Sylhet View 24 PRINT

রাজনগরে আ.লীগের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর পরাজয়ের নেপথ্যে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২২ ০০:১১:১২

আব্দুর রহমান সোহেল, রাজনগর :: রাজনগরের দুই বর্ষিয়ান ও রাজনৈতিক পুরোধাকে হারিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে চমক দেখিয়েছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহ জাহান খান।

মুক্তিযোদ্ধা ও ১৯৭৪ সাল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আছকির খান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক দুই বারের উপজেলা চেয়ারম্যান মিছবাহুদ্দোজাকে পরাজয়ে রাজনৈকি সচেতন মহলরা বিস্মিত।

আনারস প্রতীক নিয়ে মিছবাহুদ্দোজা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারলেও নৌকা প্রতীক নিয়ে মো. আছকির খান দাড়াতেই পারেন নি। যদিও তিনি ভোটেরে দিন দুপুরে শাহজাহান খানের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্রে বল প্রয়োগ, পুলিশ প্রশাসেনর পক্ষপাতিত্ব, কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছিলেন। এদিকে নির্বাচনে বর্ষিয়ান এ দুই নেতার পরাজয় নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ।

এদিকে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহজাহান খান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি সকল চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে স্বাক্ষাতও করেছেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসায় সাধারণ মানুষের প্রসংশা কুড়িয়েছেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান খানের বিজয় নিয়ে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি এবং বিএনপি জামাতের যে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়েছেন, তারাই এ পরিবর্তনের মূল কারিগর। এছাড়াও মানুষের মাঝে নতুন কাউকে পাওয়ার আকঙ্খাও কাজ করেছে। তাছাড়া হেভিওয়েট দুই প্রার্থী বার্ধক্যে পৌছে যাওয়াও একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন তারা।

সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহিদ ফজল বলেন, আসলে নির্বাচন সুষ্টু হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও মানুষ স্বতস্পুর্ত ভোট দিয়েছে। মানুষ নতুনত্ব চেয়েছে। এটাই আমরা বুছতেছি। আমি ভোটের দিন দেখেছি মানুষ এটাই বলেছে এবার নতুন মানুষ চাই।

আওয়ামী লীগ নেতা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকার সময়ই উপজেলার ৭ ইউপি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দূর্নীতির অভিযোগ এনে অনাস্থা প্রস্তাব করেছিলেন। সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন। বিষয়টি উপজেলার সাধারণ মানুষও জানে। আবার বিপক্ষে অবস্থা নেয়া কয়েকজন চেয়ারম্যান নির্বাচনে উনার পক্ষে মাঠে কাজ করেন। মানুষ এটা ভালো চোখে দেখেনি। এছাড়া সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকা, একলা চলো নীতি গ্রহণ করায়ও মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

টেংরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা স্বেচ্চাসেবকলীগের সভাপতি মো. টিপু খান বলেন, মূলত আওয়ামী লীগের ভোটটাই ভাগ হয়েছে ৩ প্রার্থীর মাঝে। বিএনপি জামাতের ভোটটা গেছে শাহজাহান খানের পক্ষে। এজন্য তিনি এগিয়ে গেছেন। যেসব এলাকায় বিএনপি জামাতের ভোট রয়েছে ওই কেন্দ্রগুলোর ভোট তিনিই পেয়েছেন। এছাড়া কয়েকটি কেন্দ্রেতো জাল ভোট হয়েছে। এসব অভিযোগেই দুপুরের পর নৌকার প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। উনি ১০ হাজার ভোট পেয়েছেন মাত্র ৩-৪ ঘন্টায়।

মনসুরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলন বখত বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের পরাজয় মূলত বিএনপি জামাতের ভোটারের কাছে। তারা চেয়েছিল নৌকার প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পরাজিত করতে। বিশেষ করে নির্বাচনে টাকার খেলা হয়েছে। মানুষদের টাকার বিনিময়ে প্রভাবিত করা হয়েছে। এছাড়া ভোটের দিন প্রশাসন নিরপেক্ষ ছিল না। জাল ভোট দেয়া হয়েছে। এমন প্রমান আমাদের কাছে আছে।

এ বিষয়ে রাজনগর উপজেলার নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহজাহান খান বলেন, আমি ছাত্রলীগ করেছি। আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষের ভোট পেয়েছি। টাকা দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। ভোট পেতে হলে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হয়, তাদের কথা শুনতে হয়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ মার্চ ২০১৯/এআরএস/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.