Sylhet View 24 PRINT

পৃথিবীর রহস্যময় ৫ ঘটনা, যার ব্যাখ্যা বিজ্ঞানও দিতে পারেনি!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-২৪ ০০:২১:৩২

সিলেটভিউ ডেস্ক :: আধুনিক যুগে বাস আমাদের। যে কোন ঘটনাকে বিশ্বাস করতে আমাদের প্রয়োজন হয় প্রমাণের। শুধু তাই নয়, পার্থিব সব কিছুরই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়। তা অবশ্য ভুল নয়। এমনকী বিশ্বাস আর বিজ্ঞানে কোনও সংঘাতও নেই সবসময়। তবে এমন অনেক ঘটনা ঘটে, ঘটে গিয়েছে এই পৃথিবীতেই, যার পূর্ণ বা কিছুটা ব্যাখ্যা দিতেও অপারগ হয়েছে বিজ্ঞান। পরীক্ষানিরীক্ষা, বিশেষজ্ঞের মতামত পেরিয়ে সেই সব ঘটনা শুধু জন্ম দিয়ে গিয়েছে রহস্যের।

যে সে রহস্য নয়, বহু চেষ্টা করেও যে রহস্যগুলোর কোনও কূলকিনারা পাওয়া যায়নি। এমনকী সব ঘটনাই যে ঘটেছে বহু আগে, তেমনও কিন্তু নয়। অনেক আছে বেশ সাম্প্রতিকও। প্রকৃতির অনেককিছুই আসলে রহস্যে ঢাকা। নিজেকে সে আগলে রাখে নানা ধরনের রহস্য দিয়ে। কিছু রহস্যের সমাধান মানুষ করতে পারে। কিছু রহস্য অমীমাংসিতই থেকে যায় আজীবন। আজ তেমনই পাঁচটি রহস্যের কথা রইল আপনাদের জন্যে, যে রহস্যের কোনও সমাধানই করা ওঠা গেল না আজ পর্যন্ত।

সবুজ রঙের ভাই-বোন, কারা তারা?
ঘটনা আজকের নয়। সেই দ্বাদশ শতাব্দীর। ইংল্যান্ডের উলপিট এলাকা। সেখানে হঠাতই একজোড়া ভাই বোনের এসে উদয় হল। অবাক হওয়ার বিষয় হল, এরা সবদিক থেকেই আলাদা। সাধারণ মানুষের মতো ছিল দেখতে ছিল বটে, তবে তাদের গায়ের রং ছিল অস্বাভাবিক সবুজ রঙের। দুই ভাই-বোনের কথাও কেউ বুঝত না। কারণ তারা অজানা এক ভাষায় কথা বলত, পোশাকও ছিল অদ্ভূত। আর খাবার? খেত কেবল কাঁচা শিম। কিছুদিন পরই অবশ্য ভাইটি মারা যায়, বেঁচে থাকে বোন। মেয়েটিকে ধীরেধীরে ইংরেজি ভাষা শেখানো হয়। খাওয়ানো হয় অন্যান্য খাবারও। ধীরে-ধীরে মেয়েটির গায়ের সবুজ রং পরিবর্তন হতে শুরু করে। বাকিদের সে জানায়, দুই ভাই-বোন সেন্ট মার্টিন্স ল্যান্ড থেকে এসেছে। তার কথায়, সেন্ট মার্টিন্স হল মাটির নিচে থাকা এক রাজ্য, যেখানে সবার গায়ের রং সবুজ। অনেকেই তার কথা বিশ্বাস করেনি, বহু বিশেষজ্ঞও এই ভাই-বোনের পুরনো জীবন সম্বন্ধে খোঁজ চালিয়েছিলেন, কিন্তু কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকেই আবার তাদের ভিনগ্রহের প্রাণী বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু রহস্যের কোনও সমাধান হয়নি।
হঠাৎ শুরু নাচ, তারপর মহামারী
এই ঘটনাও বহু পুরনো। ১৫১৮ সাল, জুলাই মাস। ফ্রান্সের স্ট্রসবার্গে মিসেস ত্রোফফেয়া নামের এক নারী হঠাৎ নাচতে শুরু করেন। তারপর সেখানে উপস্থিত সকলেই নাচতে শুরু করেন। কিছুতেই তাদের নাচ থামছিল না। এক সপ্তাহ পর আরও বহু মানুষ সেই নাচের সঙ্গে যোগ দেয়। এক মাস পর শত-শত মানুষ সেই অবিরাম নাচে যোগ দেয়। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন কেউ-কেউ। বাকিরা ফের নাচতে শুরু করেছেন। শহরের তৎকালীন শাসকরা ভাবলেন, এ ভাবে অবিরত নাচতে দিলে নিশ্চয়ই ক্লান্ত হয়ে নাচ থেমে যাবে সকলের। তাই তারা শহরের টাউনহলে সমস্ত মানুষের নাচার ব্যবস্থা করে দিলেন। যাদের মধ্যে ক্লান্তি, হার্ট অ্যাটাক ও উচ্চ রক্তচাপে প্রাণ হারায় প্রায় ৪০০ জন মানুষ। মাসের পর মাস অবিরাম নাচতে থাকা কোনো ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব নয়। কিন্তু কেন শুরু হয়েছিল সেই নাচ, আর পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি। যদিও অনেকে দাবি করেন, বহু দিন ধরে অন্ধকার ও বদ্ধ ঘরে জল আর পাঁউরুটি খাইয়ে রাখার পর বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয় কিছু ব্যক্তিকে। তাদের মধ্যেই এই নাচের ঝোঁক দেখা যায়।

১৯৪১ সালের ছবিতে তিনি, কিন্তু কীভাবে?
দেখে মনে হতে পারে সাধারণ একটি ছবি। কিন্তু না, ভালো করে দেখলে চোখে পড়তে পারে অদ্ভূত ও অস্বাভাবিক কিছু বিষয়। কী তা? ১৯৪১ সালে কানাডার গোল্ড ব্রিজ থেকে একটি ছবি তোলা হয়। সেই ছবিতে আরও অনেকের সঙ্গে ছিলেন একজন ব্যক্তি, কিন্তু তিনি সকলের থেকেই আলাদা। বাকিদের পোশাকের সঙ্গে ওই ব্যক্তির পোশাকের কোনও মিলই নেই। মানে ওই ব্যক্তির পোশাক মোটেই ১৯৪১ সালের মতো নয়, বরং তার পোশাক অনেক বেশি এখনকার মতো। ব্যক্তিটির পরনে ছিল একটি চেন লাগানো হুডি, টি-শার্ট। অবাক করার বিষয় এখানেই শেষ নয়, কারণ ১৯৪১ সালের ওই সময়ে মানুষটির হাতে ছিল একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা! কী করে সম্ভব? ওই ছবির পর ব্যক্তিটিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে রহস্যও।

২৩৯ জন মানুষ, একটা বিমান..কোথায় গেল?
এই ঘটনা কিন্তু একেবারেই সাম্প্রতিক। মানে ২০১৪ সালের। এখনও প্রায় সকলেরই মনে থাকার কথা। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০। ৮ মার্চ, ২০১৪। মালয়েশিয়া থেকে বেইজিং যাচ্ছিল বিমানটি। ছিলেন ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু। বিমানের ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে চালকের শেষ ভয়েস কানেকশন ঘটে টেক অফের এক ঘণ্টা পর এবং তারপরই রাডার থেকে নিখোঁজ হয় কয়েক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে। মালয়েশিয়ার সামরিক রাডারটি প্রায় এক ঘণ্টার পর বিমানটি ট্র্যাক করে যখন আন্দামান সাগর পর্যন্ত রাডারের মধ্যে ছিল বিমানটি। অথচ বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার আগে পর্যন্ত কোনও সংকটের সংকেত, খারাপ আবহাওয়ার সতর্কবাণী বা প্রযুক্তিগত কোন সমস্যার কথা বলাই হয়নি। অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ভারত মহাসাগরেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এই বিমানটি। সেই অনুযায়ী দীর্ঘ অনুসন্ধান চালানো হয়। কিন্তু বিমানের সামান্য কোনও ধ্বংসাবশেষও পাওয়া যায়নি। তাহলে কোথায় গেল বিমানটি? আজও তা জানা যায়নি।

'দ্য হাম'- কিসের আওয়াজ ছিল?
১৯৬০ সাল নাগাদ এই ঘটনা। বিশেষত কানাডা, নিউ ম্যাক্সিকো, স্কটল্যান্ড, নিউ জিল্যান্ড-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনেকেই এক অদ্ভূত শব্দ শুনতে শুরু করেন। অনেকটা যেন গাড়ির ইঞ্জিন চলার মতো শব্দ। এমন সে শব্দ, কানে তুলো গুঁজে রাখলেও শোনা যেত, কিন্তু সব মানুষ সেই আওয়াজ শুনতে পেতেন না। শব্দটির নামকরণ করা হয় দ্য হাম। জানা যায়, শতকরা মাত্র ২ ভাগ মানুষ 'হাম' শুনতে পেতেন। সাধারণত বাড়ির ভিতরে থাকার সময় এবং গভীর রাতে হামের আওয়াজ আরও জোরে শোনা যেত বলে জানিয়েছেন সেই সব মানুষরা। হামের কারণে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা কিংবা অতিপ্রাকৃত ব্যখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বিস্তর। এমনকী পাথরে পরিণত হওয়া হিপ্পিদের কান্না, জনগণের চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে সরকারের কূটকৌশল, মাটির নিচে থাকা ভিনগ্রহীদের যান UFO-এর ইঞ্জিনের শব্দ বলেও অভিহিত করা হয় 'হাম'কে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই শব্দের কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সূত্র : এই সময়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম / ২৩ জুলাই, ২০২০ /ডেস্ক/ মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.