আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

মৌলভীবাজারে কে এই ‘পীর’!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২২ ১১:৫৫:২১

ওমর ফারুক নাঈম, মৌলভীবাজার :: মৌলভীবাজার শহরের এখন আলোচিত নাম ‘পীর’। কে সে এখন এই প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে। অনেকেই চিনেন-জানেন আবার অনেকেই জানেন না। সম্প্রতি মৌলভীবাজার শহরে রুবেল নিহত হওয়ার পরই মূলত আলোচনায় আসে এই ‘আজাদ পীর’। সে রুবেলের বড় ভাই। মূলত আজাদের সাথে বাবুল নামের একজনে দ্বন্ধের কারণেই বলির পাটা হয় রুবেল।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আজাদ হোসেন পীর মৌলভীবাজার শহরতলীর হিলালপুর এলাকায় বসবাস করেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপরাধ কর্মকা-ের সাথে জড়িতের অভিযোগ। রয়েছে মারামারি, মাদক ও ইয়াবা ব্যবসা, ডাকাতি, নারী নির্যাতনের অভিযোগ। এমনকি মৌলভীবাজার মডেল থানায় আজাদ হোসের পীর এর বিরুদ্ধে ৬টি পৃথক পৃথক মামলা রয়েছে। এছাড়াও অনেক অভিযোগ রয়েছে।

মৌলভীবাজার মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, এবছরের ২৮ জানুয়ারী খুনের উদ্দ্যেশ্যে মারামারির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়। এফ.আই.আর নং: ৩৬/৩৬, জি.আর নং-৩৬/১৯। ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড ১৮৬০ এ সে এজাহারভূক্ত।

আবার ২৩ জানুয়ারী মাদক ও ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের হয়। এফ.আই.আর নং: ৩৪/৩৪, জি.আর নং-৩৪/১৯। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ১০ (ক) ধারায় সে এজাহারভূক্ত।

২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর মৌলভীবাজার মডেল থানায় গুরুত্বর জখম করে ডাকাতির অপরাধে আরেকটি মামলা হয়। এফ.আই.আর নং: ২৪/৩২৪, জি.আর নং-৩২৪/১৭। ধারা ৩৯৪ পেনাল কোড- ১৮৬০ অনুযায়ী এই মামলায় সে অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত এবং তদন্তেও অভিযুক্ত।

ওই বছরের ২৫ এপ্রিল খুন করার উদ্দ্যেম্যে মারামারি অপরাধে একটি মামলা দায়ের হয়। এফ.আই.আর নং: ২০, জি.আর নং-১২৩/১৭। ধারা ৩৪১/৩২৩/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোড- ১৮৬০এ এই মামলায় সে এজাহারে সন্দিগ্ধ।

পরের বছর ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। এফ.আই.আর নং: ৩১, জি.আর নং-২৮১/১৬। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৭/৩০ ধারায় সে এজাহারভুক্ত।

১৭ সালের ৬ মে মৌলভীবাজার মডেল থানায় আইনশৃঙ্খলা বিঘেœর আরোও একটি মামলা রয়েছে। এফ.আই.আর নং: ৮/১৩৭, জি.আর নং-১৩৭/১৭। আইন শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ আইনের ৪ ধারায় সে মামলার এজাহারে অভিযুক্ত।

শুধু এই ৬টি মামলা নয় থানায় আরোও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের দাবী, সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকে। মানুষকে নির্যাতন হয়রানি করার পর আর কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করারা সাহস পায় পায় না। সম্প্রতি রুবেল নিহত হওয়ার পরও এক টমটম চালকে আটক করে ১০হাজার টাকা মুক্তিপন আদায় করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই গাড়ি চালক। শহরের কুসুমবাগ এলাকার ব্যবসায়ী ও সিএনজি চালকার তার কারণে সব-সময় আতঙ্কে থাকেন। না প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও চালক বিষয়টি সিলেটভিউকে নিশ্চিত করেছেন।

আজাদ হোসেন পীর সাথে বাবুল নামের একজনে দ্বন্ধের কারণে তার ভাই রুবেল গত ১১ মে মারা যায়। সরেজমিনে আজাদ হোসেন পীরের হিলালপুর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় তার মা ও বড় ভাইয়ের সাথে। তার পরিবারের দাবী মামলার ওয়ারেন্টের কারণে তিনি গাঁ ডাকা দিয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আজাদকে সাংবাদিকদের সাথে গোপনেও সাক্ষাৎ করতে বলা হলেও সে রাজি হননি। এবং মুটোফোনে পরিবারের পক্ষ থেকে কেন বাবুলের সাথে তার দ্ধন্ধ তৈরী হয়েছিল জানতে চাইলে, সেই প্রশ্নেরও কোন স্পষ্ট উত্তর পীর দিতে পারেন নি।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন সিলেটভিউকে বলেন, “বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে থানায় এই ৬টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও আরোও অভিযোগ রয়েছে। অনেক লোকজন ভয়ের কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে পারেন না”।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ মে ২০১৯/ওফানা/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন