Sylhet View 24 PRINT

সাতছড়ি উদ্যানে পর্যটকের ঢল, অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-০৭ ১২:৫১:৩৭

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ :: ঈদ মানে খুশি। আর সেই খুশিকে দ্বিগুণ করে নিতে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই ছুটে চলে কাছে কিংবা দূরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। ঈদের ছুটিতে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে হবিগঞ্জের ‘সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান’ এ নামে ভ্রমণপ্রেমী মানুষের ঢল। ঈদের দিন সারাদিন বৃষ্টি হলেও সেখানে টিকিট বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার টাকার। আর ঈদের ছুটিতে এর পরিমাণ বেড়ে ৫ লাখ ছাড়াবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উদ্যানের ভেতরের অব্যবস্থাপনা আর ট্রি এডভ্যাঞ্চার পরিত্যক্ত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে ঈদের আগ মূহূর্তে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় উদ্যানের পরিবেশ কিছুটা খারাপ হয়ে পড়েছে। একই সাথে ট্রি এডভ্যাঞ্চার মেরামত করা সম্ভব হয়নি।

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার অবস্থিত রঘুনন্দর পাহাড়েরর সাতটি ছড়া থেকে মূলত নামকরণ করা হয়েছে ‘সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান’। সুবজ প্রকৃতি আর বন্য প্রাণীদের দেখতে দর্শনার্থী ছুটে আসেন এখানে।

ঈদের দ্বিতীয় দিনে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেলযোগে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। দর্শনার্থীদের পদচারণা আর নানা রকম পাখ-পাখালির শব্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে উদ্যোনের চারপাশ। কেউ কেউ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ছবি ও সেলফি তুলতে। শুধু উদ্যোনের ভেতরেই নয়, পাশের সবুজ চা বাগানগুলোতেও অনেক দর্শনার্থী ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। স্মৃতি রাখার জন্য পরিবার পরিজনের সঙ্গে বন্ধি হয়েছেন এক ফ্রেমে। আর সোশ্যাল মিডিয়াকে কাপাতে তুলেছেন সেলফি।

ঈদের দ্বিতীয় দিনে কোন বৃষ্টি না হলেও ঈদের দিন দিনভর কখনো হালকা আবার কখনো ভারিভর্ষণ হয়েছে। কিন্তু এই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দর্শনার্থীর ঢল নামে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে। ওই দিন এই উদ্যান থেকে ৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ঈদে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের জন্য খোলে দেয়া হয়েছে উদ্যোনের পুরাতন গেটও (বর্তমানে যেটি পরিত্যক্ত)। অন্যসময় একটি গেল থেকে রাজস্ব আদায় করা হলেও ঈদ উপলক্ষে উদ্যানের তিনটি গেট থেকে রাজস্ব আদায় করছে কর্তৃপক্ষ।

অপরদিকে, পর্যটকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে নির্মিত ট্রি এডভ্যাঞ্চারটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ অজুহাতে বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তরুণ দর্শনার্থীরা।

এ ব্যাপারে মাধবপুর থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী মো. ফয়জ মিয়া বলেন- ‘ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসার জন্য কাছের মনোরম পর্যটন স্পট সাতছড়ি উদ্যান। তাই সুযোগ পেলেই এখানে আসি। কিন্তু এখানের প্রাকৃতিক দৃশ্য অপরূপ হলেও পরিবেশ অনেকটা খারাপ।’

তিনি বলেন- বিষয়টি নিয়ে সব সময় অভিযোগ করে আসলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এছাড়া এখানে পর্যটকদের খাওয়া দাওয়ারও কোন সু-ব্যবস্থা নেই। নেই নিরাপদ পানির ব্যবস্থাও।

বানিয়াচং উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা তরুণ রুবেল দাস বলেন- ‘এখানে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এছাড়া আমরা যারা তরুণরা রয়েছি তাদের সব চেয়ে বেশি পছন্দ ট্রি এডভ্যাঞ্চার। যেটিতে ছড়ব বলে এসেছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে পরিত্যক্ত করে রেখেছে।’

তিনি বলেন- ‘কর্তৃপক্ষের উচিত ছিলো ঈদের পূর্বে এটি মেরামত করা এবং পর্যটকদের নিরাত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা।’
মাধবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হাসান আকাশ পরিবার-পরিজন নিয়ে সাতছড়ি উদ্যানে ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন- ‘এখানে পর্যটকদের কোন নিরাপত্তা নেই। এছাড়া খাওয়া-দাওয়ার কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। এমনকি নিরাপদ পানি পর্যন্ত নেই এখানে। যা সত্যি দুঃখজনক।’

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বলেন- ‘পর্যটকদের সব ধরণের সুয়োগ-সুবিধার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। এছাড়া দর্শনার্থীদের নিরাপদ পানির জন্য এখানে একটি গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে।’

ট্রি এডভ্যাঞ্চার পরিত্যক্ত রাখার বিষয়ে তিনি বলেন- ‘দীর্ঘদিন ধরে এটি মেরামত না করায় বর্তমানে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঈদের আগে টাকা কয়েকদিন বৃষ্টি থাকায় এটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৭ জুন ২০১৯/কেএস/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.