আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

তামাকজাতদ্রব্য বাজারজাত হচ্ছে নির্দ্বিধায়, বাড়ছে মরণব্যাধি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১০-১৩ ১০:২৩:৪৬

আব্দুল আহাদ :: সরকারি প্রজ্ঞাপণ মানছে না সিগারেট কোম্পানিগুলো। প্যাকেটের উপরিভাগে ভয়ংকর রোগের ছবি ব্যবহারের নির্দেশনার ধারে কাছে নেই তারা। আইনের প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়ে তামাকজাতদ্রব্য বাজারজাত হচ্ছে নির্দ্বিধায়। এই সুযোগে ধুমপায়ির সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মরণব্যাধি। বিশেষ করে তরুণদের মাঝে ধুমপানের প্রবণতা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সর্বমহলে।

সিলেট সিভিল সার্জন অফিসসূত্রে জানা গেছে, সিগারেটের ব্যবহার কমানোর পদক্ষেপ হিসেবে তামাকজাত  দ্রব্যের প্যাকেটের ৮০ ভাগ জুড়েই ভয়ানক ছবি থাকতে হবে। ধুমপানের বিজ্ঞাপন প্রচার ও বিক্রয়ে প্রলুব্ধ করার উদ্দ্যেশ্যে উপহার সামগ্রী প্রদান না করার কথা বলা হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রজ্ঞাপণ জারি করার প্রেক্ষিতে হাইর্কোটে রিট আবেদন করা হয়। তখন এক বছর সময় দেওয়া হয়। আবারও এবছরের ১৯ সেপ্টেম্বরে ওই প্রজ্ঞাপণ কার্যকর করতে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে, টোবাকো কোম্পানিগুলোর আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট তা  ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন। এই স্থগিতাদেশের পর তামাকজাত পণ্য ব্যবসায়িরা সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। এতে হতাশায় পুড়ছেন অধুমপায়ি ও সাধারণ মানুষ।
বন্দরবাজারের ব্যবসায়ী রশিদ আলী বলেন, ‘শুনেছি সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে বিভিন্ন রোগের ক্ষতচিহ্নের ছবি থাকবে। কিন্তু এটা মানা হয়না। ভয়ংকর ছবি থাকলে অনেকেই ভয় পাবে। এতে করে অনেকেই ধুমপান পরিত্যাগ করতে পারে’।
আম্বরখানা এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী নিখিল চন্দ্র সরকার বলেন, সুন্দর মোড়কের বর্তমান প্যাকেটগুলোকে তেমন পাত্তা দেন না ধুমপায়িরা। তাই তাদের ভয় দেখিয়ে হলেও সতর্ক করার জন্য সিগারেট এবং অন্য তামাকজাত  পণ্যের প্যাকেটের ৮০ ভাগ জুড়েই ভয়ানক ছবি দিলে ভালো হত।

উপশহরের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মো. রায়হান শাফী বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলো আকর্ষণীয় প্যাকেট তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এতে তরুণরা সিগারেটের প্রেমে পড়ছে। তাছাড়া অনেক কোম্পানি মানুষকে ধুমপানে উদ্বুদ্ধ করছে। সিগারেটকে সহজলভ্য করছে। ওই ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, এগুলো বন্ধ করতে হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সিগারেটের ওপর শুল্ক ও কর বাড়াতে হবে। প্রকাশ্যে ধুমপান বন্ধ করতে জরিমানা বাড়াতে হবে।
আইনে বলা আছে, কেউ জনসমাগম বা গনপরিবহনে ধুমপান করলে তাকে ৩০০ টাকা জরিমানা করা হবে। এই আইন কেউ জেনে অবজ্ঞা করেন। কারো আবার এটি সম্পর্কে ধারণাই নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হলে ধুমপায়িদের সংখ্যা অনেকটা কমতে পারে। তবে সর্বাগ্রে প্যাকেটের উপরিভাগে ভয়ংকর ছবি সেঁটে দেওয়াটাই জরুরি।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবার ধুমপানের সময় যদি কেউ ফুসফুস ও মুখের ক্যানসার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, গর্ভপাত ও শরীরে পচনশীল অসুখের মরণব্যাধির সচিত্র রূপ দেখে, তাহলে ধুমপায়িদের মধ্যে তৈরি হবে ভীতি ও সচেতনতা। কমে আসবে তামাকের ব্যবহার।
এ বিষয়ে সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টার স্নিগ্ধেন্দু সরকার বলেন, আমরা চেষ্টা করছি তরুণ সমাজকে তামাকের ভয়াবাহ ক্ষতি থেকে বাঁচাতে। অধিকাংশ মাদকসেবির জন্ম হয় এই সিগারেট থেকে। সিগারেটের ব্যবহার নিরুসাহিত করতে সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রতি সাপ্তাহে মাদক এবং তামাকের বিরুদ্ধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩অক্টোবর২০১৭/আআ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন