোন হাট-বাজারে সর্বোচ্চ ৬০টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রির সংবাদ পাওয়া গেছে। আগামী দিনগুলোতে বিশেষ করে ঈদুল আযহা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছে তা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন  ক্রেতারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সাপ্তাহের ব্যবধানে বালাগঞ্জ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২০/৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে পাইকারী বাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। তবে ক্রেতারা মনে করছেন ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার জন্য মাত্রাতিরিক্ত মূল্য আদায় করছেন। এ নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক হতাশা এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে। আসন্ন ঈদুল আযহার আগেই পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।

শনিবার বিভিন্ন হাট-বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বালাগঞ্জ উপজেলা সদরে ৫০টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও পৈলনপুর ইউনিয়নের জালালপুর বাজারে সর্বোচ্চ ৬০টাকা কেজি দরেও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজারে ৫০টাকা, দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের মাদ্রাসাবাজারে ৬০টাকা, মোরারবাজারে ৫০টাক থেকে ৫৫টাকা, বোয়ালজুড় ইউনিয়নের কালিবাড়ী বাজারে ৫৮ টাকা হারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে মাত্র সাপ্তাহ খানেক আগেও ২৫/৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে আলাপকালে ক্রেতা নজরুল ইসলাম, বাহার মিয়া, রুবেল আহমদ পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য ‘আমরার আর বাচার উপায় নাই, কাম-কাজও ১দিন পাইলে ৩দিন বেকার থাকতে হয়। চাউলের কেজি ৯০টাকা, পেঁয়াজের কেজি ৬০টাকা।’

আলাপকালে ব্যবসায়ী জুনেদ খান, আশিক আলী, রিপন দাস প্রমুখ পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন।

দফায় দফায় বন্যা আক্রান্ত বালাগঞ্জ উপজেলার লোকজন এখন বাঁচা-মরার লড়াইয়ে লড়ছে। ফসল হারানোর পর ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি তাদের দিশেহারা করে তুলেছে। চাল, ডাল, পেঁয়াজের প্রসঙ্গ বাদ দিলেও মাছের জন্য বিখ্যাত বালাগঞ্জে ভরমৌসুমেও মাছের আকাল বিরাজ করছে। হাট-বাজারে মাছের মূল্য অনেক চড়া। মৎস্যজীবীরা স্থানীয়ভাবে মাছ আহরণ করতে পারছেন না। সারাদিন খেটে যে মাছ তারা ধরছেন তা দিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। সব মিলিয়ে প্রতিকুল সময়ে অনেক কষ্টে জীবন চালিয়ে যাচ্ছেন বালাগঞ্জবাসী।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩ আগস্ট ২০১৭/জেআরজে/এমকে-এম


শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন