আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দুই বছর ধরে ডাক্তার আসেন না,সেবা বঞ্চিত সাধারণ মানুষ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-২১ ১৮:০৫:৫৩

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: সরকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও দক্ষ জনবল ও কর্মকর্তাদের দ্বায়িত্বহীনতার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার সুফল পাচ্ছে না। এর বাস্তব চিত্রের দেখা মিলেছে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার ১নং ইউনিয়নের উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একটি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মেডিকেল অফিসার, একজন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন এমএলএসএস এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন এফডাব্লিউভি ও একজন আয়া দায়িত্ব পালন করার কথা। অথচ লাখাই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাগজে কলমে কর্মরত রয়েছেন মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার। তাও গত দুই বছর যাবৎ তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন ওই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।

সরেজমিনে জানা যায়, লাখাই উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন ডা. নাহিদ চৌধুরী সুমন। কিন্তু ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দুই বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। তাঁর স্থলে সপ্তাহে দুইদিন রোগী দেখেন লাখাই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিকেল অফিসার অমল চন্দ্র মোদক।

তিনি জানান- তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন বামৈ ইউনিয়নের উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। বর্তমানে উপজেলার দুইটি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একমাত্র চিকিৎসক তিনি। যার কারণে লাখাই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সপ্তাহে দুই দিনের বেশি রোগী দেখা সম্ভব হয় না।

ভোক্তভুগিদের অভিযোগ- সপ্তাহে ১/২ দিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি খোলা হয়। তাছাড়া যিনি সপ্তাহে ১/২ দিন রোগী দেখেন তিনিও ১/২ ঘন্টা বসে চলে যান। যার ফলে তিনি কখন আসছেন বা চলে যান তা তাঁরা (স্থানীয়রা) জানেনও না। আবার ঠিক মতো ঔষধও পাওয়া যায় না সেখান থেকে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েল মিয়া অভিযোগ করে বলেন- ‘ঠিক মতো ঔষধ বা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে গত দুই বছর ধরে আমরা বঞ্চিত রয়েছি। সপ্তাহে ১/২ দিন এখানে একজন ডাক্তার আসেন। কিন্তু ১/২ ঘন্টা বসে তিনিও চলে যান।’

উৎপল দাস নামে অন্য একজন বলেন- ‘এখানে যে একটি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র আছে তা অনেকেই জানেন না। অনেকে মনে করেন এটা কোন পরিত্যক্ত ভবন।’

তিনি বলেন- ‘বর্ষা মৌসুমে নানা রকম পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এ এলাকার লোকজন। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা তাঁরা পাচ্ছে না। আবার অনেকের সামর্থ্য নেই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানোর।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুঠোফোেেন কথা হয় লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাসুমে সাথে। তিনি জানান, লাখাই উপজেলার মধ্যেই অবস্থিত দুইটি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে লোকবলের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। সরকারিভাবে কম জনবল নিয়োগসহ নানা প্রতিকূলতার কথাও জানান তিনি।

ডা. নাহিদ চৌধুরী সুমনের কর্মস্থলে না যাওয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘দীর্ঘদিন যাবত তিনি কর্মস্থলে যান না। বিষয়টি আমাদের জানা আছে। এ ব্যাপারে তাকে একাধিক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে ডিজি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শিঘ্রীই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

আশ্বাস প্রদান করে তিনি বলেন- ‘অচিরেই এই পদটি শুন্য ঘোষণা করে নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে ডা. নাহিদ চৌধুরী সুমনের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১ জুলাই ২০১৯/কেএস/গআচ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন