আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জ পৌর উপ-নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে আ.লীগে অসন্তুষ্টি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২৬ ১৬:৪৫:৪৫

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন (নৌকা) পেয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান। আজ রবিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তিনি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেন।

মিজানুর রহমান মিজানের দলীয় মনোনয় পাওয়া নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। অনেক নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন। শুধু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীই নয়, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও।

মিজানুর রহমান গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। এর ফলে এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাঈদুর রহমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘খুব জানতে ইচ্ছে করে!!! হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত কি আদর্শিক কোনো সিদ্ধান্ত হল??? প্রিয় নেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা বলেছিলেন ২০৪১ সালে আওয়ামী লীগকে ছাত্রলীগের হাতে তুলে দিবেন। তার মানে এই যে তখন অসংখ্য সাবেক ছাত্রনেতা থাকবে, কিন্তু হবিগঞ্জ পৌর নির্বাচনে যাকে সিলেক্ট করা হয়েছে উনার বিরুদ্ধে আমার কোনো বক্তব্য নয়। তবে গত নির্বাচনে উনি নৌকার বিরুদ্ধে ইলেকশন করেছেন, দল থেকে বহিষ্কারও হয়েছেন। প্রিয় নেত্রীর অনেক বক্তব্যে শুনেছি যারা নৌকার বিরুদ্ধে যায় তারা কোনো আদর্শিক কর্মী হতে পারে না তবে কেন হবিগঞ্জ পৌর নির্বাচনে আদর্শের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত আসলো, যদি সিদ্ধান্তই আদর্শের বিরুদ্ধে যায় তাহলে কর্মীদের কি করা উচিত? প্রিয় নেত্রী কি আসলেই বিষয়টা নিয়ে অবগত ছিলেন? আমার মনে হয় নেত্রী জেনে শুনে কখনোই এমন সিদ্ধান্ত নিবেন না।’

মেহেদি হাসান ফাহিম নামে এক যুবক সেখানে মন্তব্য করেছেন, ‘বেঈমানির পুরস্কার যদি এই হয় তাহলে আসুন দেখি আগামীতে কে কতো বেঈমানি করতে পারেন...এমন যদি হয় তাহলে এখন থেকে আমি নামধারী আওয়ামী লীগ....।’

নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল হাসান ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদটি আমার মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ নিতে চায়নি। তাই এমন অযোগ্য প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে। যে কিনা বিগত দিনে কমিশনার পদে বিপুল ভোটে ফেল করেছিল, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে করে নৌকাকে পরাজিত করতে বিশাল ভূমিকা রেখেছিল, তাকে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরো লিখেছেন, ‘রাজনীতির নামে তামাশা শুরু হচ্ছে, এই সব দেখার কেউ নাই। আমাদের উচিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভানেত্রীকে বিষয়টা ভালোভাবে অবগত করা তাহলে থলের বিড়াল বের হবে।’

জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নাজমুল ইসলাম লিখেছেন, ‘নৌকা পাবে একজন, মেয়র হবে আরো একজন, এবার খেলা হবে।’

সেখানে পৌর আওয়ামী লীগ নেতা ফজলে রাব্বি রাসেল মন্তব্য করেছেন, ‘সুদখোর সমাজের কীট, আর দলে সে তো নতুন বটে, আবার বহিষ্কার হওয়া দলীয় বেঈমান, এদেরকে ডুবানোই হবে সচেতন পৌরবাসীর কাজ।’

উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ পৌরসভার বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকা ও ধানের শীষের বিপরীতে নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে লড়েছিলেন মিজানুর রহমান মিজান। এ সময় তিনি মাত্র ১২শ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেও চমক সৃষ্টি করেন।

প্রসঙ্গত, হবিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র জি কে গউছ পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর ফলে এই পৌরসভায় মেয়র পদটি শুন্য হয়। আগামী ২৪ জুন হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৬ মে ২০১৯/ কেএস/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন