আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

নিজের বেতনের টাকা দিয়ে মানবসেবা করছেন প্রভাষক মনোয়ার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-২৯ ১৫:৪২:৩৪

মাধবপুর প্রতিনিধি :: নিজের বেতনের টাকা দিয়ে সমাজে আলোর মশাল জ্বালাচ্ছেন প্রভাষক মনোয়ার হোসেন মনু।

করোনা ভাইরাসে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা, বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য ক্রয় করেছেন জমি।

মেধাবি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, টাকার অভাবে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা, বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পড়ানো, সনাতন ধর্মের মেয়েদের বিবাহ কাজে সহযোগীতা, মসজিদ উন্নয়ন, কবরস্থান উন্নয়ন, ঈদগাহ মাঠ উন্নয়ন নিরবে এ কাজগুলো করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক।

তিনি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মৌলানা আছাদ আলী ডিগ্রী কলেজের পদার্থবিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক।

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী গ্রামের মো. শাহজাহান মিয়া ও মোছা. কুলসুমা বেগমের সন্তান মনোয়ার হোসেন মনু। ত্রিবেনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনী পাশ করেন। তারপর রামচন্দ্রপুর  কিসমত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন ঝিনাইদহ সরকারী কেসি কলেজে। তারপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট থেকে অনার্স (সম্মান) নিয়ে পড়াশুনা করেন।

লেখাপড়া শেষ করে তিনি একটি কলেজে গেষ্ট টিচার্স (অতিথি শিক্ষক) হিসাবে কর্ম জীবন শুরু করেন। তারপর ২০১২ সালে তিনি মৌলানা আছাদ আলী ডিগ্রী কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন।  ২০১৩ সালে আইসিটি ক্লাস শুরু করেন।

কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। তিনি কমপক্ষে ৩০/৪০ জন শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে পড়ান।

কিছু শিক্ষার্থী তাকে নাম মাত্র বেতন দেন। টিউশনির টাকা ও বেতনের টাকা দিয়ে তিনি শুরু করেন সমাজ উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম।

প্রভাষক মনোয়ার হোসেন মনু জানান, মানুষ ও সমাজের জন্য কিছু করা তার নেশা। কোন মানুষ ও শিক্ষার্থীদের উপকার করতে পারলে তার ভাল লাগে। নিজ জন্মাস্থানের প্রতিও টান রয়েছে তার। তাই নিজ এলাকার উন্নয়ন করার জন্য তিনি সবর্দা চিন্তা করেন। নিজ গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রায় ৫ শতক জমি কিনেছেন তিনি। সেখানে তিনি প্রাইমারি স্কুল গড়ে তুলবেন। স্বপ্ন দেখছেন একটি বৃদ্ধশ্রম করার। বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য ২ শতক জমি তিনি ক্রয় করেছেন।

প্রভাষক মনোয়ার হোসেন জানান, কেউ যদি বলে স্যার আমার আর্থিক অবস্থা ভাল নয় তার কাছ থেকে তিনি বেতন নেন না। যাদের সামর্থ রয়েছে তারা যে বেতন দেন সে গুলো দিয়েই তিনি এই প্রতিষ্ঠান গুলো পরিচালনা করেন। আরো অনেক কিছু করার ইচ্ছে আছে অর্থাভাবে এ গুলো করে উঠতে পারছি না। অতিরিক্ত কাজ ও পরিশ্রম করে তিনি তার স্বপ্ন গুলো পুরন করতে চান।

তিনি জানান, অনেকে ভাবতে পারেন এ গুলো বলার কি দরকার কিন্তু আমার মনে হয়েছে আমি যদি আমার ইচ্ছেশক্তির দ্বারা এ গুলো করতে পারি তবে অন্যরা পারবে না কেন? তারাও পারবে এবং করবে। মানুষ, সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করার উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করানোর জন্য এ গুলো বলা।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৯ মে ২০২০/এসসি/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন