আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বানিয়াচংয়ে সূর্যমুখী ফুলচাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-০৩ ১০:১০:১৫

জসিম উদ্দিন, বানিয়াচং প্রতিনিধি ::  শাকসবজি এবং ধানের  জমির পাশাপাশি একটি জমিতে ফুটছে মনোমুগ্ধকর সারি সারি সূর্যমুখী ফুল। আর সেই ফুলের মধু আহরণে বাগানের চারদিকে মৌমাছির আনাগোনাও লক্ষ্য করা গেছে। বসন্তের মৃদু হাওয়ায় দুলছে সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে ঘাড় ঘুরিয়ে থাকা এই সূর্যমুখী ফুল গাছ। যেন পুরো মাঠ সূর্যের দিকে তাকিয়ে হাসছে প্রাণ খুলে।  

সূর্যমুখী ফুল শুধু দেখতেই সন্দর নয়, গুণেও অনন্য। সূর্যমুখী ফুল থেকে আহরণ করা হয় দানা। যা অনেকটা সরিষার দানার মতই। এই দানা থেকে তৈরী হয় তেল। সূর্যমুখী তেলের পুষ্টি উপাদান ও গুণাগুণ অনেক বেশি। সূর্যমুখী তেলে নেই কোনো কোলেস্টেরল। এই তেল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।  

আর এই সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছেন হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আমীর আলীর পুত্র মোহাম্মদ আলী (৩০)। বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন অন্তর্গত মজলিশপুর গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী (৩০) প্রথমবারের মত আবাদ করেছেন সূর্যমুখী ফুল। তিনি বানিয়াচংয়ের প্রথম সূর্যমুখী ফুলচাষী।

মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়ির পাশে অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি ৩৩ শতাংশ জায়গায় সূর্যমুখী চাষ করেছেন তিনি। গত পৌষ মাসের প্রথম দিকে বানিয়াচং উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া বীজ রোপন করেন তিনি। ইতিমধ্যে গাছে ফুল ধরেছে। একটি পরিণত সূর্যমুখী ফুলের গাছ ৯০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। সূর্যমুখী ফুল চাষের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই বীজ সংগ্রহ করা যায়। এই ফুলচাষ থেকে বিপুল আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।

মোহাম্মদ আলী আরও জানান, প্যাসিফিক হাইসান-৩৩ নামক সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছেন তিনি। বানিয়াচং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। তাছাড়া  কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষন করছেন। 

জানা যায়, উন্নতজাতের একমণ সূর্যমুখী দানা থেকে ১৮-২০ কেজি তেল পাওয়া যায়। প্রতিকেজি তেলের দাম বাজারে ২৫০-৩০০ টাকা। 

বানিয়াচং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু হাশেম সিলেটভিউকে জানান, ‘বানিয়াচংয়ে মোহাম্মদ আলী ছাড়াও আলাউদ্দিন নামে আরও এক কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ দিয়েছি আমরা। আমাদের সহায়তায় বানিয়াচংয়ে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল মুক্ত সূর্যমুখী তেল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। সূর্যমুখীর তেল ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের খাবার এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এর কোনো অংশই ফেলার মতো নয়া।’ 

উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় সূর্যমুখী ফুলচাষে লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। মূলত অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি বানিয়াচংয়ের কৃষকদেরকে অধিক মুনাফা লাভের আওতায় নিয়ে আসা কৃষি অফিসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বলে জানান আবু হাশেম।  

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩ মার্চ ২০২০/জেইউ/মিআচৌ    

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন