আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

পানি সংকটে কমলগঞ্জের কেওলার হাওরে বোরো চাষ বিঘ্নিত, কৃষকদের শঙ্কা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-০৭ ১৯:৩৭:৫৩

জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কেওলার হাওরের পাশাপাশি এলাকায় পানি ও সেচ সঙ্কটে বোরো আবাদ ব্যহত হচ্ছে। এ এলাকার কৃষকরা বোরো চাষাবাদের উপর নির্ভরশীল। লাঘাটা নদীর রূপশপুর এলাকায় ক্রসবাঁধ দিয়ে সেচের সুবিধা নিয়ে প্রতিবৎসর বোরো চাষাবাদ করতেন।

তবে এবছর নদীতে ক্রসবাঁধ না দেয়ায় নিম্নাঞ্চলের কেরলার হাওরের জমিগুলো মরুভূমিতে রুপ নেওয়ায় প্রায় ৪শ’ একর বোরো আবাদকৃত এলাকা রয়েছে অনাবাদী। ফলে বোরো চাষাবাদ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় স্থানীয় কৃষকরা।
জানা যায়, উপজেলার পতনঊষার, মুন্সীবাজার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে কেওলার হাওরসহ বিলে বোরো চাষাবাদকৃত বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে। সুদীর্ঘকাল ধরে এসব এলাকায় বোরো চাষাবাদ হয়ে আসছে। উপজেলা কৃষি অফিস এবছর চার হাজার একশ’ পণের হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে বিগত বছর সমূহ থেকে উপজেলায় এবছর লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। প্রাকৃতিক পানি ও সেচের অভাবজনিত কারনে অনেক কৃষকের বিজতলা পূর্ণতা পেলেও এখন পর্যন্ত জমি তৈরি করতে পারছেন না বলে অভিযোগ তোলেছেন।

সরেজমিন উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কেওলার হাওর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বোরো আবাদকৃত এলাকার লাঘাটা নদীর সন্নিকটে কিছু জমিতে সেচ দিয়ে কিছু সংখ্যক কৃষক জমি তৈরি করছেন। তবে হাওরের বিস্তীর্ণ বোরো জমি রয়েছে মরুভূমি। ধূপাটিলা গ্রামের কৃষক কাপ্তান মিয়া, শেরওয়ান আলী, আকতার মিয়া, রূপষপুর গ্রামের মোজাহিদ মিয়া বলেন, অন্যান্য বছরের এ সময়ে অনেক জমি আবাদ হয়ে যেতো। তবে লাঘাটা নদীতে ক্রস বাঁধ না দেয়ার কারনে এখানকার জমি তৈরি করাও সম্ভব হয়নি। নদীতে বাঁধ দেয়ার কারনে নিচু জমিতে পানি প্রবেশ করতো। সেসব জমিতে সেচেরও প্রয়োজন হতো না। এছাড়া অন্যান্য জমিতে সেচ নিয়ে হাওরের অধিকাংশ জমিতে বোরো চাষাবাদ করা যেতো। কৃষকরা আরও বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে পানির সুবিধা পাওয়া না গেলে বিজতলাও বিনষ্ট হয়ে পড়বে।

লাঘাটাছড়া পাবসস লিমিটেড এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং কমলগঞ্জ হাওর ও নদী রক্ষা আঞ্চলিক কমিটির সদস্য সচিব তোয়াবুর রহমান বলেন, নদী ও হাওরে এখনও আশানুরূপ পানি পাওয়া যায়নি। তাছাড়া গত দু’বছরে আগাম বন্যার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বোরো চাষাবাদে কেউ কেউ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

পতনঊষার ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক সাগর ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হাজী আব্দুল আলী বলেন, জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে নদীতে ক্রসবাঁধ হয়। তবে চলতি মৌসুমে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই বাঁধ হবে। কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, কৃষকরা চাষাবাদের পানি পাওয়ার কথা। তবে পানি ও সেচের অভাব থাকলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে এবং শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৭ জানুয়ারি ২০১৮/জেএ/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন