Sylhet View 24 PRINT

নবীগঞ্জে শেষ হলো সরকারি ধান ক্রয়ের কার্যক্রম, বঞ্চিত হলো কৃষক

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-১৭ ০৯:২৭:২৭

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:: নবীগঞ্জ উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শেষ হলো সরকারি ধান ক্রয়ের কার্যক্রম। ফলে উপজেলার প্রকৃত কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যদিও সরকারী গোদামে ধান দিতে কৃষকদের কার্ড ব্যবহার হয়েছে, তবে প্রকৃত কৃষকদের ধান নেয়া হয়নি। এতে সাধারণ কৃষকদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ ও খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কৃষকের পরিবর্তে ধান দিয়েছেন। এতে রাজনৈতিক নেতা ও সরকারী কর্মকর্তারা লাভবান হলেও কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত রবিাবার ছিল নবীগঞ্জ উপজেলায় সরকারী ভাবে ধান সংগ্রহের শেষ দিন। ১ হাজার ৪’শ মেঃ টন ধান ক্রয় করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্য গোদাম কর্মকর্তা। সকাল থেকেই নবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায় ট্রাক ও ট্রাক্টর (বড় ট্রলি) দিয়ে খাদ্য গুদামে ধান ঢুকাচ্ছেন রাজনৈতিক সিন্ডিকেটরা। এ সময় গোদামের সামনের রাস্তায় ধান বোঝাই ট্রাকের দীর্ঘ লাইন দেখা গেলেও প্রকৃত কৃষকদের খোজে পাওয়া যায়নি। এখানে সরকারী দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দেখা যায়। এছাড়াও কয়েকটি ট্রাক্টর থেকে ধান গুদামে ঢুকানো হচ্ছে। এ সময় সেখানে কোন কৃষক উপস্থিত ছিল না। ট্রাক্টর বোঝাই ধানগুলোর মালিক কে জানতে চাইলে, ধান গুদামে ঢোকানোর কাজে নিয়োজিত লেবাররা জানায় এগুলো কৃষকের। এতগুলো ধানের বস্তা কিন্তু কৃষক কোথায় জানতে চাইলে লেবাররা সদুত্তর দিতে পারেনি। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, খাদ্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক সিন্ডিকেটটি কৃষকের পরিবর্তে অবাধে গুদামে ধান ঢোকাচ্ছে। ফলে প্রকৃত কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান দেয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রনালয় থেকে নতুন করে এ উপজেলায় ১ হাজার ৪’শ মেঃ টন ধান সংগ্রহের বরাদ্দ দেয়া হয়। এ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ধান বন্টন করে বরাদ্ধ দেয়া হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকদের নামের তালিকা জমা দেয়া হয়।

এ তালিকা নিয়ে উপজেলা ধান সংগ্রহ কমিটি লটারির মাধ্যমে ১ হাজার ৪শত মেঃ টন ধানের বিপরীতে কৃষকের নামের তালিকা তৈরি করেন। সেখানে লোক দেখানো লটারির আয়োজন করা হলেও ভিতরে চলতে থাকে নানা নাটকিয়তা। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা জানান, প্রকৃত কৃষকরাই ধান দিয়েছেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান নেয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন। ১ হাজার ৪শ মেঃ টন ধানের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন প্রকৃত কৃষক গোদামে ধান নিয়ে গেলেও রাজনৈতিক নেতা ও কর্তা ব্যক্তিদের নজরানা দিতে হয়েছে।

রাজনৈতিক সিন্ডিকেট এবং তদবীরের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোদাম কর্মকর্তা মোটা অংকের অর্থ কামাই কছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বাজারে ধানের ন্যায্য মুল্য না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে হতাশা দেখা দেয়। এই বিবেচনায় সরকার প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে সরকারী মুল্য প্রতি মন ১ হাজার ৪০ টাকা ধরে ধান সংগ্রহ অভিযান কার্যক্রম শুরু করেন। সরকারের এ উদ্যোগে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটে উঠে। কিন্তু সরকারী গোদামে ধান দিতে না পারায় হতাশা নেমে আসে।


সি‌লেট‌ভিউ২৪ডটকম/১৭‌ সে‌প্টেম্বর ২০১৯/এএইচ/মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.