আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে মোবাইল বিস্ফোরণে কিশোর নিহত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১৩ ১১:২৮:৩৪

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জের বাহুবলে চার্জ করতে গিয়ে মোবাইল ফোন বিস্ফোরণে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার উপজেলার পটিজুরী ইউনিয়নের চকগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু সাজু মিয়া (১২) ওই গ্রামের জালাল মিয়ার ছেলে।

দুপুরের দিকে মোবাইল ফোন চার্জে লাগিয়ে সাজু নিজের পড়নের শার্টের পকেটে ফোনটি রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর মোবাইলটি অতিরিক্ত চার্জ হয়ে বিস্ফোরিত হলে সাজু মিয়া মারা যায়। মোবাইল ফোনটি বিস্ফোরিত হওয়ার কারণে তার বুকের বাম পার্শ্বে ঝলসে গেছে। তবে সেটি কি মোবাইল ছিল জানা যায়নি। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মো. তারা মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ফেনীতে মোবাইলের ব্যাটারি বিস্ফোরণে স্বপ্নীল মজুমদার (১৭) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

নিহত স্বপ্নীল মজুমদার ফেনীর চাড়ীপুর এলাকার সুমন মজুমদারের ছেলে। সে ঢাকা আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল।

বিস্ফোরণের কারণ কি?
মোবাইল ফোন কেন বিস্ফোরিত হয়? এ প্রশ্নের জবাবে মোবাইল ফোন কোম্পানি সিম্ফনির কোয়ালিটি কন্ট্রোলার কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন, সাধারণত আমরা যে রিপোর্টগুলো পাই, তা হলো, মোবাইল ফোন চার্জ দেয়া অবস্থায় কথা বলার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। আর বিস্ফোরিত হয় ব্যাটারি। কারণ মোবাইল ফোনে ব্যাটারিই একমাত্র বিস্ফোরকের মতো। মোবাইল ফোনের ব্যাটারি যখন চার্জ হয় সে পাওয়ার কনজিউম করে। একই সময়ে যদি ওই ফোন দিয়ে কথাও বলা হয় তাহলে পাওয়ার কনজাম্পশন আরও বেড়ে যায়। ফলে ব্যাটারি সাধারণ মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয় এবং বিস্ফোরিত হতে পারে।

তিনি বলেন, এর বাইরে আমরা মনে করি সাধারণত তিন কারণে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি বিস্ফোরিত হতে পারে। ম্যাটেরিয়াল, কন্ট্রোল এবং শর্টসার্কিট।

প্রথমত, ব্যাটারি যদি নিম্নমানের হয় তাহলে চার্জের সময় সে প্রচুর হিট কনজিউম করে গরম হয়ে বিস্ফোরিত হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, ব্যাটারিতে টেম্পারেচার কন্ট্রোল সার্কিটসহ আরও কিছু সার্কিট এবং কন্ট্রোল মোড ব্যবহার করা হয়। এগুলো যদি ঠিকভাবে কার্যকর না থাকে তাহলেও বিস্ফোরিত হতে পারে।

তৃতীয়ত, যেসব ব্যাটারি হ্যান্ড সেট থেকে খোলা যায়না সেসব ব্যাটারির কানেকশন পয়েন্টে শর্টসার্কিট হয়ে বিস্ফোরিত হতে পারে।

তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তানভীর জোহা বলেন, এ বিস্ফোরণের ঘটনা শুধু মোবাইল ফোন নয়, ল্যাপটপের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। আর এটা প্রধানত নিম্নমানের জন্যই ঘটে থাকে।

মাদারবোর্ডের বিভিন্ন ধরনের ক্যাপাসিটর এবং প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোলার (পিএলসি) কিট থাকে। এ কিটগুলোর সঙ্গে পাওয়ারে সিঙ্গেক্রানাইজেশন না থাকলেই সাধারণত বিস্ফোরণ ঘটে। এটা উৎপাদনের ত্রুটি।

তিনি বলেন, চার্জারে কানেকশন দিয়ে একই সঙ্গে কথা বলা বা অনলাইনে কাজ করলে মাদার বোর্ড, আইসি প্রভৃতি দিক দিয়ে অনেক বেশি তাপ উৎপাদন হবে। তখন প্রচ- তাপে বিস্ফোরণের ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়।

এ বিস্ফোরণের সময় পুরো ডিভাইসটিই শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরকে পরিণত হয়। বেশিরভাগ বিস্ফোরণ যেহেতু কথা বলার সময় হয় তাই মুখম-লই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এটা চার্জ দেয়ার সময় ছাড়াও বিস্ফোরিত হতে পারে।

পরামর্শ : ভালো মানের ফোন বা ল্যাপটপ কেনা, ফোন বা ডিভাইস বন্ধ করে চার্জ দেয়া, চার্জ দেয়া অবস্থায় ব্যবহার না করা। এছাড়া যদি চার্জ দেয়ার সময় বা ব্যবহারের সময় সাধারণ মাত্রার চেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয় তাহলে তার ব্যবহার বন্ধ করে দ্রুত সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩ জুন ২০১৯/কেএস/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন