আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কমলগঞ্জে আউশের জমি ফাঁকা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১২ ০০:৩১:৪৯

জয়নাল আবেদিন, কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে আউশের মাঠ ফাঁকা। ক্ষেতে আগ্রহ নেই কৃষকদের। পরবর্তী আমন চাষে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি আউশ মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আবাদকৃত বিস্তির্ণ জমির একটা বড় অংশ পরিত্যক্ত রয়েছে। বোরো উৎপাদনের পর ধানের ন্যায্য মূল্য না থাকায় কৃষকরা ক্ষোভে ধানের চারা রোপন থেকে বিরত রয়েছেন। সার, বীজ, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি, ধান কাটা, মাড়াই থেকে শুরু করে বোরো উৎপাদনে বিঘা প্রতি সাড়ে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে ধানের মণ ছয়শ’ থেকে সাড়ে ছয়শ’ টাকা খরচ পড়ে। বিক্রির সময়ে এবং বর্তমান বাজার মূল্য সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। এভাবে ভতুর্কী দিয়ে কৃষকদের ক্ষতি গুণতে হচ্ছে বলে কৃষকরা ক্ষেতে আগ্রহ হারাচ্ছে।

উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক মোবাশ্বির আলী বলেন, ‘গত বছর ২০ বিঘা জমিতে আউশ চাষাবাদ করলেও এবার কোন জমিই চাষাবাদ করছি না। প্রচুর বোরো ধান উৎপাদন করেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ক্ষেত করে লোকসান গুণে লাভ নেই।’

সোনাপুর গ্রামের কৃষক ইউছুপ মিয়া, আলতা মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্যান্য বছরে আউশ ক্ষেত করলেও ধানের দাম না পাওয়ায় এবছর সবগুলো আউশের জমি ফাঁকা রয়েছে।’ একইভাবে গোবিন্দপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, বিলাল মিয়া, চুনু মিয়া, জালালিয়া গ্রামের ফারুক মিয়া, সালাহউদ্দীন, মতিউর রহমান, আতিকুর রহমান, পতনউষারের ধূপাটিলা গ্রামের আকতার মিয়াসহ অর্ধশতাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করে ধান উৎপাদনের পর দাম পাওয়া যায় না। মধ্যস্বত্বভোগীরা ঠিকই লাভবান হচ্ছেন। যে কারণে এবছর তারা চাষাবাদ করতে আগ্রহ নেই।

তারা আরও বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে যাদের খাবার দরকার তারা শুধুমাত্র খাবারের জন্য কিছু কিছু জমি চাষাবাদ করছেন। আগামী আমন মৌসুমেও কৃষকদের মধ্যে এর প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আউশ মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর চাষাবাদ হয়েছে। তবে অন্যান্য বছর এই সময়ে আউশের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রান্ত হলেও এবছর সেটি হচ্ছে না।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান বলেন, এ পর্যন্ত ১২ হাজার ২৫০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে আউশ চাষাবাদ হয়েছে। তবে কৃষকরা জমি ফেলে রাখছেন বা চাষাবাদে অনাগ্রহ এধরণের কোন সংবাদ জানা যায়নি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১২ জুন ২০১৯/জেএ/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন