আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

নবীগঞ্জে করোনাভাইরাস আতঙ্কে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ, বিপাকে রোগীরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০৫ ১৯:০৮:০২

নবীগঞ্জ সংবাদদাতা :: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় চিকিৎসকদের মধ্যে করোনাভাইরাসের আতঙ্কের সৃষ্টি হওয়ায় প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন ডাক্তাররা।

এদিকে সরকারি হাসপাতালে ডাক্তরা রোগীদের পর্যাপ্ত সময় না দেওয়া ও করোনাভাইরাস ভীতিতে হাসাপাতালে না গিয়ে প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভীড় করছে রোগীরা। চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন রোগীরা।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার নবীগঞ্জ পৌর শহরে, আউশকান্দি ও ইনাতঞ্জ বাজারে এমবিবিএসসহ বিশেষজ্ঞ প্রায় শতাধিক ডাক্তার ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেম্বারে রোগী দেখেন। পার্শ্ববর্তী উপজেলা বানিয়াচং ও জগন্নাথপুর উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী ডাক্তার দেখাতে এইসব প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা শহরের হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সহ প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ থাকায় চিকিৎসক সংকটে ঠিক মতো চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে না চালু থাকা দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
এছাড়া উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আউশকান্দি বাজারের কেয়ার ও অরবিট ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও উপজেলার ইনাতগঞ্জের ইনাতগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও গ্রীন লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ উপজেলার অন্যান্য বাজারে বিভিন্ন প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তারা রোগী দেখছে না।

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশের মতো ও নবীগঞ্জে উপজেলাও লকডাউনে রয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে গত ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে প্রত্যেক ডাক্তারের চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এমন অবস্থায় টাকার বিনিময়েও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।
রোগীদের অনেকেই বলছেন করোনা ভাইরাস আতঙ্কে  নবীগঞ্জ হাসপাতালে না গিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে এসেছেন। কিন্তু এখানে ডাক্তার নাই। গত শুক্র ও শনিবার ঢাকা ও সিলেট থেকে বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিতে না আসায় তাদের অর্ধ শতাধিক চেম্বার বন্ধ রয়েছে। এতে চেম্বারে আগত বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। এমনটি চলতে থাকলে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন উপজেলার অনেক রোগী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কয়েক জন চিকিৎসক জানান, চিকিৎসকরাও মানুষ, তাদেরও পরিবার-পরিজন রয়েছেন। তাই চিকিৎসকরাও এক রকম আতঙ্কিত। যার কারণে অনেক চিকিৎসক ব্যক্তিগত চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

নবীগঞ্জ হাসপাতাল রোডের হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানাজার মোফাজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানে কোন ডাক্তারের চেম্বার না করায় এবং নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) সংগ্রহ করতে না পাড়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রেখেছেন।

এব্যপারে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ জানান, শনিবার ভর্তি রয়েছে ২০ জন রোগী ও আউটডোরে সেবা নিয়েছেন শতাধিক রোগী। প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে রোগী দেখা বন্ধ থাকায় সরকারি হাসপাতালের ওপর চাপ পড়েছে।

হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান সরকারি হাসপাতালগুলোতে যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  হঠাৎ করে প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে রোগী দেখা বন্ধ করা অমানবিক।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ বিএমের নেতৃবৃন্দের সাথে বসেছিলাম। বসে তাদেরকে নিরাপদ দূরত্বে থেকে প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে রোগী দেখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

স্বাস্থ বিভাগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় সর্বশেষ ২১০ জন প্রবাসী হোম কোয়ারান্টাইনে থাকলেও ইতিমধ্যে ১৯৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বর্তমানে উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫ জন।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৫ এপ্রিল ২০২০/এসবিডি/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন