আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

বাংলাদেশে প্রথম ‘প্রজেরিয়া’ রোগী জকিগঞ্জের এক স্কুল ছাত্র

চিকিৎসক জানালেন, এ রোগের চিকিৎসা জানা নেই

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১০-১২ ০০:১৩:৩১

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :: জকিগঞ্জে বিরল রোগে আক্রান্ত এক স্কুল ছাত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। উপজেলার বারঠাকুরী ইউপির তিনগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ছাত্রের সন্ধান মিলে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে ড্রেস পরে বসে আছে আব্দুন নূর নামের অস্বাভাবিক আকৃতির এক শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীর শরীরের চামড়াশুষ্ক ও ঝুলে পড়ছে, মাথা বড়, চুল ও চোঁখের উপরে ভ্রু নেই। মুখটাও ছোট, হাত ও আঙ্গুলের হাড়গুলো স্পষ্ট ভেসে উঠেছে, চলাধফেরায় ধীরগতি। চেহারা দেখতে ৩০/৪০ বছরের বয়স্ক মানুষের মত লাগে। ছেলেটি কজাপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল বাসিতের পুত্র।

এ রোগ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মেহেদীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ রোগটি প্রজেরিয়া (Progeria) নামের জ্বীন ঘটিত একটি বিরল রোগ। এ রোগে আক্রান্ত অল্প বয়সের শিশুগুলোকে দেখতে  বয়স্ক মনে হয়। আমাদের দেশে এ ধরণের কোন রোগীর সন্ধান ইতিপূর্বে মেলেনি। জকিগঞ্জেই প্রথম এই ধরণের রোগের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি বংশানুক্রমিক বা উত্তরাধিকারসূত্রের কোন রোগ নয়। এ রোগ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদেরও অনেক কিছু অজানা। এ রোগ নিরাময়ে কোনো চিকিৎসাই সফল হয়নি। রোগটি চিহ্নিত করা গেলেও তাঁর চিকিৎসা জানা নেই। পজেরিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুরা গড়ে ১৩-১৫ বছর বাঁচে।

তিনগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরেময় নাথ জানান, বিরল রোগে আক্রান্ত এই শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় অনেকটা মেধাবী। সে কথা বলে খুবই আস্তে। অন্য শিক্ষার্থীরা রোগে আক্রান্ত এ ছাত্রকে ভয় পায়।

শিশুটির মা রাবিয়া বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ রোগটি শিশুটির জন্মের। রোগটি থেকে রেহাই পেতে অনেক চিকিৎকের দ্বারস্থ হয়েছি কিন্তু নিরাময় হয়নি। চিকিৎকরা জানিয়েছেন এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই। শিশুটি পুষ্টির অভাবে এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম সিরাজী বলেন, আমার চাকুরী জীবনে এ রোগে আক্রান্ত কোন শিশু দেখিনি। আমরা এই শিক্ষার্থীকে প্রতিবন্ধিদের তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১২ অক্টোবর ২০১৭/ আহাতা/ এমইউএ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন