আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

একশ বছর আগের নদীগুলোও খুঁজে বের করে উদ্ধার করা হবে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০১-১৮ ০০:২৮:২৭

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: দখলদারদের খবলে পরে হারিয়ে যাওয়া একশ’ বছর আগের নদীগুলোও খোঁজে বের করে উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন’র চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমনা হাওলাদার।

শুক্রবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘নদী রক্ষায় নাগরিক সংলাপ’ মির্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন- সারাদেশের নদ-নদী রক্ষা জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশিন’। চলমান উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ১০০ বছর আগের নদীগুলো কোথায় ছিল তা বের করে ফেলব। ‘স্পেস রিসার্স অর্গানাজেশন’র বিজ্ঞানীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চ্যাটেলাইটের মাধ্যমে কোথায় কোথায় নদী ছিল তা বের করে ফেলবেন। সুতরাং কোথায় নদী ছিল তা স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে হবে না।’

মুজিবুর রহমনা হাওলাদার বলেন- ‘ইতোমধ্যে আমরা সারাদেশের ৪৯ হাজার ১৬২ জন অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করেছি। আগামী এক বছরের মধ্যে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি কোন জেলা প্রশাসন উচ্ছেধে ব্যর্থ হন তাহলে তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন- ‘নদী রক্ষা কমিশনকে আরও শক্তিশালি করতে মহামান্য হাইকোর্টকে আহবান জানানো হয়েছে। যদি আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করা হয় তাহলে আমরা ডিসিরদের জন্য অপেক্ষা করব না। নিজেরাই সারাদেশে উচ্ছেদ অভিযানে নামব।’

মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে তিনি বলেন- ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা নদীর জায়গায় দখলে আছেন। জেলা প্রশাসন নাকি তাদেরকে বন্দোবস্ত দিয়েছে। অথচ স্বয়ং রাষ্ট্রপতিও নদীর জায়গা কাউকে বন্দোবস্ত দেয়ার নিয়ম নেই। তাহলে জেলা প্রশাসন কিভাবে নদীর জায়গা মুক্তিযোদ্ধাদের বন্দোবস্ত দিয়েছে তার জবাবদিহিতা করতে হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জেলা-উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারিভাবে জায়গা দেয়া হচ্ছে। সুতরাং নদীর জায়গা তাদেরকেও ছাড়তে হবে।’

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন- ‘অনেক চতুর প্রভাবশালী রয়েছে, যারা প্রথমে নদীর পাড়ে হত দরিদ্রদের আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন। পরে সময়-সুযোগ বুঝে বিভিন্নভাবে তারা ওই জায়গাটি দখল করে নেন। সুতরায় সে বিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। দরিদ্র ভূমিহীনদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তাহলে কেন তারা নদী দখল করে বসবাস করবেন। তাদের সঠিক তালিকা সংগ্রহ করে অন্যত্র পূণরবাসনের ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।’

এ সময় তিনি হবিগঞ্জের পুরাতন খোয়াই নদীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ‘ঝিলমিল প্রকল্প’র বিষয়ে নদী রক্ষা কমিশনকে না জানানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে তিনি খোয়াই নদীর বিভিন্ন অংশ পায়ে হেটে পরিদর্শন করেন। এ সময় বিভিন্ন পরিবেশবাদি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন অমিতাব পরাগ তালুকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈলেন চাকমা, জেলা পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএম সৌকত।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলের পরিচালনায় সংলাপে নদী রক্ষায় নিজেদের পরামর্শ তুলে ধরেন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মী ও শিক্ষার্থীরা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ জানুয়ারি ২০২০/কেএস/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন