আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

শ্রীমঙ্গলে বিধবার দেড় কোটি টাকার ভূমি দখলের পাঁয়তারা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-২৩ ১৭:২৬:৫৩

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি চিহ্নিত ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক বিধবা নারীর ৪৪ বছরের দখলীয় ভূমি জবরদখলের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। শহরের নিউ মার্কেট নিবাসী মোছা. হেওয়ালী বেগমমের স্বত্ব মালিকানাধীন শ্রীমঙ্গল উপজেলার মোহাজেরাবাদ গ্রামের বালিশিরা পাহাড় ব্লক ১ এর ও ৩৬ দাগের প্রায় দেড় কোটি টাকা দামের ৩ একর ৫০ শতক ভূমি জবরদখল নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেটটি। গত এক মাস পূর্বে ভূমির মালিক হেওয়ালী বেগমের ছেলে মো. আবিদুর রহমান চৌধুরী সোহেলের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা দাবি এবং গুম করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হলেও এ ঘটনায় পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

আজ রবিবার বেলা ২টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হেওয়ালী বেগমের ছেলে আবিদুর রহমান চৌধুরী সোহেল)এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন আশীদ্রোন ইউনিয়নের বালিশিরা পাহাড়, ব্লক নং ১ এ আমার মা হেওয়ালী বেগম দলিল নং ২৪১৬/১৯৬৯ইং, দলিল নং ২৯৫৫/১৯৭৫ইং, দলিল নং ৩৩৪৭/১৯৭৫ইং এবং দলিল নং ৩৩৯০/১৯৭৫ইং সনে পৃথক কবলা দলিলের মাধ্যমে ৩ একর ৫০ শতক ভূমি ক্রয় করেন। জমির এসএ রেকর্ডমূলে নামজারী করে ভূমি কর পরিশোধ করে আসছি। বেশ কিছু দিন ধরে রাধানগর নিবাসী আব্দুস শুক্কুর গং কিছু জাল দলিল সৃষ্টি করে মায়ের বর্ণিত সম্পত্তি জবরদখল নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ মে আব্দুস শুক্কুরের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার নিকট ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমার  ওই ভূমি জবরদখল করা এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় আব্দুস শুক্কুরসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এখনও কোন পদক্ষেপ নেয়নি।’

সোহেল বলেন, ‘আইনের আশ্রয় নেয়ার পাশাপাশি প্রতিকার চেয়ে শহরের গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদেরও বিষয়টি অবগত করি। কিন্তু দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি, শহরের কিছু প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি সিন্ডিকেট করে আমার প্রতিপক্ষের পক্ষাবলম্বন করে নিজেরাই আর্থিকভাবে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেন। এই সিন্ডিকেটের কারণে বালিশিরা পাহাড় অশান্ত হয়ে উঠেছে। কতিপয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা চক্রটি প্রভাব বিস্তার করে একের পর এক সরকারী, খাস, ব্যক্তি মালিকানার জমি জবরদখল করে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে। চক্রের সদস্যরা জীবিকা নির্বাহে জন্য কোন কাজ না করলেও ফন্দি ফিকির আর জালিয়াতি করে অন্যের জমি জবরদখল করাই তাদের একমাত্র কাজ।’

সংবাদ সম্মেলনে আবিদুর রহমান চৌধুরী সোহেল বলেন, ‘আমার মরহুম বাবা মুহিবুর রহমান চৌধুরী ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শ্রীমঙ্গল শহর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালিন শ্রীমঙ্গল থানা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। মরহুম মোহাম্মদ ইলিয়াস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান ছিলেন বাবার রাজনৈতিক বন্ধু। আমাদের পরিবার শুধুু শ্রীমঙ্গল নয় মৌলভীবাজার মহকুমা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের অন্যতম আর্থিক অনুদান দাতা ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে নেতৃত্বে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি আমার মরহুম বাবার অনেক অবদান রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমার বাবার অবর্তমানে আজ আমরা ভুমিদস্যূদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। এই ভূমি খেকো চক্রটি যে কোন সময় সন্ত্রাসী কায়দায় মায়ের ৪৪ বছরের ভোগ দখলীয় জমি জবরদখলের করতে পারে। এসব ঘটনা আমার বয়োবৃদ্ধ মাসহ পরিবার পরিজনকে অনেক কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ‘ভূমি খেকো চক্রের হাত থেকে জমি রক্ষা ও পরিবারের নিরাপত্তা বিধানে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ জুন ২০১৯/আইএ/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন