আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

নবীগঞ্জে হোম কোয়ারেন্টিন না মানায় করোনা ঝুঁকিতে গ্রামের মানুষ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০৯ ১৬:০১:০৩

নবীগঞ্জ সংবাদদাতা :: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রবাসীসহ জনসাধারণকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা থাকলেও তার কিছুই মানছে না উপজেলার গ্রামের বাজারগুলো। গ্রামের বাজারগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে যানবাহন।

এমনকি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রাস্তাঘাটে কাউকে অতিপ্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার কথা ঘোষণা দেওয়া হলেও গ্রাম্য বাজারগুলোর দোকানপাটে  মানুষের উপস্থিতি বাড়চ্ছে আশংকাজনক হারে।

অথচ সরকার মরণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে।

ফলে বন্ধ হয়ে যায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। এর পর থেকে নবীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কঠোর নজরদারি শুরু হয়।

সরকারি এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। যাতে কোনো প্রকার যানবাহন ও মানুষজন বাইরে বের হতে না পারে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর মনোভাবের ভয়ে বা আতঙ্কে উপজেলার বিভিন্ন  রাস্তাঘাটে ও বাজারে মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করা গেলে গ্রামের বাজারগুলো ভিন্ন চিত্র। প্রথম কয়ে কদিন বাজারগুলোতে চায়ের দোকানসহ কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না খোলেও কয়েক দিন পর থেকেই ধীরে ধীরে বিভিন্ন গ্রাম্য বাজার গুলোতে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম্য বাজার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদেশ থেকে আসা অনেক হোম কোয়ারেন্টাইন না মানা অনেক প্রবাসী ও শহর থেকে গ্রামে আসা লোকের কারনে লোক সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে উপজেলার প্রতিটি গ্রাম্য বাজারে।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ৩০ মার্চ পর্যন্ত উপজেলায় মোট ৫৪৮ জন প্রবাসী দেশে এসেছে এর মধ্যে ৪২০জন হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ করেছেন। ১২৮ জনের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।

এদিকে তালিকাভূক্ত ১২৮ জনের মধ্যে অনেকে বিদেশ চলে গেলে অনেক প্রবাসী এতো দিন সিলেট সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ালেও তারা এখন চলে আসছেন নবীগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে। এছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়া প্রবাসীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন গ্রামে ও বাজারে এসে স্বজনদের সাথে দেখা করছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন, আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতেও যাচ্ছেন ও মসজিদে যাচ্ছেন। এদিকে ঢাকা ও চট্রগ্রাম বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় কাজ করা লোকজনও গ্রামে আসাতে গ্রামের বাজারগুলোতে লোক সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গ্রামের হোটেলগুলোয় চলছে চায়ের আড্ডা ও জমজমাট ব্যবসা।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম্য বাজার যেমন ইমামবাড়ি, সদরঘাট, ইনাতগঞ্জ, জগন্নাথপুর বাজার, ফার্মের বাজার,আদিত্য বাজার, জনতার বাজার, ফুলতলি বাজার, নতুনবাজার, সাকোয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় প্রায় সবকটি গ্রামের হাট-বাজারে লোক সমাগম আগের চেয়ে অনেক বেশি।

অধিকাংশ বাজারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায়ই বাজারগুলো সকাল-বিকাল জমজমাট থাকে। চা দোকান ও হোটেলগুলোতে থাকে উপচেপড়া ভিড়। প্রশাসনের লোকজন আসছে এমন খবর এলে মুহূর্তেই দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যায়। তারা চলে গেলে সেই আগের মতোই লোক সমাগম। মেইন রাস্তার পাশের অনেক দোকান এক শাটার খুলে দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষের অবাধে চলাফেরা করোনা ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি থাকতে পারে বলে মনে করছে সচেতন মহল।

এ বিষয়ে বাহুবল সার্কেল পারভেজ আলম  চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই আমরা জেলা পুলিশ আরও কঠোর অবস্থানে রয়েছি। বিনা কারণে বাইরে ঘোরাফেরা করা লোকজনকে ঘরে থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। প্রয়োজনে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল  বলেন, শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে সরকারি বরাদ্দের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সচেতন ও জরিমানা করছি।আমাদের নিজেদের ভালোর জন্যই প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে করোনা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৯ এপ্রিল ২০২০/এসবিডি/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন