আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সফল বানিয়াচংয়ের মুছা মিয়া

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১৯ ১১:২৮:৪৫

জসিম উদ্দিন, বানিয়াচং :: টমেটো খুবই জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু সবজি। সারা বছর টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আবহাওয়াগত কারণে সাধারণত এই সবজিটি আমাদের দেশে শুধু শীতকালে চাষ করা হয়ে থাকে। তাই বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মধ্যে এর প্রাপ্তিকাল শুধুমাত্র শীতকালের কয়েকটি মাস।

কিন্তু সারা বছর টমেটোর চাহিদা থাকায় গ্রীষ্মকালে স্থানীয় বাজারে টমেটোর যোগান দিয়ে এলাকার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন বানিয়াচংয়ের মুছা মিয়া।

সিলেট অঞ্চল বৃষ্টিবহুল হওয়ায় এখানে গ্রীষ্ম বা বর্ষাকালে টমেটো চাষ বেশ কষ্টকর। কিন্তু এই অসাধ্যকে সাধন করেছেন বানিয়াচং উপজেলার ২ নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের শেখের মহল্লার সফল টমেটো চাষী মুছা মিয়া। বৃহস্পতিবার সরেজমিন মুছা মিয়ার টমেটো বাগান ঘুরে দেখা যায়, জমিতে উঁচু বেড তৈরি করে এবছর ১৮ শতক জায়গায় ১ হাজার টমেটো চারা রোপন করেন তিনি গত এপ্রিল মাসে। তাছাড়া বৃষ্টির কবল থেকে চারা বাঁচানোর জন্য উপরে পলিথিনের শেড দিয়েছেন। গত জুনের মাঝামাঝি জমি থেকে পাকা টমেটো তুলছেন মুছা মিয়া। আগামী অক্টোবর মাস পর্যন্ত টমেটো উৎপাদন চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বর্তমানে ৫০ কেজি করে সপ্তাহে দুই দিন একশ কেজি টমেটো তুলছেন মুছা মিয়া। ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে টমেটো পাইকারি বিক্রি করছেন। আর খুচরা বাজারে বিক্রেতারা বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ১২০-১৩০ টাকায়। ১৮ শতক জায়গায় টমেটো উৎপাদনে খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা। আর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

কিভাবে এই টমেটো চাষে আগ্রহী হলেন জানতে চাইলে তিনি জানান, ৭-৮ বছর আগে তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জে এক কৃষকের ক্ষেতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর ফলন দেখে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ওই কৃষকের কাছে সহায়তা চাইলে তিনি নিরুৎসাহিত করেন। এ থেকে একধরনের জেদ চেপে বসে মুছা মিয়ার মাঝে। তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহাতায় টমেটো চাষে নেমে পড়েন। শুরুতে কয়েকবার ব্যর্থ হলেও কয়েকবছর যাবৎ সফলতার মুখ দেখছেন তিনি

জানা যায়, সারা বছর দেশে টমেটোর চাহিদা, জনগণের পুষ্টিমান, কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ সিলেট অঞ্চলের জন্য চাষোপযোগী টমেটোর জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করেছে।

বানিয়াচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দুলাল উদ্দিন সিলেটভিউকে বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে বানিয়াচংয়ের মত এলাকায় টমেটো চাষ করা খুবই কঠিন ব্যাপার। কিন্তু আমাদের পরামর্শ আর মুছা মিয়ার অধ্যাবসায় তাকে এই সফলতা এনে দিয়েছে। আমরা আশা করছি এলাকায় গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অধিক মুনাফা অর্জনে মুছা মিয়ার মত আরও অনেকই এই উদ্যোগ নিবেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ জুলাই ২০১৯/জেইউ/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন