আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কুলাউড়ার বরমচাল ডাকঘর বেহাল, দূর্ঘটনার আশংকা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১০ ০০:০২:৪২

শাকির আহমদ, কুলাউড়া :: বর্তমান যুগে ই-মেইল, মোবাইল, ফেসবুক-টুইটারে ‌দ্রুত তথ্য আদান প্রদান ও বিকাশসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে সহজে আর্থিক লেনদেন করা যাচ্ছে। দেশের ডাক বিভাগের অধিনে চিঠি, টেলিগ্রাম, মানি অর্ডার করার পুরোনো পদ্ধতির প্রয়োজন এখন অনেকটা বিলুপ্তপ্রায়। খুব কম সময়ে অধিক সহজতর উপায়ে আধুনিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কারনে এখন বিলুপ্ত প্রায় দেশের ডাক বিভাগের কার্যক্রম। যদিও বর্তমান আওয়ামী সরকারের পক্ষ থেকে এই অচলাবস্থা থেকে ডাক বিভাগকে আধুনিককরণ করার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

কিন্তু সরকারের এই উন্নয়নের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ডাকঘরে। এখানকার বিল্ডিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। যে কোন সময় দেয়াল অথবা ঘরের সিলিং ধ্বসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে সেখানকার কর্মরত চাকুরীজিবিরা। এছাড়াও প্রতিদিন সরকারী-বেসরকারী চিটি আদান প্রদান ও সরকারী ই-সেবা সেন্টারে আসা গ্রাহকরাও শঙ্কায় থাকেন কখন কি ঘটে যায় এই দুশ্চিন্তায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাকঘরের পাকা বিল্ডিং, কম্পিউটার ও কিছু আসবাব পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও বিল্ডিংয়ের ঝরা ঝীর্ণতার কারনে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ডাক ঘরের ভিতরে প্রবেশের সাথে সাথে চোখে পড়ে ছাদ থেকে দেয়াল ধ্বসার খন্ড খন্ড চিত্র। বর্ষাকালের সময় বৃষ্টির পানি পড়ার চিহৃ সবুজ শেওলায় আবরিত। ছাদ ধ্বসার খন্ডাংশ থেকে রক্ষা করতে ই-সেন্টার কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার সহ ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র প্লাস্টিক কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলো সরিয়ে কাজ সাড়ছেন ই-সেন্টারের পরিচালক মো. মিজানুর হোসেন খান।

দূর দূরান্ত থেকে আসা ডাকগুলো বস্তা থেকে খোলে বিলি করার জন্য সাজাচ্ছেন ইডিডিএ হারাধণ চক্রবর্তী। উপস্থিত গ্রাহকদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় ব্যস্ত এস.পি.এম মো. আমিন আলী। গ্রাহকরা কেউ দাড়িয়ে নিজেদের চিটি কিংবা মানি অর্ডার বুঝে নিচ্ছেন। তবে একটি দৃশ্য অবাক করার মতো। যদিও সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত তবে সবাই ঘরের ছাদের দিকে বারবার লক্ষ্য করছেন। কখন যে সিলিং ধ্বসে মাথার উপরে দেয়াল খন্ডাংশ পড়ে ঠিক নাই।

এসময় জানতে চাইলে উপস্থিত গ্রাহক বরমচাল মাধবপুর গ্রামের আব্দুল মালিক জানান, আমি আগে কিছু সঞ্চয় করেছিলাম। এখন আবার করতে চাইছি। তবে, অফিসের যে অবস্থা তাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। যখন-তখন ভেঙ্গে পড়তে পারে ডাকঘর। তখন আমার সঞ্চয়পত্র নিয়ে অন্যত্র দৌড়াতে হবে।

ডাকঘরে ই-সেন্টার সেবা নিতে আসা গ্রাহক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী রাজন আহমদ, তানজিম আক্তার তানজি বলেন, সরকার কর্তৃক ডাকঘরের বিভিন্ন আধুনিকায়তনের ফলে অনেক ব্যাংকিং সেবা আমরা এখান থেকে নিতে পারছি। যদিও দেশে বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারণে দ্রুত যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম থাকলেও এখনো ডাকঘরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই, ডাকঘরটির সংস্কার প্রয়োজন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বরমচাল ডাকঘরের এস.পি.এম মো. আমিন আলী বলেন, ডাকঘরটির যাবতীয় সমস্যা একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও এর কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

সিলেট বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরমচাল ডাকঘরকে গুরুত্ব দিয়েছি। খুব শিঘ্রয়ই এই ডাকঘরের বিল্ডিংয়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

উল্লেখ্য, দেশের ৮ হাজার ডাকঘরের কার্যক্রমকে নতুনভাবে সাজাতে বানিজ্যিক ব্যংকিংসহ গ্রামীণ ই-সেন্টার, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, দরিদ্র নারীদের মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, পরিত্যাক্ত মহিলা ভাতাসহ আরও কিছু ভাতা ডাকঘর থেকে তুলার ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১০ জানুয়ারি ২০১৯/এসএ/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন