আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

বড়লেখায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, হত্যা নাকি আত্মহত্যা ?

স্বামীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১০-১২ ১৯:৪০:৪০

বড়লেখা প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রেসমা আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল চারটার মধ্যে যে কোন সময় উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব শংকরপুর (চুলুপাড়া) গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

পুলিশ খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘরের কাঠের তীরের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রেসমার লাশ উদ্ধার করে। এদিকে রেসমাকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ এনে ওইদিন রাতে স্বামীসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রেসমার বাবা ফরিজ আলী। মামলা নম্বর ৫।

পুলিশ, স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর (কাঁঠালতলী) ইউনিয়নের তেরাকুঁড়ি গ্রামের ফরিজ আলীর মেয়ে রেসমা আক্তারের সাথে ৫ বছর পূর্বে দাসেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব শংকরপুর (চুলুপাড়া) গ্রামের বেলাল মিয়ার ছেলে আব্দুস সামাদের বিয়ে হয়। এটি রেসমার দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। ঘটনার দিন বুধবার সকালে রেসমাকে স্বামী সামাদ আহমদ মারধর করেন। পরে স্বামী সামাদ কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আনুমানিক দেড়টার দিকে রেসমা নিজ কক্ষে প্রবেশ করেন। বিকেল প্রায় চারটা পর্যন্ত তিনি ঘর থেকে বের হননি। স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের কাঠের তীরের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রেসমার লাশ উদ্ধার করে। পরে সুরহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।

এদিকে নিহত রেসমার বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ রেসমাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রেসমার বাবা বাদী হয়ে স্বামী সামাদ আহমদ ও তার বোন নাজমিন আক্তার, ফাহিমা বেগম এবং বোন জামাই গিয়াস উদ্দিনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা করেন।  

নিহত রেসমার ছোট ভাই জুনেদ আহমদ অভিযোগ করে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে প্রায়ই আমার বোনকে দুলাভাই ও তার পরিবারের লোকজন নির্যাতন করতেন। অনেক বার টাকা দিয়েছি। নির্যাতন যাতে বন্ধ হয়। ঘটনার দিন সকালে আমার বোনকে অনেক মারধর করা হয়। পরে দুপুরে দুলাভাই (সামাদ আহমদ) আমাদের বাড়িতে ফোন করে বলেন ফাঁসি অইলে ফাঁসি অইবো। আইজ (আজ) কোন কাম করমু। বইনরে (বোনকে) নেওগি আইয়া (নিয়ে যাও)। দুলাভাই ও তার পরিবারের লোকজন মিলেই আমার বোনকে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারী বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিটন চন্দ্র পাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করি। লাশের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।’

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বলেন, ‘ঘটনার দিন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে। এ কারণে রেসমা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। নিহতের বাবা (রেসমার) স্বামীসহ চার জনের নামে মামলা দিয়েছেন। নিহতের স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন। তদন্ত চলছে। ’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১২ অক্টোবর ২০১৭/এজেএল/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন