আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দুর্গ না হোটেল!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৬-১৯ ০০:৩৯:৫৭

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি :: পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে নানা ধরনের অসংখ্য হোটেল। এগুলোর কয়টিতেই বা রাত কাটানোর সুযোগ হয়েছে আপনার? কিন্তু ভাবুন তো এমন একটা ঘরে রাত কাটানোর কথা, যেখানে অনেক অনেককাল আগে থরে থরে সাজানো থাকত বন্দুক কিংবা রাত কাটাত সেনারা।

বলছিলাম ইংল্যান্ডের আইল অব ওয়াইট থেকে ১.৪ মাইল এবং পোর্টসমাউথ থেকে এক মাইল দূরে অবস্থিত নোম্যানস ল্যান্ড ফোর্টের কথা। আর এই পুরনো দুর্গকেই রূপান্তরিত করা হয়েছে হোটেলে। এর ২২টি বিলাসবহুল কামরার যেকোনোটিতে ইচ্ছা করলেই রাত কাটানো যায়।

১৮৬১ থেকে ১৮৮০ সালের মধ্যে কোনো একসময়। লর্ড পালমারস্টনের নির্দেশে নির্মাণ করা হয় নো ম্যানস ল্যান্ড ফোর্ট। এই দুর্গ তৈরির পেছনেও আছে এক ইতিহাস। নেপোলিয়ন বোনাপার্টের ভাতিজা লুই নেপোলিয়ন ইংল্যান্ড দখল করে ফেলতে পারে এমন আশঙ্কায় ছিল ইংরেজরা। তাই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে কালো, গোলাকৃতির চারটি দুর্গ বানানো হয়। এই চারটি দুর্গের মধ্যে দুটিরই অবশ্য এখন ভগ্নদশা। আর বাকি দুটির একটি আইল অব ওয়াইটে অবস্থিত, আর অন্যটিই নো ম্যানস ল্যান্ড ফোর্ট। এই দুর্গগুলোর মালিক এখন উদ্যোক্তা মাইক ক্লেয়ার। সাগরের মাঝখানে নির্মিত এ দুর্গটি পড়ে ছিল পরিত্যক্ত অবস্থায়। সম্প্রতি একে রূপান্তরিত করা হয়েছে চমৎকার এক অবকাশযাপনকেন্দ্রে। আর এই হোটেলের পরিকল্পনাও এসেছে মাইকের মাথায়ই।

শুধু থাকার মতো কামরাই নয়, নো ম্যানস ল্যান্ড ফোর্টে গেলে পাবেন ছাদের ওপর হট টাব, হেলিপ্যাড ও স্পা। কামরাগুলো সাজাতে প্রচুর অর্থ খরচ করেছেন মাইক ক্লেয়ার ও তাঁর স্ত্রী। অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে নকশা করেছেন। প্রতিটি কামরা আলাদা থিমে সাজিয়েছেন তাঁরা। বাইরে থেকে হোটেলে অতিথি আনতে রাখা হয়েছে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা। তবে এত কিছু, তা-ও আবার সাগরের ঠিক মাঝখানে—তা পেতে নেহাত কম খরচ হয় না পর্যটকদের। অসম্ভব সুন্দর এই স্থানে সময় কাটাতে গুনতে হবে সর্বনিম্ন ৪৫০ ইউরো। তবে খরচ বেশি বলে কিন্তু মানুষ বসে নেই। ২০১৫ সালের এপ্রিলে পাকাপাকিভাবে হোটেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে নো ম্যানস ল্যান্ড ফোর্ট। তার পর থেকেই পর্যটকরা রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন এখানে রাত কাটাতে। হোটেল বানিয়ে ফেলা হলেও দুর্গের গায়ে যেন পুরনো ইতিহাসের গন্ধ লেগে থাকে, সে ব্যবস্থা করেছেন মাইক ক্লেয়ার। অনেক দেয়াল আগের মতোই রেখে দেওয়া হয়েছে। আর কোন কামরাটা কী কাজে ব্যবহার করা হতো এবং এই দুর্গের ইতিহাস দর্শনার্থীদের জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন