আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বড়লেখায় স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে স্বামীর জবানবন্দি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১৬ ০০:৫৫:৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পান্না বেগমকে (৩০) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন স্বামী মতছিন আলী (৩৩)। শনিবার (১৫ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজারের বন আদালতের (আমলি) জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাইফুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখার শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনিবার বিকেলে তিনি বলেন, মতছিন স্ত্রীকে হত্যার দায় করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের কলারতলিপার গ্রামের মৃত মাহমুদ আলী ওরফে মাখই মিয়ার ছেলে মতছিন আলীর সাথে বিয়ানীবাজার উপজেলার পাড়িয়াবহর গ্রামের ইসমাইল আলীর মেয়ে পান্না বেগমের বিয়ে হয়। পরিবারের তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। প্রায় ৪ মাস আগে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দুই বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি পাড়িয়াবহরে চলে যান পান্না বেগম। ওই সময় বড় মেয়ে সুহানাকে (৭) শ্বশুর বাড়ির লোকজন রেখে দেয়।

এদিকে সম্প্রতি সুহানা নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ইটাউরী গ্রামে তার ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেয়ে সুহানার অসুস্থতার খবর পেয়ে পেয়ে পান্না বেগম তাকে দেখতে ইটাউরীতে আসেন। সোমবার সকাল ৭টার দিকে সুহানাকে স্থানীয় এক হুজুরের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় দৌলতপুর এলাকার একটি মসজিদের পাশের রাস্তায় পান্নার স্বামী মতছিন তাকে বাধা দেন।

একপর্যায়ে মতছিন পান্নাকে তার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করেন। এরপর মতছিন পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত পান্না বেগমকে উদ্ধার করে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে পান্নার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ১১ জুুন নিহত পান্নার ছোটভাই রাজিব আহমদ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, পান্না বেগমকে হত্যার পর স্বামী মতছিন আলীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযানে নামে পুলিশ। বিভিন্নস্থানে অভিযান চালালেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে মতছিনের মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে গত জুন শুক্রবার তাঁর অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। এদিন দুপুর দুইটার দিকে বড়লেখা থানার সামনে থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। মতছিনকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধারে নামে পুলিশ। তবে স্ত্রীকে হত্যার পর মতছিন ছোরাটি বিয়ানীবাজারের কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেওয়ায় তা উদ্ধার করা যায়নি। গ্রেফতারের পর মতছিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন বলে পুলিশ জানায়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৬ জুন ২০১৯/এজেএল/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন