আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে অপেক্ষায় ২২ প্রার্থী, ১৪ লাখ ভোটার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-২৯ ০০:১২:০৯

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে শুক্রবার সকাল ৮টায়। টানা ১৯ দিন বিরামহীনভাবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেরিয়েছেন প্রার্থীরা। এখন অপেক্ষা ভোটের। এ অপেক্ষা শুধু প্রার্থীদের মধ্যে নয়, ভোট প্রযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন হবিগঞ্জে ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৬৭ জন ভোটার।
 
রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। বিরতি ছাড়াই ভোটগ্রহণ চলবে ওইদিন ৪টা পর্যন্ত। ওইদিন জনরায়ের ফলে গঠিত হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নতুন সরকার। যদিও শুরু থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা প্রচারণা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করে আসছিলেন। তবে মহা ধুম-ধামে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন মহাজোটের প্রার্থীরা।

এদিকে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গচ্ছিত আছে যাবতীয় নির্বাচনী সামগ্রী। শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) তা চলে যাবে নির্বাচনী সব কেন্দ্রে।

এছাড়া নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভোটগ্রহণের আগের দিন রাত ১২টা থেকে ভোটগ্রহণের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সি ক্যাব, বেবিট্যাক্সি/অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো, লঞ্চ, ইজিবাইক, ইঞ্জিনবোট ও স্পিডবোটগুলোর চলাচলের ওপর উক্ত নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত ক্ষেত্র বিশেষ আরো অধিককাল মোটরসাইকেল বা অনুরূপ যান চলাচল নিষেধ থাকবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী নিরাপত্তার জন্য সেনা ও নৌবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা মাঠে টহল শুরু করেছে।

নির্বাচনকে ঘিরে জেলা জুড়ে তৈরী করা হয়েছে নিরাপত্তার চাদর। ইতিমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৭শ’ সদস্যের এক ব্রিগেড সেনাবাহিনী। রয়েছে ১শ’ সদস্যের র‌্যাব ও ৫শ’ ৪০ সদস্যের বিজিবি। এছাড়াও নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ৭ হাজার ৫শ’ ৯৬ জন আনসার ও ১৫শ’ পুলিশ। সব মিলিয়ে নির্বাচনে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য করবে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির প্রায় সাড়ে ১০ হাজার সদস্য।

হবিগঞ্জের চারটি আসনে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলায় মোট ভোটার ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৬৭ জন। এর মধ্যে নারী ৭ লাখ ১৫ হাজার ৪শ’ ৭৪ জন এবং পুরুষ ভোটার ৭ লাখ ১০ হাজার ৫শ’ ৯৪ জন।

হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন প্রার্থী। তাঁরা হলে- শাহ্ নেওয়াজ মিলাদ গাজী (আওয়ামী লীগ), ড. রেজা কিবরিয়া (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট), আতিকুর রহমান আতিক (জাতীয় পার্টি), চৌধুরী ফয়সল শোয়েব (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), জুবায়ের আহমেদ (ইসলামি ফ্রন্ট) এবং নূরুল হক (কৃষক শ্রমিক জনতালীগ)। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯শ’ ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮শ’৪৯ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৮৪ হাজার ১শ’২৮ জন।

হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন প্রার্থী। তাঁরা হলে- আব্দুল মজিদ খান (আওয়ামী লীগ), আব্দুল বাছিত আজাদ (খেলাফত মজলিশ), শংকর পাল (জাতীয় পার্টি), আফসার আহমেদ রূপক (স্বতন্ত্র), আবুল জামাল মসউদ হাসান (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ), পরেশ চন্দ্র দাস (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি) এবং মনমোহন দেবনাথ (কৃষক শ্রমিক জনতালীগ)। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬ হাজার ৯শ’ ৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ৭শ’৫২ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৫৪ হাজার ২শ’২০ জন।

হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন প্রার্থী। তাঁরা হলে- মো. আবু জাহির (আওয়ামী লীগ), জি কে গউছ (ঐক্যফ্রন্ট), পীযুষ চক্রবর্তী (সিপিবি) ও মহিব উদ্দিন আহমদ সোহেল (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ)। তবে নির্ধারিত সময়ের পর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় এ আসনের ব্যলটে লাঙ্গল প্রতীক থাকবে। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৬ হাজার ৫শ’ ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬শ’৯৯ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৮শ’৯৪ জন।

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন প্রার্থী। তাঁরা হলে- মাহবুব আলী (আওয়ামী লীগ), আহমদ আব্দুল কাদির (খেলাফত মজলিশ), আনছারুল হক (জাকের পার্টি), সামছুল আলম (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ) ও সুলাইমান খান (ইসলামি ফ্রন্ট)। তবে নির্ধারিত সময়ের পর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় এ আসনের ব্যলটে লাঙ্গল প্রতীক থাকবে। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ২৭ হাজার ৫শ’ ২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৩ হাজার ২শ’৯৪ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ২শ’৩১ জন।

এ ব্যাপারে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদুল কবির মুরাদ জানান- শুক্রবার সকাল ৮টায় প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। এই মুহূর্ত পর্যন্ত যত প্রস্তুতি দরকার, সেটা আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি। নির্বাচনী সামগ্রীসহ ব্যালট পেপার আমাদের কাছে পৌঁছে গেছে। তাছাড়া নির্বাচনের দ্বায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণসহ কেন্দ্র বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৮ ডিসেম্বর ২০১৮/কেএস/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন