Sylhet View 24 PRINT

যুক্তরাজ্যে প্রতারক মোহাম্মদ আলীকে ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৮-৩০ ১৪:৪১:৫১

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :: আদালতের রায়ে দীর্ঘ ৫ বছর আইনী জটিলতার পর যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম সিটির আলোচিত একটি মামলায় গাড়ীর ব্যক্তিগত নাম্বার প্লেইট ফিরে ফেলেন এনটিভি ইউরোপ ব্যুরো চীফ বিশিষ্ট সাংবাদিক ফারছু আহমেদ চৌধুরী।

যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম সিটির এক বিতর্কিত ব্যাক্তি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাংবাদিক ফারছূ আহম্মেদ চৌধুরীর সামাজিক অবস্থান ক্ষুন্ন করতে তার গাড়ীর ব্যক্তিগত নাম্বার প্লেইটটি প্লেইট F4RSU নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন। বিষয়টি শুধু যুক্তরাজ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এর রেশ পড়ে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশী গোয়েন্দা সংস্থাও এ বিষয়ে একাধিকবার তদন্ত করেছে।

অবশেষে সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আদালতের মাধ্যমে নিজেরে অধিকার প্রতিষ্টিত করলেন ফারছু আহম্মেদ চৌধুরী।

গত ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম সিটির কাউন্টি কোর্ট বিতর্কিত ঐ ব্যাক্তিকে ফারছু আহম্মেদ চৌধুরীকে নাম্বার প্লেইট F4RSU ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ১২ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৫ লক্ষ টাকা) জরিমানা ও ডিবিএল (যুক্তরাজ্যের পরিবহন সংস্থা) কে রেজিস্ট্রেশন মার্ক যুক্তরাজ্যের সিকে ইন্টারন্যাশনাল লিংক লিমিটেড অথবা নমিনী ফারছু আহমেদ চৌধুরীর নামে রেজিস্ট্রেশন করতে মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, বার্মিংহামে বসবাসকারী যুবক মোহাম্মদ আলী ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৫৯৯ পাউন্ড দিয়ে ডিবিএল থেকে F4RSU রেজিস্ট্রেশন মার্কটি ক্রয় করে। পরে ফারছু আহমেদ চৌধুরীর কাছে এই নাম্বার প্লেইটটি বিক্রি করতে চায় মোহাম্মদ আলী ওরফে রাশিদ উদ্দিন। ফারছু নামের নাম্বার প্লেইটটি মোহাম্মদ আলী ওরফে রাশিদ উদ্দিনের ক্রয় করার মূল কারণ ছিলো ফারছু চৌধুরীর সাথে বিক্রির নামে প্রতারণা করা।

মোহাম্মদ আলী ফারছু চৌধুরী কে এই নাম্বার প্লেইটটি ক্রয় করার জন্য অনেক অনুরোধ করে। পরে ফারছু চৌধুরী ২০১৫ সালের ৩ জুন F4RSU নাম্বার প্লেটটি ক্রয় করেন। এদিকে সুচতুর মোহাম্মদ আলী নাম্বার প্লেইটটি বিক্রি করার সময় দুটি ঠিকানা ব্যবহার করে। একটি হলো বজলী গ্রীন এলাকার ফ্লাট নং ১৯, হফ ব্যককোর্ট বি ৯ (মোহাম্মদ আলীর বর্তমান ঠিকানা) আর অন্যটি স্মল হিথ এলাকার ওল্ডনোও রোডের ডোর নাম্বার ১৬৪।
নাম্বার প্লেইট বিক্রি করার সময় সে ডিবিএল কর্তৃক ভি ৭৫০ সার্টিফিকেট তার ওল্ডনোও রোড ঠিকানা ব্যবহার করে। দুইটি ঠিকানায় তার কাছে একই নাম্বার প্লেইটের দুইটি ভি ৭৫০ সার্টিফিকেট ছিলো।

ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে ফারছু চৌধুরীর নিকট সে তার পুরানো ঠিকানায় ডিবিএল ভি ৭৫০ সার্টিফকেট নিজ হাতে স্বাক্ষর করে ৬০০ পাউন্ড গ্রহণ করে।

ফারছু আহমেদ চৌধুরী তার নিজ গাড়িতে ব্যবহার করার অনুমতির জন্য মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষর করা সার্টিফিকেটটি ডিবিএল কে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠায়। তখনি ধরা পরে মোহাম্মদ আলীর পাতানো ষড়যন্ত্র। ডিবিএল অনুমতি না দিয়ে মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা বলতে চায় এবং এই ভি ৭৫০ ডকুমেন্ট আসল নয় মর্মে জানায় ডিবিএল। কারণ মোহাম্মদ আলী ইতিপূর্বে তার নতুন ঠিকানায় ডিবিএল থেকে আরো একটি ভি ৭৫০ তুলে রাখে। মোহাম্মদ আলীর সাথে ফারছু আহমেদ চৌধুরী যোগাযোগ করলে সে বিভিন্ন অযুহাত ও টালবাহানা শুরু করে। এতে ফারছু চৌধুরীর নিকট তার প্রতারণা ধরা পরে। ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে ফারছু চৌধুরী যুক্তরাজ্যে বাংলা টাইগার নামে পরিচিত বার্মিংহাম হামষ্টেড ল প্রাকটিস এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সিলেট বিশ্বনাথের কৃতি সন্তান ব্যারিস্টার সাম উদ্দিনের সাথে বিষয়টি পরামর্শ করে আইনি দিক দেখার জন্য তাকে নিয়োগ করেন। ব্যারিস্টার সাম উদ্দিন ডিবিএল এর সাথে যোগযোগ শুরু করলে এক পর্যায়ে ফারছু আহমেদ চৌধুরীর নামে নাম্বার প্লেইট বরাদ্ধ দেয় ডিবিএল। ব্যবহার শুরু করলে ১৭ মাস পরে মোহাম্মদ আলীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ১২ মার্চ ফারছু আহমেদ চৌধুরীর গাড়ি থেকে ডিবিএল নাম্বার প্লেইটটি বাতিল করে মোহাম্মদ আলীর নামে বরাদ্ধ করে ডিবিএল।

মোহাম্মদ আলী তার স্ত্রীর গাড়িতে ফারছু রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার শুরু করে। এ সময় মোহাম্মদ আলী যুক্তরাজ্যের অপরাধ সংস্থা এ্যাকশন ফ্রন্টের মাধ্যমে ডিবিএলের নিকট ফারছুর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের আবেদন জানালে। এ প্রেক্ষিতে ডিবিএল বিষয়টি তদন্তের জন্য বাংলাদেশে প্রেরন করলে গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পেশ করে। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ব্যারিস্টার সাম উদ্দিন বার্মিংহাম কাউন্টি কোর্টে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি ৪ দফায় শুনানি শেষে গত ১৩ আগস্ট কাউন্টি কোর্টে রায় ঘোষণা হয়। আদালত নাম্বার প্লেইটটি ফারছু আহমেদ চৌধুরীর নামে নিবন্ধনের জন্য ডিভিএলকে আদেশ প্রধান করেন এবং মোহাম্মদ আলীকে ১২ হাজার পাউন্ড জরিমানা করেন। বিষয়টি যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে ব্যাপক আলোরণ সৃষ্টি করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এ বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সাথে তদন্ত করায় ফারছু চৌধুরীর ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়।

উল্লেখ্য, ফারছু আহম্মেদ চৌধুরী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ফুটারমাটি গ্রামের মরহুম শামসুল হক চৌধুরীর পুত্র। যুক্তরাজ্যের বাঙ্গালী কমিউনিটির প্রিয়মূখ কৃতি সাংবাদিক ফারছু আহম্মেদ চৌধুরী ২০০৯ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। দেশে থাকাকালীন তিনি হবিগঞ্জের স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩০ আগস্ট ২০১৯/এসএমএএইচ/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.